ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা শনিবার, ০২ আগস্ট, ২০২৫
Amar Sangbad

গ্রাহকপর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির পাঁয়তারা

মহিউদ্দিন রাব্বানি

জানুয়ারি ৯, ২০২৩, ০২:২৫ পিএম

গ্রাহকপর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির পাঁয়তারা
  • ১৪ বছরে বিদ্যুতের দাম বেড়েছে ৯ বার
  • পাইকারিতে ১১৮ ও খুচরায় ৯০ শতাংশ বাড়ে
  • দাম বৃদ্ধির প্রক্রিয়া বন্ধের দাবি সিপিবির

দাম বৃদ্ধি মূল্যস্ফীতিকে উসকে দেবে : ক্যাব

ব্যর্থতা নেই এটি দাবি করব না : বিইআরসি

পাইকারিপর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর পর এবার বাড়ছে খুচরাপর্যায়েও। বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) কারিগরি কমিটি গ্রাহকপর্যায়ে বিদ্যুতের দাম ১৫ দশমিক ৪৩ শতাংশ বাড়ানোর সুপারিশ করেছে। গতকাল রোববার বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির গণশুনানিতে এ সুপারিশ করা হয়। 

শুনানিতে বিইআরসির কারিগরি কমিটি প্রতি কিলোওয়াট বিদ্যুতের খুচরা মূল্য এক টাকা ২১ পয়সা বৃদ্ধির সুপারিশ করেছে। সেই হিসাবে খুচরা বিদ্যুতের মূল্য গড়ে ৭ দশমিক ২ পয়সা থেকে বেড়ে ৮ দশমিক ২৩ পয়সা করার সুপারিশ করা হয়েছে। এতে বিদ্যুতের দাম গড়ে বৃদ্ধি পেতে পারে ১৫ দশমিক ৪৩ শতাংশ।

বিশেষজ্ঞরা বলেন, জ্বালানির দাম বাড়লে বাড়বে সব ধরনের পণ্যের দাম। কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশে (ক্যাব) সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. এম শামসুল আলম বিইআরসির শুনানিতে অংশ নিয়েছেন। তিনি বলেন, গ্রাহকপর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়লে ২০২৩ সালের মূল্যস্ফীতিকে তা উসকে দেবে। শাসসুল আলম বলেন, বিদ্যুৎ খাতের দুর্নীতি, সিস্টেম লস, অনিয়ম বন্ধে কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না সরকার। 

অন্যদিকে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির ফলে জনগণের কষ্ট বাড়ছে। এর আগে গত বছরের ২১ নভেম্বর বিদ্যুতের পাইকারি দাম ১৯ দশমিক ৯২ শতাংশ বৃদ্ধি করে বিইআরসি। এরপর বিদ্যুতের খুচরা দাম বৃদ্ধির আবেদন করে বিতরণ কোম্পানিগুলো। সবগুলো প্রতিষ্ঠান বলছে, পাইকারি দাম বৃদ্ধির পর খুচরা দাম না বাড়ালে তারা আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বে। যদিও তখন সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, পাইকারিপর্যায়ে দাম বড়লেও গ্রাহকপর্যায়ে বাড়বে না। কিন্তু এতে দ্বিমত পোষণ করেন বিশেষজ্ঞরা। 

তারা বলেন, এটি গ্রাহকপর্যায়ে দাম বাড়বে না, এ কথা সরাসরি প্রতারণার সামিল। পাইকারি দাম বাড়লে খুচরা বাড়বে এটিই স্বাভাবিক। নতুবা ক্ষতিগ্রস্ত হবে ব্যবসায়ীরা। জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক এম শামসুল আলম তখন বলেন, বিদ্যুতের দামবৃদ্ধি দুরভিসন্ধিমূল।

তিনি বলেন, সরকার অযৌক্তিক ব্যয় না কমিয়ে এভাবে দাম বাড়াচ্ছে। গত ১৮ মে অনুষ্ঠিত বিদ্যুতের দামবৃদ্ধি সম্পর্কিত গণশুনানির প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, বিদ্যুতের যে মূল্যবৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছিল, সেখানে ৭ শতাংশ উৎপাদন বৃদ্ধি করে দাম বাড়ানোর কথা বলা হয়েছিল। ফার্নেস অয়েল ও এলএনজির মাধ্যমে এই ৭ শতাংশ বিদ্যুৎ উৎপাদন করে সরবরাহ করা হবে, এমন প্রস্তাব ছিল। 

পরবর্তীতে দেখা গেল, সেই অজুহাতে এলএনজির দাম বাড়ল, কিন্তু এলএনজি স্পট মার্কেট থেকে আনা হলো না। ফার্নেস অয়েলও না এনে লোডশেডিংয়ে চলে যাওয়া হলো। তার মানে বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধির যে কথা বলা হলো, সেটি একটি প্রতারণা বা প্রহসনে পরিণত হলো।

গতকাল রোববার বিদ্যুতের দামবৃদ্ধির গণশুনানিতে বিদ্যুৎ বিতরণ প্রতিষ্ঠান বাবিউবো, বাপবিউবো, ডিপিডিসি, ডেসকো, ওজোপাডিকো ও নেসকোর আবেদনের প্রেক্ষিতে এই সুপারিশ করা হয়েছে। সুপারিশে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বাবিউবো) প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের বর্তমান দর সাত টাকা ৭৫ পয়সার বদলে আট টাকা ৭৪ পয়সা, বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (বাপবিবো) ছয় টাকা ২০ পয়সার বদলে সাত টাকা ৬৩ পয়সা, ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (ডিপিডিসি) আট টাকা ৪৮ পয়সার বদলে ৯ টাকা ৪৩ পয়সা, ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেডের (ডেসকো) আট টাকা ৫৫ পয়সার বদলে ৯ টাকা ৪১ পয়সা, ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (ওজোপাডিকো) সাত টাকা ৫২ পয়সার বদলে আট টাকা ৫৪ পয়সা ও নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেডের (নেসকো) সাত টাকা ২৪ পয়সার বদলে আট টাকা ১৬ পয়সা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। 

এর আগে সর্বশেষ ২০২০ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি গ্রাহকপর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি পায়। গত ২১ নভেম্বর বিদ্যুতের পাইকারি দাম ১৯ দশমিক ৯২ শতাংশ বৃদ্ধি করে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন-বিইআরসি। এরপর বিদ্যুতের খুচরা দাম বৃদ্ধির আবেদন করে পাঁচ প্রতিষ্ঠান।

শুনানিতে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি) তাদের প্রস্তাবে জানায়, দাম না বাড়লে তাদের ক্ষতি হবে এক হাজার ১২৭ কোটি টাকা। একইভাবে পিডিবি ২৩৪ কোটি, ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ডিপিডিসি) এক হাজার ৫৫১ কোটি, ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি (ডেসকো) এক হাজার ৪০২ কোটি টাকা, নর্দান ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি (নেসকো) বলছে, তাদের ৫৩৫ কোটি টাকা লোকসান হবে। ওয়েস্টজোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ওজোপাডিকো) কোনো আর্থিক অঙ্ক দাঁড় না করালেও বলছে দাম না বাড়লে তাদেরও ক্ষতি হবে।

আমাদের ব্যর্থতা নেই এটি দাবি করবেন না জানিয়েছেন বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) চেয়ারম্যান আবদুল জলিল। তিনি বলেন, ‘আমরা একটি খারাপ সময় অতিক্রম করছি। করোনা ও ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সারা বিশ্ব সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়।’ 

গণশুনানিতে অংশ নিয়ে বিইআরসি চেয়ারম্যান আবদুল জলিল বলেন, ‘আমাদেরকে কিছুটা রক্ষণাত্মক ভূমিকা পালন করতে হচ্ছে। এ জন্য কমিশনকে দূরদর্শিতার সঙ্গে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। কমিশন এ বিষয়ে সব সময় আন্তরিকতা সঙ্গে সচেষ্ট থেকেছে। তবে আমাদের ব্যর্থতা নেই এটি দাবি করব না।’ তিনি বলেন, ‘বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির আবেদনের যৌক্তিকতা ও ন্যায্যতা প্রমাণের দায়িত্ব আবেদনকারীর। 

বিইআরসি জনস্বার্থ ও ভোক্তা স্বার্থ বিবেচনা করে আদেশ দেবে।’ আবদুল জলিল বলেন, ‘কমিশন অত্যন্ত দৃঢ়তার সঙ্গে বিরোধ নিষ্পত্তি করে থাকে। কারো কোনো অভিযোগ থাকলে ৫৪ ধারায় আবেদন করতে পারেন। গণশুনানিতে কোনো ব্যক্তিগত অভিযোগ না উত্থাপনের অনুরোধ করছি।’

সর্বশেষ ২০২০ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি করে সরকার। সুপারিশে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বাবিউবো) প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের বর্তমান দর সাত টাকা ৭৫ পয়সার বদলে আট টাকা ৭৪ পয়সা, বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (বাপবিবো) ছয় টাকা ২০ পয়সার বদলে সাত টাকা ৬৩ পয়সা, ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (ডিপিডিসি) আট টাকা ৪৮ পয়সার বদলে ৯ টাকা ৪৩ পয়সা, ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেডের (ডেসকো) আট টাকা ৫৫ পয়সার বদলে ৯ টাকা ৪১ পয়সা, ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (ওজোপাডিকো) সাত টাকা ৫২ পয়সার বদলে আট টাকা ৫৪ পয়সা এবং নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেডের (নেসকো) সাত টাকা ২৪ পয়সার বদলে আট টাকা ১৬ পয়সা করার প্রস্তাব করা হয়েছে।

এদিকে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রক্রিয়া বন্ধের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি-সিপিবি। সিপিবির সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম ও সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানিয়েছেন। বিবৃতিতে বলা হয়, ভুলনীতি, দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা, অপচয় প্রভৃতি কারণে বিদ্যুতের উৎপাদন খরচ দিন দিন বেড়েই চলেছে। কিন্তু সরকার এসব সত্য গোপন করে উৎপাদন বৃদ্ধির অজুহাতে আবারো বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, তা মোটেই গ্রহণযোগ্য নয়। 

বিবৃতিতে বলা হয়, বিশেষজ্ঞরা এটি প্রমাণ করেছেন যে— দুর্নীতি, অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনা রোধ করে বিদ্যুৎ খাতে ৩০ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় করা সম্ভব। অথচ এটি না করে জনগণের কাঁধে এই বোঝা চাপানো হচ্ছে। বর্তমান চড়া মূল্যস্ফীতির সময়ে সাধারণ মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। এর মধ্যে বিদ্যুতের দাম বাড়লে উৎপাদন খরচসহ সর্বত্র এর প্রভাব পড়বে, যা বিভিন্নভাবে সাধারণ মানুষের ওপর চাপানো হবে। 

তাই বিদ্যুতের দাম বাড়ানো কোনোভাবেই যৌক্তিক হবে না। প্রসঙ্গত, দেশে গত ১৪ বছরে বিদ্যুতের দাম বেড়েছে ৯ বার। এ সময়ে পাইকারি পর্যায়ে ১১৮ শতাংশ ও গ্রাহক পর্যায়ে ৯০ শতাংশ বাড়ে বিদ্যুতের দাম। সর্বশেষ গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয় ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে, যা ওই বছরের মার্চ থেকে কার্যকর হয়। তখন খুচরা পর্যায়ে দাম বাড়ানো হয়েছিল ৫.৩ শতাংশ।

Link copied!