মে ২৬, ২০২৩, ০৮:২১ এএম
- ১০ মাসে বিতরণ ২৬ হাজার ৯২৯ কোটি টাকা
- লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়ার আশা সংশ্লিষ্টদের
চলতি অর্থবছরে কৃষিঋণ বিতরণে ইতিবাচক ধারা অব্যাহত আছে। প্রথম ১০ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) বিতরণকৃত ঋণের পরিমাণ আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৩ শতাংশ বেশি। এ প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে পারলে বছর শেষে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। আগের বছরও লক্ষ্যের চেয়ে বেশি ঋণ বিতরণ করা হয়েছিল এ খাতে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য ব্যাংক খাতে ৩০ হাজার ৮১১ কোটি টাকা ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। গত ১০ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) ব্যাংকগুলো ২৬ হাজার ৯২৯ কোটি ৫৯ লাখ টাকা কৃষিঋণ বিতরণ করেছে, যা লক্ষ্যমাত্রার ৮৭ দশমিক ৪০ শতাংশ। মাসভিত্তিক লক্ষ্য ধরলে বিতরণকৃত ঋণের হার প্রায় ১০৫ শতাংশ। এ ধারায় ঋণ বিতরণ হলে বছর শেষে ৩২ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে। আগের বছরের একই সময়ে বিতরণ হয়েছিল ২৩ হাজার ৭৫৬ কোটি ৭২ লাখ টাকা। সে হিসেবে গত বছরের তুলনায় বেড়েছে তিন হাজার ১৭২ কোটি ৮৭ লাখ টাকা বা ১৩ শতাংশ।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক ও সহকারী মুখপাত্র সারোয়ার হোসেন আমার সংবাদকে বলেন, ‘কেন্দ্রীয় ব্যাংক সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কৃষিঋণ বিতরণের বিষয়টি তদারকি করছে। ফলে এ খাতে কাঙ্ক্ষিত প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে।’
প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত ১০ মাসে রাষ্ট্রমালিকানার ব্যাংকগুলো ১০ হাজার ৯৩৪ কোটি ৪৪ লাখ টাকা বিতরণ করেছে, যা লক্ষ্যমাত্রার ৯৩ দশমিক ৭৯ শতাংশ। আর বিদেশি ও বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলো বিতরণ করেছে ১৫ হাজার ৯৯৫ কোটি ১৫ লাখ টাকা, যা লক্ষ্যমাত্রার ৮৩ দশমিক ৫১ শতাংশ। দেশে প্রতিবছর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক বেশি কৃষিঋণ বিতরণ করে কিছু ব্যাংক। আবার কিছু ব্যাংক আছে যারা প্রতিবছরই ব্যর্থ হয় লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে।
সম্প্রতি কৃষি খাতে ব্যাংকগুলো লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যর্থ হলে তা অন্য ব্যাংকের মাধ্যমে বিতরণের জন্য এগ্রিকালচারাল ডেভেলপমেন্ট কমন ফান্ড (বিবিএডিসিএফ) গঠন করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সেই নীতিমালা অনুযায়ী কৃষি ও পল্লীঋণ লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী বিতরণ করতে না পারলে অবশিষ্ট অর্থ এই ফান্ডে জমা রাখতে হবে। কৃষি খাতে অধিক ঋণ দিতে সক্ষম ব্যাংকগুলোকে এই তহবিল থেকে অর্থ দেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। প্রতিবেদনে দেখা যায়, ১০ মাসে শস্য খাতে বিতরণ হয়েছে ১২ হাজার ৭৬৭ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। সেচ সরঞ্জাম কিনতে দেয়া হয়েছে ২২৪ কোটি ২৫ লাখ, কৃষি সরঞ্জাম কিনতে ১৮১ কোটি ৬৪ লাখ, গবাদিপশু এবং হাঁস-মুরগির খামারে পাঁচ হাজার ৭৫৯ কোটি ৫১ লাখ, মৎস্য খাতে তিন হাজার ৩১৬ কোটি ৯১ লাখ, শস্য গুদামজাত এবং বিপণনে ১৩৫ কোটি ছয় লাখ, দারিদ্র্য দূরীকরণ খাতে এক হাজার ৫৬০ কোটি ৮৮ লাখ এবং অন্যান্য খাতে দুই হাজার ৮৯৩ কোটি ৭৯ লাখ টাকা বিতরণ করা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত অর্থবছরে ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা ২৮ হাজার ৩৯১ কোটি টাকা ধরা হলেও ব্যাংকগুলো তারচেয়েও বেশি বিতরণ করেছে, যা লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ১০২ শতাংশ। প্রতিবেদনে আরও দেখা যায়, আলোচ্য সময়ে কৃষিঋণ আদায়ও বেড়েছে। অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) কৃষকদের কাছ থেকে ঋণ আদায় হয়েছে ২৬ হাজার ৮৮৮ কোটি টাকা। যদিও ২০২১-২২ অর্থবছরের একই সময়ে এ খাত থেকে ঋণ আদায় হয়েছে ২২ হাজার ২৭ কোটি টাকা।