Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪,

বন্ধ হচ্ছে পায়রা তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র

বিদ্যুৎ খাতে ঘোর অমানিশা

মহিউদ্দিন রাব্বানি

মে ৩১, ২০২৩, ০৪:৩১ পিএম


বিদ্যুৎ খাতে ঘোর অমানিশা
  • ২ জুন থেকে পুরোপুরি উৎপাদন বন্ধ করবে কেন্দ্রটি
  • এপ্রিল পর্যন্ত বকেয়া বিল প্রায় ৩৯০ মিলিয়ন ডলার
  • বিল পরিশোধ না করায় কয়লা সরবরাহ বন্ধ

উৎপাদন ও সরবরাহ ব্যবস্থাপনায় ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ

—অধ্যাপক বদরূল ইমাম

জ্বালানি বিশেষজ্ঞ

কয়লা আমদানি করা গেলে জুনের শেষ সপ্তাহে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হবে

—প্রকৌশলী শাহ আব্দুল হাসিব তত্ত্বাবধায়ক, পায়রা তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র

মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা বলেছেন, বঙ্গবন্ধু ছাত্র জীবন থেকেই মানুষের কল্যাণে কাজ করেছেন। দুর্ভিক্ষ-দাঙ্গায় জীবনের ঝুঁকি  নিয়ে নির্যাতিত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। বঙ্গবন্ধু শান্তির জন্য বিশ্বে বিভিন্ন প্রান্তে ছুটে গেছেন এবং নিপীড়িত, নির্যাতিত, শোষিত, শান্তি ও স্বাধীনতাকামী মানুষের পক্ষে আজীবন কথা বলে গেছেন। তিনি বঙ্গবন্ধু থেকে হয়ে উঠেন বিশ্ববন্ধু। বঙ্গবন্ধুর  আদর্শ ও চেতনা দৃঢ়ভাবে ধারণ করে অসাম্প্রদায়িক, বৈষম্যহীন ও শান্তির বিশ্ব প্রতিষ্ঠায় সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। জাতির পিতার জুলিও কুরি শান্তি পদক প্রাপ্তি ছিল বাঙালি পারবে দুই জুন পর্যন্ত। মূলত কয়লার বিল পরিশোধ করতে না পারার কারণেই এমন হয়েছে সংশ্লিষ্টরা। অবশ্য কেন্দ্রটির একজন কর্মকর্তা বলছেন, কয়লা কেনার জন্য তারা ডলার সংগ্রহ করেছে। এদিকে কর্তৃপক্ষ জানান, নতুন করে কয়লা আমদানির জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক এবং সরকার যৌথভাবে ১০০ মিলিয়ন ডলার ব্যবস্থা করে দিয়েছে। দু-এক দিনের মধ্যেই এলসি খোলা হবে। জুনের শেষে কয়লা এলে আবার পুরোপুরিভাবে চালু করা হবে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি।

তিন বছর আগে উৎপাদনে আসার পর এই প্রথম পুরোপুরি বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ রয়েছে দেশের সবচেয়ে বড় বিদ্যুৎকেন্দ্র পায়রা তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রে। তবে এর আগে ডলার সংকটে কয়লা না কিনতে পারায় রামপাল তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রও চার মাসে তিন দফা বন্ধ হয়েছিল। দেশে উৎপাদিত বিদ্যুতের মধ্যে পায়রার বিদ্যুৎ উৎপাদন খরচ সবচেয়ে কম। আর লোডশেডিং না করতে চাইলে বিকল্প জ্বালানির ব্যবস্থা করতে হবে বলেন বিশেষজ্ঞরা। প্রতিদিন দেশে গড় বিদ্যুতের চাহিদা প্রায় ১৪ হাজার মেগাওয়াট। এর বিপরীতে প্রতিদিন ১২ থেকে সাড়ে ১২ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। তবে কর্তৃপক্ষ জানান, নতুন করে কয়লা আমদানির জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক এবং সরকার যৌথভাবে ১০০ মিলিয়ন ডলার ব্যবস্থা করে দিয়েছে। দু-এক দিনের মধ্যেই এলসি খোলা হবে। জুনের শেষে কয়লা এলে আবার পুরোপুরিভাবে চালু করা হবে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি। পায়রা তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী শাহ আব্দুল হাসিব জানান, কয়লা আমদানি করতে পারলেও কমপক্ষে ২৫ দিন পর উৎপাদনে যেতে পারবে কেন্দ্রটি। এটি একটি সাময়িক সংকট। বৈশ্বিক কারণে এই সংকটে পড়তে হয়েছে। বৈশ্বিক সংকটের মধ্যেও বংলাদেশ ব্যাংক ও সরকার ১০০ মিলিয়ন ডলার ব্যবস্থা করে দিচ্ছে। এতে নতুন করে কয়লা সরবরাহ করতে পারবেন তারা। দু-এক দিনের মধ্যেই এলসি খোলা হবে। তবে এলসি খোলার পরও কয়লা আসতে অন্তত ২৫ দিন সময় লাগবে। এ সময় বন্ধ থাকবে বিদ্যুৎ উৎপাদন। এরপর কয়লা এলে জুনের শেষ সপ্তাহে আবারও বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হবে।

তিন বছর ধরে বিদ্যুৎ দিয়ে আসছে দেশের বৃহত্তম পায়রা তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রটি। এবার কিছু দিনের জন্য পুরোপুরি উৎপাদন বন্ধ হওয়ায় বড় ধরনের লোডশেডিংয়ের আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ও ভূতত্ত্ববিদ অধ্যাপক ড. বদরূল ইমাম বলেন, ‘পায়রাতে বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ হওয়ার খবর খুবই হতাশা ও উদ্বেগ সৃষ্টি কারার মতো। নতুন প্রকল্পগুলোও ধাক্কা খেয়ে পড়ে যাচ্ছে। উৎপাদন ও সরবরাহের যে ব্যবস্থাপনা রয়েছে এর মধ্যে বড় রকমের ফাঁক রয়েছে। কেবল ফাঁক নয়, এটি একটি ব্যর্থ কার্যক্রম হিসেবে আমি মনে করি।’

চিন ও বাংলাদেশের যৌথ বিনিয়োগে ২০২০ সালে পায়রা তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রে বাণিজ্যিকভাবে কার্যক্রম শুরু হয়। কেন্দ্রটি চালানোর জন্য প্রয়োজনীয় কয়লা কিনতে ঋণ দেয় চীনা অংশীদার চায়না ন্যাশনাল মেশিনারি ইমপোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট কোম্পানি (সিএমসি)। এপ্রিল মাস পর্যন্ত বকেয়া বিল দাঁড়ায় প্রায় ৩৯০ মিলিয়ন ডলার। এ বকেয়া বিল পরিশোধ না করায় সিএমসি কয়লা সরবরাহ বন্ধ করে। বিল পরিশোধ করে নতুন এলসি চালু করে কয়লা আমাদানি না করা পর্যন্ত কেন্দ্রটির উৎপাাদন আপাতত বন্ধ থাকবে।

Link copied!