Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪,

নির্বাচনি বছরে চাপের বাজেট

আবদুর রহিম

জুন ১, ২০২৩, ১২:০৫ এএম


নির্বাচনি বছরে চাপের বাজেট

২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট। আয় না থাকলেও দিতে হবে ন্যূনতম আয়কর, দেরি করলে জরিমানা হবে দ্বিগুণ। জমি ও ফ্ল্যাট বিক্রিতে ট্যাক্স দ্বিগুণ হচ্ছে। আইএমএফের ঋণের শর্ত পূরণের রয়েছে চাপ। এবারও ঋণ নেয়ার ইঙ্গিত দেয়া হয়েছে। এ নিয়ে ক্ষমতাসীন দল বলছে  বাজেটে চ্যালেঞ্জ। বৈশ্বিক সংকট মোকাবিলা করা, অর্থনৈতিক মন্দাভাব কাটানো ও নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে জনবান্ধব বাজেট প্রণয়ন করা হচ্ছে। 

অন্যদিকে বিরোধীরা বলছে— এই সরকার কখনোই গরিবের জন্য ভাবেনি অতীতে। এই বাজেটেও গরিবের জন্য কিছু থাকবে না। গরিবরা নিত্যপণ্য কিনতে গিয়ে প্রতিদিন কর দিচ্ছে। এই বাজেটে সাধারণ মানুষের কোনো আগ্রহ নেই। অতীতের মতো সচেতন মানুষরাও আগের মতো খোঁজখবর রাখছে না। পুরোনো কাঠামো ও পুরোনো চিন্তার বাজেট বলেই ধারণা সবার। আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম আমার সংবাদকে বলেন, ‘এবারের বাজেটে তিনটি চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এর মধ্যে বৈশ্বিক সংকট মোকাবিলা করা, অর্থনৈতিক মন্দাভাব কাটানো ও নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখা। দেশের জনগণের কল্যাণে জনবান্ধব বাজেট প্রণয়ন করা হচ্ছে। আমাদের সামনে যে চ্যালেঞ্জগুলো আছে সবগুলো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতেই এবারের বাজেট। এই বাজেটের মধ্য দিয়ে দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রার ধরে রাখা হবে, মানুষের কল্যাণে কাজ করা হবে, সংকট মোকাবিলা করা হবে।’ কাজেই প্রতি বছরের থেকে দেশের মানুষ এবারের বাজেট থেকে বেশি সুফল পাবে বলে দাবি করেন তিনি। 

বিএনপির স্পেশাল অ্যাফেয়ার্স সেক্রেটারি ড. এস এম আসাদুজ্জামান রিপন আমার সংবাদকে বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগের কেউ কী নির্বাচিত হয়ে সংসদে এসেছে, কেউ আসেনি। তারা বিনাভোটের সংসদ। রাতের আধারে ব্যালটে সিল মারার সংসদ। তারা তো জনগণ নিয়ে ভাবে না। সরকার কিভাবে বাজেট দেবে। এই সরকার তো আগেই পুরো দেশের অর্থনীতিকে জয় বাংলা করে ফেলেছে। এখন দেখছি যাদের আয় নেই তাদেরও করে দিতে হবে। আপনি দেখেন যারা গরিব মানুষ রয়েছে, প্রতিদিন লবণ কিনছে,  ডাল কিনছে— সব জিনিসের মধ্যেই কর দিচ্ছে। এখন সরকার রাজনৈতিক বছরে বড় একটি অর্থনৈতিক সংকটে রয়েছে। চাপের মধ্যে রয়েছে। এখন দেশের সাধারণ মানুষকে আরো চাপে ফেলছে, জনগণকে এখন অতিরিক্ত ট্যাক্স দিতে হবে বলেও শুনছি। দেশের রিজার্ভ এখন দরিদ্র কোটায়। এগুলোর ঘাটতি কিভাবে পূরণ হবে। মোট কথা হচ্ছে, সরকার এই বাজেটের মাধ্যমে আরো ঋণ নেবে। দেশটাকে আরো বিপদের সম্মুখীন করবে।’

গণঅধিকার পরিষদের আহ্বায়ক ড. রেজা কিবরিয়া আমার সংবাদকে বলেন, ‘শুনছি আয় না থাকলেও কর দিতে হবে। না দিলে জরিমানা। ট্যাক্স দ্বিগুণ হচ্ছে। রিজার্ভ ঝুঁকিতে। বিভিন্ন খাতে কোটি কোটি টাকা ভর্তুকি। এর মধ্যে যে বাজেটের ইঙ্গিত দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী তাতে মনে হচ্ছে একটি শক্তিশালী গোষ্ঠীকে তুষ্ট করার বাজেট হতে পারে। এ বাজেটে সরকারের লুটপাট আরও বাড়বে। এতে লুটপাটকারীরা আরও সম্পদশালী হবে এবং নিম্ন-মধ্যবিত্ত আরও গরিব হবে। এটি জনগণের বাজেট না, এটি কয়েকটি গ্রুপের, কয়েকটি গোষ্ঠীর, তাদের সুবিধার জন্য এই বাজেট হচ্ছে।’ নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না আমার সংবাদকে বলেন, ‘এই সরকার ক্ষমতায় থাকাকালে কখনো দেখেছেন গরিব কিংবা কোনো মানুষের জন্য ভেবেছে। এটি মানুষের বাজটের হবে বলে আমি মনে করি না। এই সরকারের আমলে সব সময় গরিবের জন্য কষ্টদায়ক হয় এই বাজেটও তাই হবে। ধনীদের সুবিধার জন্য বাজেট হবে। বাজেটে নতুন কোনো চমক থাকবে বলে মনে হচ্ছে না। পুরোনো কাঠামো ও পুরোনো চিন্তার মধ্যেই।’

Link copied!