Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪,

বিদেশি বিমানের দেনা পরিশোধে ব্যবস্থা নিল বাংলাদেশ ব্যাংক

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক

জুন ৭, ২০২৩, ১১:৩৯ এএম


বিদেশি বিমানের দেনা পরিশোধে ব্যবস্থা নিল বাংলাদেশ ব্যাংক

সাত ব্যাংকের কাছে আটকা ১৭ কোটি ৭৭ লাখ ডলার

আইএটিএর দাবি বকেয়ার পরিমাণ ২১ কোটি ৪১ লাখ ডলার

বাংলাদেশের বিভিন্ন ব্যাংক থেকে বিদেশি বিমান সংস্থাগুলোর পাওনা পরিশোধে ত্বরিত ব্যবস্থা নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আশা করা হচ্ছে, আজকের মধ্যেই এটির সমাধান হবে। তবে পাওনার পরিমাণ নিয়ে ভিন্ন তথ্য দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক আবুল বশর এসব তথ্য তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, ‘সংবাদপত্রের খবরে বিদেশি বিমান সংস্থাগুলোর যে পাওনার কথা বলা হয়েছে; প্রকৃত পরিমাণ তার চেয়ে কম হবে। দেশের সাতটি ব্যাংকের কাছে বিভিন্ন এয়ারলাইন্সের মোট ১৭ কোটি ৭৭ লাখ ডলার বকেয়া রয়েছে। এসব ব্যাংকের ডলার পরিশোধের সামর্থ্য রয়েছে। তাদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে দ্রুত বকেয়া পরিশোধ করে দিতে।’ তিনি বলেন, গত জানুয়ারি থেকে আজ (গতকাল) পর্যন্ত এয়ারলাইন্সগুলোর ৪০ কোটি ২১ লাখ ডলার পরিশোধ করা হয়েছে। বর্তমানে ১৭ কোটি ৭৭ লাখ ডলার বকেয়া রয়েছে।

এয়ারলাইন্সগুলোর সংগঠন দ্য ইন্টারন্যাশনাল এয়ার ট্রান্সপোর্ট অ্যাসোসিয়েশনের (আইএটিএ) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির বরাতে সংবাদ মাধ্যমে খবর বেরিয়েছে যে, বাংলাদেশের কাছে বিশ্বের বিভিন্ন সংস্থার এয়ারলাইন্সের ২১ কোটি ৪১ লাখ মার্কিন ডলার পাওনা রয়েছে। এই খবরের পর ব্যাংকগুলোর কাছে তথ্য চায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। পরে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়ে বিমান সংস্থাগুলোর প্রকৃত পাওনার তথ্য তুলে ধরা হয়। সংবাদ সম্মেলনে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত মুখপাত্র বলেন, ‘গ্রাহক হিসেবে এয়ারলাইন্সগুলোর পাওনা অর্থ বিভিন্ন ব্যাংক পরিশোধ করে থাকে। আমরা দেখেছি এই সাত ব্যাংকের ডলার পরিশোধের সক্ষমতা রয়েছে। দেখা যাবে কয়েকটি ব্যাংক আগামীকালই (আজ) তা পরিশোধ করে দেবে। যেহেতু এটি বাংলাদেশের মর্যাদার সঙ্গে সম্পৃক্ত। আমরা বলেছি খুব দ্রুত তাদের অর্থ ছেড়ে দিতে।’

আইএটিএ দাবি করেছে, বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোর কাছে ২১ কোটি ৪১ লাখ ডলার পাওনা রয়েছে বিভিন্ন এয়ারলাইন্সের। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে আবুল বশর বলেন, ‘আইএটিএ যে তথ্য দিয়েছে, আর বাংলাদেশ ব্যাংক খোঁজ নিয়ে যে তথ্য জানতে পেরেছে তার সঙ্গে তথ্যের অমিল রয়েছে। হয়ত এমনও দেখা যেতে পারে, এয়ারলাইন্সগুলো এখনো অর্থ দাবির বিপরীতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দেয়নি। এজন্যই হয়ত আইএটিএ ও ব্যাংকের তথ্যের মধ্যে একটু ফারাক রয়েছে।’ বাংলাদেশ ব্যাংক বিদেশি প্রতিষ্ঠানের পাওনা পরিশোধে আন্তরিক। কিন্তু এসব লেনদেন বাংলাদেশ ব্যাংক করে না। বিভিন্ন ব্যাংকের মাধ্যমে হয়ে থাকে। বিদেশি এয়ারলাইন্সগুলোর অপারেশন কার্যক্রম চালানো সহজ করতে বাংলাদেশ থেকে জ্বালানি ক্রয় করতে চাইলে স্থানীয় মুদ্রা টাকায় বিল পরিশোধ করতে পারবে, সে বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনাও দেয়া রয়েছে অনেক আগ থেকেই। টাকায় লেনদেনের বিষয়ে সরকার একটি পদ্ধতি খুঁজে বের করছে বলেও জানান মুখপাত্র। গত রোববার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আইএটিএ মহাপরিচালক (ডিজি) উইলি ওয়ালশ জানান, যেসব দেশ থেকে বাণিজ্যিক কার্যক্রমের অর্থ সংগ্রহ করা যাচ্ছে না, সেসব দেশে কার্যক্রম চালিয়ে রাখতে পারবে না তারা। এয়ারলাইন্সগুলোর সঙ্গে সংযোগ চলমান রাখতে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে। এজন্য আন্তর্জাতিক চুক্তি ও চুক্তির বাধ্যবাধকতা মেনে চলার অনুরোধ করেন তিনি। সংস্থাগুলোর পাওনার তালিকায় বাংলাদেশের নাম থাকায় বিষয়টি সমাধানে ত্বরিত ব্যবস্থা নিল বাংলাদেশ ব্যাংক।

Link copied!