Amar Sangbad
ঢাকা সোমবার, ২০ মে, ২০২৪,

ঢাকার বাইরে বাড়ছে ডেঙ্গু

সাহিদুল ইসলাম ভূঁইয়া

সাহিদুল ইসলাম ভূঁইয়া

আগস্ট ২৬, ২০২৩, ১১:২১ পিএম


ঢাকার বাইরে বাড়ছে ডেঙ্গু
  • বিভাগীয় পর্যায়ে (ঢাকা মহানগর ব্যতীত) আক্রান্ত ও মৃত্যু বেশি চট্টগ্রামে
  • সিলেট বিভাগে আক্রান্ত কম এবং মৃত্যু শূন্য

স্থানীয় পর্যায়ে ডেঙ্গু প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে 
—অধ্যাপক ডা. বেনজির আহমেদ, সাবেক পরিচালক
রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখা, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর

বৃষ্টির পানি জমিয়ে ব্যবহারের ক্ষেত্রে সতর্ক হতে হবে। এডিস মশা জন্মাতে পারে এমন স্থানে জমে থাকা পানি 
ফেলে দিতে হবে 
—অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশার, কীটতত্ত্ববিদ

চলতি বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ও মৃত্যু সংখ্যা বিগত বছরের যেকোনো সময়কে ছাড়িয়ে গেছে। বছরের শুরু দিকে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত বেশির ভাগ রোগীই ছিল ঢাকায়। দেশেজুড়ে ডেঙ্গু প্রকোপ ছড়িয়ে পড়ার সাথে সাথে ঢাকার বাইরেও রোগী বাড়তে থাকে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো সর্বশেষ তথ্য বলছে, বর্তমানে দেশে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা এক লাখ ১২ হাজার ১৮৪ জন। তার মধ্যে ঢাকায় ৫৩ হাজার ৪৮৯ জন এবং ঢাকার বাইরে ৫৮ হাজার ৬৯৫ জন। প্রতিদিন ঢাকার বাইরে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগী বেড়েই চলছে। ডেঙ্গু আক্রান্তের ৬২ দশমিক ৩ শতাংশ পুরুষ এবং ৩৭ দশমিক ৭ শতাংশ নারী। আক্রান্ত বেশি পুরুষ হলেও মৃত্যু বেশি নারী। পুরুষ মারা গেছেন ২২৭ জন এবং নারী মারা গেছেন ৩১০ জন।  দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৫৩৭ জন। মোট মৃত্যুর মধ্যে ঢাকায় ৩৯৬ জন ঢাকার বাইরে ১৪১ জন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো তথ্য বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় বিভাগীয় পর্যায়ে ঢাকা(মহানগর ব্যতীত) চট্টগ্রাম বিভাগে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগী ও মৃত্যু সংখ্যা বেশি। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুশূন্য বিভাগ সিলেট। চলতি বছর চট্টগ্রাম বিভাগে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন ১৫ হাজার ৬৩৮ জন এবং ডেঙ্গুকে মারা গেছেন ৫৬ জন। চট্টগ্রামের পর বিভাগীয় পর্যায়ে সবচেয়ে বেশি ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগী ঢাকা বিভাগ (মহানগর ব্যতীত)। ঢাকা বিভাগে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ১৫ হাজার ৫৪ জন এবং মারা গেছেন ১৮ জন। ঢাকা বিভাগের পর বেশি রোগী বরিশাল বিভাগে। বিভাগটিতে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন ১২ হাজার ৪৬৩ জন এবং ডেঙ্গুতে মারা গেছেন ৩৬ জন। খুলনা বিভাগে ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা পাঁচ হাজার ৪৮০ জন এবং  ডেঙ্গুতে মারা গেছেন ১৩ জন। রাজশাহী বিভাগে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা তিন হাজার ৬৪৬ জন এবং ডেঙ্গুতে মারা গেছেন সাতজন। ময়মনসিংহ বিভাগে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগী তিন হাজার ২২৫ জন এবং মৃত্যু সাতজন। রংপুর বিভাগে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত দুই হাজার ৩২৬ জন এবং ডেঙ্গুতে মৃত্যু চারজন। সিলেট বিভাগে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগী ৮৬৩ এবং ডেঙ্গুতে মৃত্যুশূন্য। জেলা পর্যায়ে ঢাকা ব্যতীত দেশে সবচেয়ে বেশি রোগী চট্টগ্রাম জেলায়। জেলাটিতে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা পাঁচ হাজার ৩২৭ জন এবং মৃত্যু ৫১ জন। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ও মৃত্যু কম সুনামগঞ্জ  জেলায় । জেলাটিতে আক্রন্তের সংখ্যা ৫৭ জন এবং মৃত্যুশূন্য। 

ঢাকার বাইরের ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে আমার সংবাদ কথা বলে কীটতত্ত্ববিদ অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশারের সাথে। তিনি বলেন, ‘ঢাকার বাইরে ডেঙ্গু বেড়ে যাওয়ার কারণ হলো অনেকে বৃষ্টির পানি জমিয়ে ব্যবহার করছেন। পানি যথাযথ নিয়ম মেনে ব্যবহার না করায় পানিতে এডিস মশার লার্ভা জন্ম নিচ্ছে। আবার গ্রামে গৃহপালিত পশুপাখিকে খাবার দেয়ার জন্য যেসব পাত্র ব্যবহার করা হচ্ছে সেগুলোতে বৃষ্টির পানি জমে থাকছে। এসব পাত্রেও এডিস মশার লার্ভা জন্ম নিচ্ছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘চলতি বছর ডেঙ্গু সংক্রমণ ধীরে ধীরে কমে আসবে। ডেঙ্গু সংক্রমণের মৌসুমি সময়টা আমরা পেরিয়ে যাচ্ছি।’ 
ঢাকার বাইরে ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে আমার সংবাদের সাথে কথা বলেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ডা. বেনজির আহমেদ। তিনি বলেন, ‘ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করতে হলে এডিস মশা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। যেহেতু ডেঙ্গু ইতোমধ্যে সারা দেশে ছড়িয়ে গেছে তাই স্থানীয় পর্যায়ে ডেঙ্গু প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। যে স্থানগুলোতে আক্রান্ত বাড়ছে সে স্থানগুলোকে চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেয়া জরুরি হয়ে পড়েছে।’
 

Link copied!