সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২৩, ১২:৩৩ এএম
- দুবছরের বেশি সময় পর সহযোগী অধ্যাপকের পদোন্নতি
- তিন হাজারে পদোন্নতি পেয়েছেন মাত্র ৬৯০ জন
- বঞ্চিতরা ২৪ থেকে ২৭ ক্যাডারের
- প্রধানমন্ত্রীর সুপারিশ বাস্তবায়নের আবেদন
দীর্ঘ দুবছরের বেশি সময় পর বিসিএস সাধারণ শিক্ষায় সর্বনিম্ন পদোন্নতি দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ। এ পদোন্নতিতে হতাশ হয়েছেন বিসিএস ২৪ থেকে ২৭তম ক্যাডারের সহকারী থেকে সহযোগী অধ্যাপক হওয়া শিক্ষকরা। সম্প্রতি এক বিবৃতিতে এমনটিই জানিয়েছেন বিসিএস সাধারণ শিক্ষক সমিতির (বিসাশিস) নেতারা। এ ব্যাপারে ফেসবুকেও নিজেদের হতাশার কথা জানিয়েছেন শিক্ষকরা। তারা বিবৃতিতে জানিয়েছেন, তিন হাজারের বেশি পদোন্নতির উপযোগী থাকলেও মাত্র ৬৯০ জনকে পদোন্নতি দেয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে শিক্ষক নেতারা বলেন, পদোন্নতি একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় এটি দীর্ঘ হচ্ছে।
জানা যায়, সর্বশেষ ২০২১ সালে পদোন্নতি পেয়েছেন শিক্ষকরা। সেবার এক হাজার ৮৪ জনের পদোন্নতি হলেও এবার পদোন্নতি হয়েছে মাত্র ৬৯০ জনের। এতে প্রায় তিন হাজার পদোন্নতি উপযোগী প্রার্থীকে বঞ্চিত করা হয়েছে।
বিসাশিসের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতি শিক্ষা ক্যাডারে বিদ্যমান বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছে। গুরুত্ব বিবেচনায় যোগ্য সব কর্মকর্তার পদোন্নতির জন্য মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করা হয়েছে। বর্তমানে সহকারী অধ্যাপক থেকে সহযোগী অধ্যাপক পদে ২৪তম থেকে ২৭তম বিসিএস পর্যন্ত পদোন্নতিযোগ্য কর্মকর্তা রয়েছেন প্রায় তিন হাজার। অথচ দুবছর পদোন্নতি না দিয়ে জট তৈরি করা হয়েছে। প্যাটার্ন অনুযায়ী পদসৃজন না করে এ পদোন্নতি আগের সমস্যাকে আরও তীব্রতর করেছে। আমাদের বারবার আশ্বাস দিয়েও বিভিন্ন তালবাহানা ও সময়ক্ষেপণ করা হয়েছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, পদোন্নতিযোগ্য কর্মকর্তাদের পারিবারিক ও সামাজিক মর্যাদা সমুন্নত এবং কর্মস্পৃহা ধরে রাখার স্বার্থে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক সুপার নিউমারারি পদে পদোন্নতির সুযোগ তৈরির একটি নির্দেশনা রয়েছে। বিষয়টি সমিতি বারবার কর্তৃপক্ষকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছে। কিন্তু সেটিকেও কোনো বিবেচনায় নেয়া হয়নি। বুধবার মাত্র ৬৯০ কর্মকর্তার পদোন্নতি আদেশ দেয়া হয়েছে। এটা স্মরণাতীতকালের সহযোগী অধ্যাপক পদে সর্বনিম্নসংখ্যক পদোন্নতি। পদোন্নতিতে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির দাবির প্রতিফলন ঘটেনি। এরূপ পদোন্নতি সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করবে। এতে পদোন্নতিবঞ্চিত শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তাদের মতোই পুরো শিক্ষা ক্যাডার পরিবার হতাশ। যোগ্য সব কর্মকর্তার পদোন্নতি ব্যতীত নগণ্যসংখ্যক পদোন্নতি বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা এই প্রহসনের পদোন্নতির তীব্র প্রতিবাদ জানাই। পাশাপাশি দ্রুততম সময়ে সাপ্লিমেন্টারি ডিপিসি সভা করে সব স্তরে যোগ্য কর্মকর্তার পদোন্নতি দেয়ার জোর দাবি করছি।
এর আগে শিক্ষা ক্যাডারে ৬৯০ জন সহকারী অধ্যাপক থেকে সহযোগী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পেয়েছেন।
বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারের শিক্ষক কেএম রাব্বানী বলেন, শিক্ষা ক্যাডার সার্ভিসের পদোন্নতির সর্বোচ্চ পদের বেতন গ্রেড ৪র্থ গ্রেড পর্যন্ত। এতে ক্যাডারের মনোবল ভেঙে যায়। শিক্ষকদের দিয়ে ভবিষ্যৎ নির্মাণ করতে হয়। কিন্তু আমাদের সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ করা হয়।
২৪তম বিসিএসের শিক্ষক তোফায়েল আহমেদ বলেন, চাকরির কারণে শিক্ষকরা এখন এসব বিষয়ে মুখ এবং কলম দুটোই বন্ধ করে রাখেন। তাতে কষ্ট আরও বাড়ে। শিক্ষকরা নানাভাবে অতিমাত্রায় রাজনীতির শিকার। বিসাশিস সভাপতি শাহেদুল খবীর চৌধুরী আমার সংবাদকে বলেন, দুবছরের বেশি সময় পর এই পদোন্নতি হলেও তা প্রত্যাশা অনুযায়ী হয়নি। ২০২১ সালে পদোন্নতি পেয়েছেন ১০৮৪ জন। তখন পদোন্নতি পাওয়ার উপযোগী কর্মকর্তা ছিলেন ১৮০০ থেকে দুই হাজার। কিন্তু এবারের পদোন্নতির উপযোগী শিক্ষকের সংখ্যা বেশি হলেও সর্বনিম্ন পদোন্নতি দেয়া হয়েছে। পদোন্নতি একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় এটি দীর্ঘ হচ্ছে। তবে এই পদোন্নতি পূর্বের মতো বছরে দুবার দিয়ে হলেও সবাইকে পদোন্নতি দেয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।