ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা শনিবার, ০২ আগস্ট, ২০২৫
Amar Sangbad

রাজধানীতে ৫০ টাকায় মিলছে গরুর গোশত!

মিরাজ উদ্দিন

মিরাজ উদ্দিন

ফেব্রুয়ারি ২, ২০২৪, ১১:৪৬ এএম

রাজধানীতে ৫০ টাকায় মিলছে গরুর গোশত!
  • অর্থের অভাবে গোশত কিনতে না পারাদের জন্যই এমন উদ্যোগ
  • রেওয়াজ ধরে রাখবে তার সন্তানরাও
  • ‘গরিবের দোকান’ নামে পরিচিত

প্রতিদিনই বাড়ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম। আকাশছোঁয়া দামে হাঁসফাঁস মধ্য ও নিম্নবিত্তদের জীবন। তবে এমন দিনেও খোঁজ মিলেছে মাত্র ৫০ টাকায় গরুর মাংস বিক্রির। তাও আবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারের মতো এলাকায়। গরিবের গোশত দোকান নামেই চিনে সবাই জসিম মিয়ার গোশত দোকানকে। যদিও তার দোকানের নাম মায়ের দোয়া গোশত বিতান। করোনার আগে বাজারের দোকান ছিল তার। অতিমারী করোনায় দীর্ঘদিন দোকান বন্ধ রাখতে হয়। একপর্যায়ে দোকান ছেড়ে দেন তিনি। 

বর্তমানে তিনি  কারওয়ান বাজারে দা পট্টিতে ভ্রাম্যমাণ দোকানে মাংসের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। ক্রেতার প্রয়োজন অনুসারে মাংস বিক্রি করে থাকেন তিনি। এতে ক্রেতারা যেমন খুশি হন তেমনি তিনিও শান্তি অনুভব করেন। স্বল্প ও নিম্ন আয়ের মানুষ স্বচ্ছন্দে কিনেন পরিমাণ মতো মাংস। সেখানে ৫০ টাকায়ও নেয়া যাবে গরুর মাংস। দোকানদার জসিম মিয়া তার জীবনে ঘটে যাওয়া এক ঘটনা থেকে এই উদ্যোগ নিয়েছেন।  জসিম মিয়া আমার সংবাদের এই প্রতিবেদককে জানান, একসময় ৫০০ গ্রাম মাংস কিনে খেতে না পারায় নিজেই মাংসের দোকান দেয়ার পরিকল্পনা করেন। শুধু তা-ই নয় গরিবদের জন্য ১০০ গ্রাম করে মাংস বিক্রি শুরু করেন। তিনি জানান, যখন ১৬ টাকা কেজি দরে মাংস বিক্রি হতো তখন আধা কেজি কিনার জন্য গেলে দোকানদার আমাকে না দিয়ে ফিরিয়ে দেয়। সেখান থেকেই গরুর মাংসের দোকান দিবো বলে আমি সিদ্ধান্ত নেই। এরপর আমার চার সন্তানকেও আমি এই  মাংস বিক্রির (কসাই) পেশায় নিয়ে আসি। নিম্ন আয়ের মানুষের কথা চিন্তা করে এই উদ্যোগ নেন বলে জানান তিনি। 

মাংস কিনতে আসা রবিউল নামে এক ব্যাংক কর্মকর্তা বলেন, মানবিক দিক থেকে তিনি এই উদ্যোগ নিয়েছেন তা ধন্যবাদ দেয়ার মতো ভাষা নেই। আমি গতকালও দেখলাম ৫০ থেকে ১০০ টাকায় মাংস বিক্রি হচ্ছে। এটি দেখার পর আমি সারাদিন ভাবলাম তারা তো মাংস খায় না শুধু মাংসের ঘ্রাণটা নেয়। এই প্রচলন শুধু এখানে নয় সব জায়গায় হওয়া উচিত। এক কেজি মাংস কেনার সবার সামর্থ্য নেই। আর বর্তমান দ্রব্যমূল্যের অবস্থা কেমন সেটা তো আমরা সবাই জানি।

বিভিন্ন সময় এই দোকান থেকে ২০০ গ্রাম মাংস কিনে নিয়ে যান রফিক নামের একজন রিকশাচালক। জানতে চাইলে তিনি বলেন, টাকার সংকটে ছয় সদস্য পরিবার নিয়ে হিমশিম খেতে হয়। কিন্তু পরিবারে ছেলেমেয়েরা মাংস খাওয়ার জন্য বললে এখানে এসে ১০০ থেকে ২০০ টাকার মাংস নিয়ে যায়। যেহেতু তারা নিজেরাই ব্যানার লাগিয়ে দাম বলে দিচ্ছে তাই লজ্জা পাওয়ার কিছু নেই। রহিমা খাতুন নামের আরেক ক্রেতার সাথে কথা হলে তিনি বলেন, এটা মায়ের দোয়া মাংস বিতান হলেও সবাই চিনে গরিবের দোকান হিসাবে। কারণ এখানে গরিব মানুষরাই আসে ৫০/১০০/২০০ টাকার মাংস কেনার জন্য। তবে এই দোকান থাকার কারণে আমরা নিম্ন আয়ের মানুষ অন্তত মাংসের ঘ্রাণটা নিতে পারি। প্রথমে নিজে একাই শুরু করলেও পরে পরিবারের চার ছেলেকে নিয়ে ব্যবসা করেন জসিম মিয়া। তিনি বলেন, আমি মরে যাওয়ার পর আমার সন্তানরা এই প্রচলন ধরে রাখবে। 

বড় সন্তান মনির হোসেন আমার সংবাদকে বলেন, আমাদের এই রেওয়াজ আমাদের সন্তানদেরও দিয়ে যাব। কারণ আমাদের বাবা এই মানবিক কাজ দেখিয়ে গেছেন সুতরাং আমরা চার ভাই যতদিন আছি এই পদ্ধতি চলমান থাকবে। এরপর আমাদের সন্তানদেরও বলে যাবে এই রীতি ধরে রাখতে। যাতে অসহায় মানুষ স্বল্প দামে মাংস কিনে খেতে পারে। যাদের মাংস খেতে খুব ইচ্ছে করে কিন্তু দাম বেশি হওয়ায় কিনতে পারেন না মূলত তারাই এখানে মাংস কেনেন। এক সময় আধা কেজি মাংস কিনার সামর্থ্য ছিল না এই জসিমের। সেটিকে মাথায় রেখে এই মাংসের দোকান শুরু করেন তিনি। অল্প টাকায় পরিবারের মুখে মাংস তুলে দিতে পারায় খুশি নিম্ন আয়ের মানুষ।
 

Link copied!