Amar Sangbad
ঢাকা মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৪,

আশ্রয়কেন্দ্রেও হানা দিয়েছে বানের জল!

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি

জুন ১৮, ২০২২, ০৫:৫০ পিএম


আশ্রয়কেন্দ্রেও হানা দিয়েছে বানের জল!

বন্যার ভয়াবহতা বাড়ছেই। ঢলের পানির পাশাপাশি চলছে অবিরাম বর্ষণ। বলা যায়, প্রতি মুহূর্তেই অবনতি হচ্ছে সিলেট-সুনামগঞ্জের পরিস্থিতি। মানুষ পানিবন্দি হয়ে আছে লাখ লাখ। ডুবে গেছে সড়ক ও রেলপথ। সাব স্টেশনগুলোতে পানি ওঠায় সিলেটে সাময়িকভাবে বন্ধ আছে বিদ্যুৎ সরবরাহ। গতকাল (১৭ জুন) থেকেই বিচ্ছিন্ন সুনামগঞ্জ। আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে; তবে সেখানেও হানা দিয়েছে বানের জল।

স্মরণকালের ভয়ংকরতম বন্যা হচ্ছে সিলেটে। নগরীতে যে বেগে ঢুকছে বানের পানি, তা কখনও দেখা হয়নি স্থানীয়দের। সিলেটের এক বাসিন্দা জানান, তার ৬০ বছরের জীবনে এমন প্রলয়ঙ্করী বন্যা দেখেননি তিনি।

ডুবে গেছে শহরের রাস্তাঘাট, বসতবাড়ি। কোম্পানিগঞ্জ ও গোয়াইনঘাটসহ ৬ উপজেলার শতভাগ এলাকা এখন বন্যাকবলিত। পানিবন্দি হয়ে আছে লাখ লাখ মানুষ। কন্ট্রোলরুমে পানি ওঠায় পুরো সিলেটে বন্ধ রাখা হয় বিদ্যুৎ সরবরাহ। হাসপাতাল, সড়ক, বাসা বাড়ি সবখানেই পানি। বানের জল ঢুকে পড়েছে রেলস্টেশনে। এতে বন্ধ রয়েছে ট্রেন চলাচল। স্টেশনে গিয়ে আটকা পড়েন অনেক যাত্রী। ঢাকা-সিলেট রুটে ট্রেন চলবে ফেঞ্চুগঞ্জের মাইজগাঁও স্টেশন পর্যন্ত।

ওসমানী বিমানবন্দরের রানওয়ে জলমগ্ন। বন্ধ রয়েছে বিমান ওঠানামা। শনিবার (১৮ জুন) ও রোববারের (১৯ জুন) লন্ডনের ফ্লাইটের শিডিউল পিছিয়ে দেয়া হয়েছে। সেই সাথে, ডুবে গেছে বিদ্যুতের কন্ট্রোল রুম। সিলেটে সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয় সরবরাহ। বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়ে গোটা জেলার মানুষ। সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী জানান, বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রে পানি প্রবেশ করেছে। পানির উচ্চতা থেকে ২-৩ ফুট উঁচু করে বেড় দিয়ে আবার বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু করতে চাচ্ছেন। কাজের জন্যই সাময়িকভাবে বন্ধ রয়েছে বিদ্যুৎ সরবরাহ; এমনটি জানিয়ে মেয়র বলেন, সেখানে সেনাবাহিনী এবং সিটি করপোরেশনের শ্রমিকরা কাজ করছে। তাদের নিরাপত্তার জন্যই কিছুক্ষণের জন্য বন্ধ রাখা হয়েছে বিদ্যুৎ সরবরাহ।

বিচ্ছিন্ন আরেক জনপদ এখন সুনামগঞ্জ। হুঁ-হুঁ করে বাড়ছেই বানের জল। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে জেলার প্রায় সকল জনপদ। সড়কে পানি ওঠায় ব্যাহত হচ্ছে সিলেটের সাথে যান চলাচল। সুনামগঞ্জ সদরের সাথে সব উপজেলার সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন আছে গোটা জেলা। বাড়িঘরে পানি ঢোকায় চরম ভোগান্তি। বিশুদ্ধ পানি আর খাবার সঙ্কটে দুর্বিষহ জীবন। জেলার দোয়ারাবাজার উপজেলার এক বাসিন্দা বলেন, আমাদের দোয়ারা থানায় এমন কোনো জায়গা ও আশ্রয়কেন্দ্র নাই যেখানে গিয়ে মানুষ আশ্রয় নেবে।

ভারি বৃষ্টিপাতের সাথে প্রতিনিয়ত প্রবল বেগে ঢুকছে পানি। সব প্রতিকূলতা ছাপিয়ে দুর্গতদের সহায়তায় কাজ করে যাচ্ছে সেনা ও নৌবাহিনী। বিতরণ করা হচ্ছে ত্রাণ।


ইএফ

Link copied!