Amar Sangbad
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০২ মে, ২০২৪,

চট্টগ্রামে ১৬ প্রতিষ্ঠানে বর্জ্য পরিশোধনাগার ইটিপি নেই

চট্টগ্রাম ব্যুরো

চট্টগ্রাম ব্যুরো

আগস্ট ২৪, ২০২২, ০৭:০৮ পিএম


চট্টগ্রামে ১৬ প্রতিষ্ঠানে বর্জ্য পরিশোধনাগার ইটিপি নেই

চট্টগ্রাম নগরীর নাসিরাবাদ শিল্প এলাকার একটি ডাইং কারখানার বিদ্যুৎ, গ্যাস ও টেলিফোন সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয় পরিবেশ অধিদপ্তর। বর্জ্য পরিশোধনাগার (ইফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্লান্ট-ইটিপি) ছাড়া কার্যক্রম পরিচালনা করায় সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়।

ইটিপি স্থাপনের জন্য মক্কা ওয়াশিং ইন্ডাস্ট্রিজ প্রাইভেট লিমিটেডকে তিন দফা নোটিশ প্রদান করেন পরিবেশ অধিদপ্তর। এরপর ব্যবস্থা না নেওয়ায় জরিমানা করা হয়। দুই মাসের মধ্যে ইটিপি স্থাপন না করায় সকল ধরনের সেবা সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে পরিবেশ অধিদপ্তর। এরপরই কারখানাটি ইটিপি স্থাপন করে। 
আইন অনুসারে শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ক্ষতিকর তরল বর্জ্য পদার্থ পরিশোধনের জন্য বর্জ্য পরিশোধনাগার (ইটিপি) স্থাপনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এই ইটিপি হচ্ছে এমন একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে শিল্পকারখানার অপরিশোধিত পানি পরিশোধিত করা হয়। তবে ইটিপি স্থাপনের এই আইন মানছে না চট্টগ্রামের ১৬টি শিল্পপ্রতিষ্ঠান।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অভিযানে গিয়ে ইটিপি ছাড়া বর্জ্য নির্গমনের প্রমাণ পেলে জরিমানা করে পরিবেশ অধিদপ্তর। দফায় দফায় নোটিশ ও জরিমানার পরেও অনেক শিল্পপ্রতিষ্ঠান ইটিপি স্থাপনে আগ্রহী হয় না। যদিও আইনানুযায়ী শিল্পকারখানাগুলোকে লাল, কমলা ও সবুজ ক্যাটাগরিতে ভাগ করা হয়েছে।

লাল-কমলা ক্যাটাগরির কারখানা বিপজ্জনক বর্জ্য নিঃসরণ করে। এসব কারখানার বর্জ্য নিষ্কাশনে চসিক ও পরিবেশ অধিদপ্তরকে তদারকির জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়।

পরিবেশ অধিদপ্তর সূত্রমতে, চট্টগ্রামের ইটিপিবিহীন ১৬ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৮টি প্রতিষ্ঠানের ইটিপিথর অনুমোদন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। ২টি প্রতিষ্ঠানের ইটিপি নির্মাণাধীন এবং ইটিপি স্থাপনের জন্য আরও ছয়টি প্রতিষ্ঠানকে নোটিশ দেওয়া হয়েছে। এদিকে, ইটিপিথর অনুমোদন প্রক্রিয়াধীন থাকা প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে নাসিরাবাদ শিল্প কারখানার ফেব্রিক্স কানেকশন, দক্ষিণ হালিশহরের ইউনিক ওয়াশিং, আগ্রাবাদ ডবলমুরিংয়ের ব্রাইটেক্স গার্মেন্টস, সাগরিকার সুমেটাল, আতরার ডিপোর পাছাজিও ফুড, নাসিরাবাদের কর্ণফুলী ওয়াশিং, পাহাড়তলী মুনসুরাবাদের রাজ ডেনিম, এবং ঠান্ডাছড়ির আল রাজি কেমিক্যাল কমপ্লেক্স।

এছাড়াও ইটিপি নির্মাণাধীন থাকা ২টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে একটি ফুলকলি ফুড প্রোডাক্টস। অন্যটি কালুঘাটের এয়ারমেট গুড্ডি ইলেকট্রিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। ইটিপি স্থাপনের জন্য নোটিশ দেওয়া ৬ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে একটি বায়েজিদের আল্লামা ওয়াশিং, আতরারডিপোর বনলতা ওয়াশিং, সাগরিকা রোডের কোস্টাল সী ফুডস লিমিটেড, পানওয়ালাপাড়ার লিমেক্স ওয়াশিং, অক্সিজেনের চিটাগং ওয়াশিং, এবং লালখান বাজারের হাইওয়ে সুইটস।

বিশেজ্ঞরা বলছেন, ওয়াশিং ইন্ডাস্ট্রি, টেক্সটাইল ও ম্যনুফ্যাকচারিং ইন্ডাস্ট্রির জন্য ইটিপি ব্যবহার বাধ্যতামূলক। কারণ হিসেবে বলছেন, ওয়াশিং প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে ডিটারজেন্ট ও রঙ নিঃসরণ হয়। আর ট্যানারি ও রিফাইনারি থেকে অর্গানিক ও বিভিন্ন ধরনের হ্যাজার্ড বের হয়; যা পানির সঙ্গে মেশার ফলে পানির গুণাগুণ নষ্ট হয়ে যায়। এসকল তরল বর্জ্য অপরিশোধিতভাবে পরিবেশে ছড়িয়ে পড়লে মানুষের ক্যান্সারসহ বিভিন্ন ধরনের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। একইসঙ্গে এ পানি নদী-নালা, খাল বিলে মিশে পানিকে দূষিত করবে এবং আবাদি জমির উর্বরতা হারাবে।

কারখানাগুলোতে ইটিপি না থাকা প্রসঙ্গে পরিবেশ অধিদপ্তর মহানগরের উপ-পরিচালক মিয়া মাহমুদুল হক বলেন, ‘পরিবেশ আইন অনুযায়ী তরল বর্জ্য সৃষ্টিকারী প্রতিষ্ঠানগুলোতে তরল বর্জ্য পরিশোধনের জন্য ইটিপি স্থাপন এবং কার্যকরভাবে তা পরিচালন করা বাধ্যতামূলক। ইটিপি না থাকলে উৎপাদনকাজ চালানোর অনুমতি নেই। ইটিপি না থাকার কারণে অনেক প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করা হয়েছে।অনেক প্রতিষ্ঠানকে নোটিশ দেওয়া হয়েছে। যেসকল প্রতিষ্ঠানে এখনো ইটিপি স্থাপন করেনি তাদের তালিকা করা হয়েছে। আমরাও মনিটরিং করছি। ইটিপি না করে কারখানা পরিচালনা করলে জরিমানাসহ সেবা সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হবে।

আমারসংবাদ/এসএম

Link copied!