Amar Sangbad
ঢাকা মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৪,

লিডারসহ গ্রেপ্তার কিশোর গ্যাংয়ের ২৭

নিজস্ব প্রতিবেদক

নিজস্ব প্রতিবেদক

ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২৪, ০৮:১৬ পিএম


লিডারসহ গ্রেপ্তার কিশোর গ্যাংয়ের ২৭

রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় বেশ কয়েকটি ‘কিশোর গ্যাং’ গ্রুপের সদস্য কর্তৃক ছিনতাই, চাঁদাবাজিসহ সন্ত্রাসী কার্যক্রম লক্ষ্য করা যায়। গ্যাং সদস্যরা ক্ষমতা জাহির করতে মারামারিসহ অনেক সময় খুন করতেও দ্বিধাবোধ করে না। 

এছাড়াও তারা বিভিন্ন এলাকায় গ্যাং এর মাধ্যমে মাদক ব্যবসার সিন্ডিকেট গড়ে তোলে এবং নিরীহ মানুষদের অপহরণপূর্বক মুক্তিপণ আদায় করে। এই ত্রাস সৃষ্টিকারী কিশোর গ্যাংয়ের গ্রুপ লিডারসহ ২৭ জনকে আটক করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন র‌্যাব-৩

সম্প্রতি শাহজাহানপুর, সবুজবাগ, শ্যামপুর, বংশাল ও তার আশেপাশের এলাকায় বেশ কয়েকটি ছিনতাই, চাঁদাবাজিসহ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ঘটায়। তারা মাদক সেবন, সাইলেন্সারবিহীন মোটরসাইকেল চালিয়ে বিকট শব্দ করে জনমনে ভীতির সঞ্চার, স্কুল-কলেজে বুলিং, র‌্যাগিং, ইভটিজিং, ধর্ষণ, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, ডাকাতি, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মাদক সেবন, অস্ত্র প্রদর্শন এবং অশ্লীল ভিডিও শেয়ারসহ নানাবিধ অনৈতিক কাজে লিপ্ত।

মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর টিকাটুলিতে র‌্যাব-৩ প্রধান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ।

র‌্যাব জানায়, গত ২৬ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর শাহজাহানপুর, সবুজবাগ, শ্যামপুর ও বংশাল এলাকা থেকে কিশোরগ্যাং রাব্বি গ্রুপের ৫ জন, হৃদয় গ্রুপের ৭ জন, মুন্না গ্রুপের ৩ জন, হাসান গ্রুপের ২ জন এবং রকি গ্রুপের ১০ জন সহ সর্বমোট ২৭ জন সক্রিয় সদস্যকে গ্রেপ্তারা করা হয়েছে।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলো মো. রাব্বি (২০), মো. হৃদয় (২০), মো. মুন্না (২০), মো. হাসান (২০), আব্দুর রশিদ এসহাক ওরফে রকি (২৬), মো. শুভ (২০), মো. সিফাত (১৮), মো. রাকিব (১৮), মো. তন্ময় হোসেন (১৮), মো. মিলন (১৯), মো. রাজন (১৯), মো. ইয়াছিন (১৯), মো. ইমন (১৮), আবু তাওহীদ সাফির (২০), মোঃ সিয়াম (১৯), মো. রাকিবুল ইসলাম (২০), মো. জাকির হোসেন (৩০), মো. রাকিব (২৩), মো. নাফিস হোসেন ওরফে মুন্না (২৪), মো. শুভ (২২), মো. রবিউল শেখ (২৪), মোঃ মোশারফ (২৫), মো. সোহেল (২৭), মো. শুভ (২৭), মো. বাবুল খান (৩৬), মো. নজরুল হক (৩২) ও  মো. বাবুল হোসেন (৩৬)

উদ্ধার করা হয়, ৩ টি চাপাতি, ২ টি ক্ষুর, ১০ টি চাকু, ১ টি স্টীলের ব্রাস নকল্স, ২ টি সুইচ গিয়ার, ১ টি চাইনিজ চাকু, ১ টি এন্টিকাটার, ১ টি কাঁচি, ১ টি লোহার রড, ২৫ টি মোবাইলফোন, ২০ টি সিমকার্ড এবং নগদ ১৪ হাজার একশত টাকা।

আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, এদের প্রতিটি কিশোরগ্যাং গ্রুপে প্রায় ১৫-২০ জন সদস্য থাকে। রাব্বি গ্রুপটি সন্ত্রাসী মো. রাব্বির নেতৃত্বে দীর্ঘদিন যাবত পরিচালিত হয়ে আসছে। নিজেদের মধ্যে আন্তকোন্দলের কারণে তারা ২-৩ টি গ্রুপে বিভক্ত হয়। এই গ্রুপের সদস্যরা সাইলেন্সারবিহীন মোটরসাইকেল দ্বারা বিকট শব্দ করে খিলগাঁও ফ্লাইওভার এলাকায় জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করে অপরবাধ মূলক কার্যক্রম পরিচালনা করে।

গ্রেপ্তারকৃত গ্রুপের মধ্যে রকি গ্রুপটি রাজধানীর শ্যামপুর কদমতলী, যাত্রাবাড়িসহ আশপাশের এলাকায় রকির নেতৃত্বে সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। তারা উক্ত এলাকায় দীর্ঘদিন যাবৎ চাঁদাবাজি, ছিনতাই এবং বিভিন্ন মানুষকে হুমকি, মারধরসহ বিভিন্ন ধরনের অপরাধমূলক কার্যক্রম করে থাকে। তাদের মূল টার্গেট ছিল বিভিন্ন এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করা। এছাড়াও তারা রকির নেতৃত্বে বিভিন্ন এলাকায় টাকার বিনিময়ে ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী হিসেবে বিভিন্ন ধরনের সন্ত্রাসী কার্যক্রম করতো বলে জানা যায়।

কিশোরগ্যাং এর সদস্যরা পেশায় গাড়ীর হেলপার ও ড্রাইভার, গ্যারেজ মিস্ত্রি, দোকানের কর্মচারী, নির্মাণ শ্রমিক, পুরাতন মালামাল ক্রেতা, সবজি বিক্রেতা হলেও মূল পেশার আড়ালে তারা মূলত রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন ধরনের অপরাধে জড়িত ছিল। তাদের মধ্যে ১২ জনের বিরুদ্ধে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন থানায় চুরি, ডাকাতির চেষ্টা, অপহরণ পূর্বক মুক্তিপণ আদায়, মারামারি, ছিনতাই,  চাঁদাবাজি, মাদক, দস্যুতা, অস্ত্র ও হত্যা চেষ্টাসহ একাধিক মামলা রয়েছে বলে জানা যায়। আসামিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

আরএস

Link copied!