নিজস্ব প্রতিবেদক
আগস্ট ৪, ২০২৫, ১২:২৪ এএম
তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলম বলেছেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেই ওয়েজবোর্ড বাস্তবায়নের কাজ সম্পন্ন করা হবে।
রোববার রাজধানীর তথ্য ভবনে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ সাংবাদিক পরিবার এবং আহত ও সাহসী সাংবাদিকদের সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
উপদেষ্টা মাহফুজ বলেন, ওয়েজবোর্ড বাস্তবায়নের সঙ্গে কয়েকটি মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়সমূহের সঙ্গে কথা বলে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেই ওয়েজবোর্ড বাস্তবায়নের কাজ সম্পন্ন করা হবে। এর পাশাপাশি সরকারি উদ্যোগে সাংবাদিকদের দক্ষতা উন্নয়নে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবিত ১২টি সংস্কার কার্যক্রম নিয়ে সরকার কাজ করছে। চলতি মাসের মধ্যে এসব সংস্কার কার্যক্রম শেষ হবে।
সাংবাদিকদের সুরক্ষা অধ্যাদেশ প্রণয়ন প্রসঙ্গে মাহফুজ বলেন, অধ্যাদেশ প্রণয়নের জন্য একটি প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হয়। অধ্যাদেশে সাংবাদিকতার পরিধি নিয়েও একটি বিতর্ক আছে। সবমিলিয়ে সংশ্লিষ্ট অংশীজনের সঙ্গে পরামর্শ করে এই অধ্যাদেশ প্রণয়ন করা সম্ভব হবে বলেও তিনি আশাপ্রকাশ করেন।
সাংবাদিকদের চাকরিচ্যুতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, হঠাৎ করে সাংবাদিকদের চাকরিচ্যুত করার বিষয়টি কীভাবে সমাধান করা যায়- সে বিষয়ে সরকার চিন্তা করছে। সাংবাদিকদের আর্থিক নিরাপত্তার বিষয়ে তিনি বলেন, সাংবাদিকদের যদি সম্মানজনক জীবন দেওয়া যায়, তাহলে তাদের পক্ষপাতমূলক আচরণ ছেড়ে দেওয়ার একটি সুযোগ থাকবে। তিনি সাংবাদিকদের সম্মানজনক বেতন প্রদানের জন্য গণমাধ্যম কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান।
তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা বলেন, গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানে কর্মরত সাংবাদিকদের মালিকানার ভাগ দেওয়া যায় কিনা- সেই বিষয়টি পর্যালোচনা করা হচ্ছে। এটি করা সম্ভব হলে সাংবাদিকরা ক্ষমতায়িত হবেন এবং মালিক ও সাংবাদিকদের মধ্যে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠিত হবে। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের চলমান কার্যক্রম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, টেলিভিশন ও অনলাইন গণমাধ্যমকে একটি ফ্রেমওয়ার্কের মধ্যে আনার জন্য সরকার সম্প্রচার নীতিমালা প্রণয়নের কথা ভাবছে। এ ছাড়া তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সঙ্গে পরামর্শ করে ওটিটি ও অনলাইন গণমাধ্যমের জন্য নীতিমালা প্রণয়ন করা হচ্ছে।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে গণমাধ্যমের ভূমিকা তুলে ধরে তিনি বলেন, গণঅভ্যুত্থানের সময় কিছু সংবাদপত্র নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করেছে। তবে কারফিউ চলাকালীন কিছু টেলিভিশনের ভূমিকা ছিল পক্ষপাতমূলক।
গণঅভ্যুত্থানে মোবাইল সাংবাদিকতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, অভ্যুত্থান চলাকালীন অনেকে মোবাইল দিয়ে সাংবাদিকতা করেছেন এবং একইসঙ্গে অভ্যুত্থানেও অংশ নিয়েছেন।
বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ আবদুল্লাহর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. কাউসার আহাম্মদ, প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের মহাপরিচালক ফারুক ওয়াসিফ, দ্য ফাইনান্সিয়াল এক্সপ্রেসের সম্পাদক শামসুল হক জাহিদ, শহিদ সাংবাদিক তাহির জামান প্রিয়র মা শামসি আরা জামান, শহিদ আবু সাঈদ হত্যার ভিডিও ধারণকারী সাংবাদিক তাওহীদুল হক সিয়াম এবং দ্য ডেইলি স্টারের ফটো সাংবাদিক ইমরান হোসেন।
অনুষ্ঠানে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ পাঁচ সাংবাদিকের পরিবার এবং আহত ও সাহসী ১৯২ জন সাংবাদিককে সম্মাননা প্রদান করা হয়। সম্মাননার পাশাপাশি আর্থিক সম্মানি হিসাবে মোট ৫৬ লাখ টাকা প্রদান করা হয়।
ইএইচ