Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪,

চাষিদের হাহাকার

নাইন্দার হাওরে জলাবদ্ধতা, তলিয়ে যাচ্ছে বোরো ফসল

ছাতক (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি

ছাতক (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি

মার্চ ৩০, ২০২৩, ০৯:২১ পিএম


নাইন্দার হাওরে জলাবদ্ধতা, তলিয়ে যাচ্ছে বোরো ফসল

ছাতকে বৃষ্টির পানির জলাবদ্ধতায় তলিয়ে যাচ্ছে নাইন্দার হাওরের হাজার-হাজার একর বোরো ফসল। সামান্য বৃষ্টি হলেই হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েন হাওর পাড়ের কৃষকগণ। 

কৃষকদের দাবি মির্জারখালে অপরিকল্পিত ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণের ফলে হাওরে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। জমে গেছে প্রচুর বৃষ্টির পানি।

চলতি মৌসুমের ফসল রক্ষা বাঁধ এখন কৃষকদের কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। উপজেলার নোয়ারাই ইউনিয়নের ২৮ নং পিআইসি মির্জার খালের বাঁধের কারণে সামান্য বৃষ্টিতেই হাওরে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এতে কয়েক হাজার একর জমির বোরো ফসল ধীরে-ধীরে তলিয়ে যাচ্ছে পানির নিচে। শংকিত হয়ে পড়েছেন হাওরপাড় এলাকার কয়েকটি গ্রামের সহস্রাধিক কৃষক। বাঁধের ব্যাপারে কৃষকদের পক্ষ থেকে একাধিক আবেদন করা হয়েছে সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে। তবে কোন কার্যকর ব্যবস্থা এখনো নেয়া হয়নি।

দ্রুত সময়ের মধ্যে পরিকল্পনা অনুযায়ি মির্জার খালের বাঁধ সংস্কার না হলে হাওরের ফসল রক্ষা করা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন স্থানীয় কৃষকরা। জলাবদ্ধতায় তলিয়ে যাচ্ছে নাইন্দার হাওরের সব বোরো ফসল। 

সাবেক ইউপি সদস্য মনির উদ্দিনসহ এলাকার কৃষকরা জানান, মির্জার খাল দিয়ে হাওরসহ আশ-পাশ এলাকায় জমে যাওয়া  বৃষ্টির পানি সুরমা নদীতে পড়ে। প্রতিবছর পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতায় মির্জার খালে পরিকল্পনা অনুযায়ি ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণ করা হয়ে থাকে।

বৃষ্টির পানি নিস্কাশনের জন্য দু’পাশে বাঁশের খুঁটি ও ধাড়া দিয়ে ব্যারিকেড করে ছোট একটি নালা রেখে বাঁধ নির্মাণ করা হয়। বন্যা না আসা পর্যন্ত নালাটি উন্মুক্ত থাকে এবং হাওরে জমে যাওয়া বৃষ্টির পানি নালা দিয়ে সুরমা নদীতে চলে যায়।

এদিকে পিআইসির মাধ্যমে এক হাজারের মতো বস্তায় মাটি ভর্তি করে খালের দু‍‍`পাশে রাখা হয়। সুরমা নদী থেকে খাল দিয়ে বন্যার পানি হাওরের দিকে প্রবাহিত হলেই মাটি ভর্তি বস্তা দিয়ে তাৎক্ষনিক নালা ভরাট করা হয়। প্রায় ১৫ বছর ধরে পানি উন্নয়ণ বোর্ড ও পিআইসি সমন্বয়ে এ পদ্ধতিতে মির্জার খালে ফসল রক্ষা বাঁধ  নির্মাণ করা হয়েছে। এর আগেও স্থানীয়রা এ পদ্ধতিতে বাঁধ নির্মাণ করেছেন। তবে চলতি বছরে এর ব্যতিক্রম করে নালা না রেখেই  বাঁধ নির্মাণ করায় বন্যার আগেই জলাবদ্ধতায় হাওরের ফসল তলিয়ে যাচ্ছে।

এদিকে হাওরের ফসল রক্ষায় দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হাওর এলাকার সাবেক মেম্বার মনির উদ্দিন, ফারুক মিয়া, শাহাব উদ্দিন, ফারুক খান, হরুফ আলী,মতলিব আলী সহ তিন শতাধিক কৃষক স্বাক্ষরিত এক আবেদন গত ২২ মার্চ সুনামগঞ্জ জেলা প্রসাশক বরাবরে দেয়া হয়েছে। ২৩ মার্চ  ছাতক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরেও অনুরূপ আবেদন করেছেন কৃষকরা।

আবেদনের কপি পানি উন্নয়ন বোর্ড সুনামগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী, ছাতক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বরাবরে দেয়া হয়েছে। তবে  ছাতক ও দোয়ারা উপজেলা জুড়ে বিশাল নাইন্দার হাওরের ফসল রক্ষায় এ পর্যন্ত কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। এতে হাওর পাড়ের  কৃষকদের মাঝে ক্ষোভ ও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে।  দ্রুত সময়ের মধ্যে তদন্ত সাপেক্ষে হাওরের ফসল রক্ষায় কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ প্রয়োজন। 

এ ব্যাপারে ছাতক উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তৌফিক হোসেন খাঁন জানান, নোয়ারাই ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের কৃষক স্বাক্ষরিত এ ধরনের একটি আবেদনের কপি তিনি পেয়েছেন। এ বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এআরএস

 

Link copied!