Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ০৪ মে, ২০২৪,

ধর্মের কর্ম শিখতে এসে ধর্ষণের শিকার কিশোরী, গ্রেপ্তার কীর্তন দলের প্রধান

ঘোড়াঘাট (দিনাজপুর) প্রতিনিধি

ঘোড়াঘাট (দিনাজপুর) প্রতিনিধি

আগস্ট ৩১, ২০২৩, ০৫:৩৩ পিএম


ধর্মের কর্ম শিখতে এসে ধর্ষণের শিকার কিশোরী, গ্রেপ্তার কীর্তন দলের প্রধান
প্রতীকী ছবি

সনাতন ধর্মালম্বীদের ধর্মীয় উৎসব হরিবাসর। এই হরিবাসরে কীর্তন গাওয়া শিখতে এসেছিলেন ১৫ বছর বয়সী এক কিশোরী। তবে সেই ধর্মের কর্ম শিখতে আসাই কাল হলো তার! কীর্তন দলের প্রধানের দ্বারা ধর্ষণের শিকার হয়েছে ওই কিশোরী।

গত শনিবার (২৬ আগস্ট ) দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলায় কীর্তন দলের প্রধান দিজেন মহন্তের বাড়িতে ঘটনা ঘটে। পরে ভুক্তভোগী ওই কিশোরীর বাবা বাদী হয়ে ঘোড়াঘাট থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা করেছেন। মামলার বাদী জয়পুরহাট জেলার পাঁচবিবি উপজেলার বাসিন্দা।

বুধবার (৩০ আগস্ট) মামলার প্রধান আসামী ঘোড়াঘাট পৌর এলাকার শহরগাছী-হঠাৎপাড়া গ্রামের মৃত ভোলানাথ মহন্তের ছেলে দিজেন মহন্তকে (৫০) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তিনি ঘোড়াঘাট কৃষ্ণ কাঙ্গাল সম্প্রদায় নামক কীর্তন দলের প্রধান।

ভুক্তভোগী কিশোরীর পরিবার সূত্রে জানা যায়, গ্রেপ্তার দিজেন দীর্ঘদীন থেকে বিভিন্ন জেলায় হরিবাসর-কীর্তন করে বেড়ান। পাঁচবিবি উপজেলাতেও তিনি একটি হরিবাসরে গিয়েছিলেন। সেখানে ভুক্তভোগী কিশোরীর পরিবারের সঙ্গে তার একটি ভালো সম্পর্ক গড়ে উঠে। ভালো সম্পর্কের সুবাদে কীর্তন শিখার ইচ্ছা পোষণ করে ওই কিশোরী। এতে তার পরিবারের সম্মতি ছিল।

গত মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) ওই কিশোরীকে তার বাড়ি থেকে বগুড়া জেলার সোনাতলা উপজেলার দুইদিন ব্যাপী চলা একটি হরিবাসর অনুষ্ঠানে নিয়ে যায় দিজেন মহন্ত। অনুষ্ঠান শেষে দিজেন তার নিজ বাড়িতে নিয়ে আসে ওই কিশোরীকে। গত শনিবার (২৬ আগস্ট) দিজেনের বাড়িতে একই ঘরের আলাদা চৌকিতে ঘুমিয়ে পড়েন তারা। একই রাতে ওই কিশোরীকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে আসামি দিজেন।

মামলার বাদী ও ভুক্তভোগী কিশোরীর বাবা জানান, গত রোববার (২৮ আগস্ট) সকালে কীর্তন দলের সর্দার তাকে মোবাইলে কল করে জানান, তার মেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। খবর পেয়ে তিনি ঘোড়াঘাটে এসে তার অসুস্থ মেয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। সে সময় তার মেয়ে অজ্ঞান অবস্থায় ছিলেন। তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে দিনাজপুর এম. আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। এরপর তার মেয়ে পরিবারকে পুরো ঘটনা খুলে বললে, তিনি থানায় মামলা করেন।

ঘোড়াঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মনিরুজ্জামান মুরাদ বলেন, ‘মেয়েটি মানষিক ভাবে বেশ বিপর্যস্ত ছিল। মানুষ দেখলেই সে ভয় পেত। এছাড়াও তার শরীরে ইন্টারনাল পার্টে আঘাত ছিল। যে কারণে আরো উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে অন্যত্র রেফার্ড করা হয়েছে।’

ঘোড়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, ‘ঘটনা জানার পরপরেই আমরা ভুক্তভোগী ওই কিশোরী এবং তার পরিবারের সাথে যোগাযোগ করেছি। ঘোড়াঘাট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় অসুস্থতার কারণে মেয়েটি কিছু বলতে পারছিল না। ভুক্তভোগী কিশোরী কিছুটা সুস্থ্য হওয়ার পর পুরো ঘটনা খুলে বললে তার বাবা বুধবার রাতে মামলাটি করেন। গ্রেপ্তার আসামীকে বৃৃহস্পতিবার দুপুরে দিনাজপুরের আদালতে পাঠানো হয়েছে।’

এআরএস

 

Link copied!