বরগুনা প্রতিনিধি
সেপ্টেম্বর ২২, ২০২৩, ০৯:১৬ পিএম
বরগুনা প্রতিনিধি
সেপ্টেম্বর ২২, ২০২৩, ০৯:১৬ পিএম
বরগুনার তালতলীতে সৌরবিদ্যুৎ এর ব্যাটারি চুরির ঘটনায় কবিরাজ (ফকির) থেকে বাঁশ পড়া আনা হয়। পরে এলাকাবাসীর সামনে দেওয়া হয় বাঁশ চালান। এই বাঁশ চালানের ভিডিও করে ফেজবুকে ছাড়ে হাফিজুর নামের এক যুবক। এতে চুরির অপবাদ নিয়ে ঘৃণায় চোর সাব্যস্ত হওয়া রবিউল আত্মহত্যার চেষ্টা করেন।শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) সকালে উপজেলার ছোটবগী ইউনিয়নের চরপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, উপজেলার চরপাড়া এলাকার কামাল তালুকদারের নিজ ঘর থেকে সৌরবিদ্যুৎতের ব্যাটারি চুরি হয় গত তিন দিন আগে। এ জন্য থানায় কোনো অভিযোগ না দিয়ে আদিম এই কুসংস্কারের সহায়তায় চোর শনাক্ত করার জন্য আমতলী উপজেলার কবিরাজ হোসনেয়ারা বেগমের থেকে বাঁশ পড়া আনেন কামাল তালুকদার। এই বাঁশ পড়া দেওয়ার জন্য একজন তুলা রাশির লোক আনা হয়। পরে এলাকার প্রায় ৫ শতাধিক লোকের সামনে বাঁশ চালান দেওয়া হয়। এতে বিরোধ থাকা জালাল ফরাজীর ছেলে রবিউলকে টার্গেট করে চোর শনাক্ত করা হয়। এই ঘটনার সম্পূর্ণ ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেজবুকে ছাড়েন ওই এলাকার হাফিজুর নামের এক ব্যক্তি। বিষয়টি ভাইরাল হলে রবিউল চুরির অপবাদ নিয়ে ঘৃণায় ঘরে থাকা বিষ খেয়ে আত্যাহত্যা করার চেষ্টা চালায়। পরে পরিবারের সহযোগিতায় বেঁচে যায় রবিউল।
রবিউল বলেন, আমি জেলে নদীতে মানুষের সাথে কাজ করি। বাঁশ চালান দেখতে যাই আমি। তবে আমাকেই চোর বানানো হয়েছে। কামাল তালুকদারের সঙ্গে আমার ঝামেলা আছে। আমি এ অপবাদ নিয়ে কি ভাবে বেঁচে থাকবো তাই আত্মহত্যা করতে চেয়েছি।
এবিষয় কামাল তালুকদার বলেন, আমার ব্যাটারি চুরি হয়েছে এ জন্য আমি বাঁশ পড়া এনে তা চালান দেই। তাতে রবিউল চোর শনাক্ত হয়। চুরির বিষয়ে থানায় কোনো অভিযোগ দিয়েছিলেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, থানায় কোনো অভিযোগ করিনি।
এবিষয়ে ফেজবুকে ভিডিও ছাড়ার বিষয়ে হাফিজুরের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সবাই বাঁশ চালানের ভিডিও ছেড়েছে তাই আমিও ছেড়েছি।
কবিরাজ(ফকির) হোসনেয়ারা বেগম বলেন, আমি বাঁশপড়া দিতে চাইনি। তারা জোর করে নিছে। আমি জীবনেও বাঁশ পড়া দিবো না বলে ফোন কেটে দেন।
তালতলী থানার অফিসার (ওসি) তদন্ত রনজিৎ কুমার সরকার বলেন, চুরির কোনো বিষয়ে অভিযোগ কেউ করেনি। তাছাড়া বাঁশ চালান দেওয়ার আইনগত কোনো ভিক্তি নেই। তিনি আরও বলেন, রবিউলের পরিবার থেকে এখনো কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মিলন/এআরএস