রাকিবুল হোসেন শাহীন, দুর্গাপুর (রাজশাহী)
মে ১২, ২০২৫, ০১:৫৩ পিএম
রাকিবুল হোসেন শাহীন, দুর্গাপুর (রাজশাহী)
মে ১২, ২০২৫, ০১:৫৩ পিএম
রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলায় খরা ও অনাবৃষ্টির কারণে ব্যাপকহারে ধানের শীষ মরা রোগ দেখা দিয়েছে। ধান পাকার আগেই মাজরা বা ব্লাস্ট রোগে আক্রান্ত হয়ে ধানের শীষ মরে যাচ্ছে। এই রোগ প্রতিরোধে ওষুধ ছিটিয়েও কার্যকর ফল পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে কৃষকরা ফলন হারানোর আশঙ্কায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
দুর্গাপুর উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি বোরো মৌসুমে উপজেলাজুড়ে ৪ হাজার ১৯৭ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদ করা হয়েছে, যা গত বছরের তুলনায় ২০০ হেক্টর বেশি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার প্রতিটি জমিতে বোরো ধান ভালো হয়েছে। কৃষকেরা জানাচ্ছেন, কিছু দিনের মধ্যে ধান কাটা শুরু হবে। তবে এর মধ্যেই উপজেলার দেবীপুর, কাশিপুর, শালঘরিয়া, শ্যামপুর, হরিপুর, দাওকান্দি, উজালখলসী, বাদইল, মাড়িয়া, কিসমত বগুড়া, রসুলপুর গ্রামসহ বিভিন্ন মাঠে ধানে ব্যাপক হারে শীষ মরা রোগ দেখা দিয়েছে।
কৃষকদের অভিযোগ, অনাবৃষ্টির কারণে বোরো ধান পাকার আগেই ব্যাপক পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে। ধানের শীষ মরা রোগ প্রতিরোধ করতে বিভিন্ন কোম্পানির কীটনাশক ছিটিয়েও কোনো ফল পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে ধানে ফলন বির্পযয় হতে পারে। এর ফলে ধান রক্ষায় কৃষকেরা হতাশ হয়ে পড়েছেন।
পৌর এলাকার দেবীপুর গ্রামের কৃষক নুরুজ্জামান ভদ্দর মিয়া বলেন, "আমার ধান খেত ভালো ছিল, কিন্তু ধান পাকার আগেই শীষ মরা রোগ দেখা দেয়। প্রথমে দুই-একটি শীষ মরে গিয়েছিল, এখন তা ব্যাপক আকার ধারণ করেছে।"
শালঘরিয়া গ্রামের চাষী রেন্টু আলী বলেন, "আমি বর্গা নিয়ে দুই বিঘা জমিতে বোরো ধান আবাদ করেছি। ধান ভালো ছিল, তবে খরা ও অনাবৃষ্টির কারণে ব্যাপক পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে। বিভিন্ন কোম্পানির ওষুধ ছিটিয়েও কোনো লাভ হচ্ছে না। এখন ধানের ফলন বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছি।"
নওপাড়া গ্রামের কৃষক আকরাম আলী জানান, "ধান রোপণের শুরুতে এত বেশি পোকার আক্রমণ ছিল না। আমরা জমিতে পাখি বসানোর ব্যবস্থা করেছিলাম, তাই বালাইনাশক কম ব্যবহার করতে হয়েছিল। তবে ধানের শীষ বের হওয়ার পর থেকেই ব্যাপকভাবে শীষকাটা রোগ দেখা দিচ্ছে। এখন বালাইনাশক স্প্রে করছি।"
দুর্গাপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাহারা শারমিন লাবনী বলেন, "চলতি বোরো মৌসুমে কৃষকদের ধান চাষে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। শীষ মরা রোগের কারণে কৃষকদের সচেতন করা হয়েছে। খরা ও অনাবৃষ্টির কারণে পোকার আক্রমণ কিছুটা বেশি হতে পারে। বৃষ্টি হলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে পারে। কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, যাতে তারা কৃষি অফিসের নির্দেশনা অনুযায়ী কীটনাশক প্রয়োগ করেন।"
ইএইচ