Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪,

সুদহার তুলে দিয়ে রেফারেন্স রেট নির্ধারণ করা হবে: গভর্নর

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক

মার্চ ১২, ২০২৩, ০৮:৩০ পিএম


সুদহার তুলে দিয়ে রেফারেন্স রেট নির্ধারণ করা হবে: গভর্নর
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার

ব্যাংকগুলোর ঋণ বিতরণের ক্ষেত্রে সুদহার ৯ শতাংশ তুলে দিয়ে বাজারভিত্তিক ‘রেফারেন্স’ রেট করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। সুদহারের একটি করিডোরের মাধ্যমে বাজার পরিস্থিতি বিবেচনা করে একটি রেফারেন্স রেট ঠিক করে দেবে বাংলাদেশ ব্যাংক। বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো সেই রেফারেন্স রেটের ভিত্তিতে ঋণ ও বিনিয়োগের সুদহার ঠিক করবে। গতকাল রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) এফবিসিসিআই আয়োজিত সামিটের দ্বিতীয় দিন ‘লং টার্ম ফাইন্যান্স’ শীর্ষক প্লেনারি সেশনে রেফারেন্স রেট চালু সংক্রান্ত অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘‘আমরা পরিকল্পনা প্রায় চূড়ান্ত করে ফেলেছি। একটি করিডোর দেওয়া হবে সুদহারের, তা হবে বাজারভিত্তিক রেফারেন্স রেট অনুযায়ী।’

আব্দুর রউফ বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংক এখন তিনটি বিষয় নিয়ে কাজ করছে। একটি হচ্ছে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ। এটি করতে চাহিদাজনিত সরবরাহদিক নিয়ন্ত্রণ করার নীতিতে চলছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আরেকটি হচ্ছে বিনিময় হার একক রেটে নিয়ে আসা। বর্তমানে আমদানি, রফতানি, রেমিট্যান্স ও নগদ উত্তোলনে বৈদেশিক মুদ্রার একাধিক রেট আছে। শিগগির একটিতে নামিয়ে আনা হবে বৈদেশিক মুদ্রার বাজারে বিনিময় হার স্থিতিশীল করতে হবে। তৃতীয়টি হচ্ছে ঋণ সুদহারের রেফারেন্স রেট কার্যকর  করা। যা প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে।’

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, ব্যবসায়ীদের স্বল্প সুদে অর্থ দিতে ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে ব্যাংক ঋণের সুদহারের ঋণে সর্বোচ্চ ৯ শতাংশ সীমা নির্ধারণ করে দিয়েছে সরকার।

এদিকে ইউক্রেইন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে বিশ্ববাজারে উচ্চমূল্যের কারণে দেশেও মূল্যস্ফীতি বাড়ছে। মূল্যস্ফীতির এই বাড়তি চাপ সামাল দিতে অর্থনীতিবিদরা ঋণের ৯ শতাংশ সুদহার তুলে দিয়ে আমানতের সুদহার বাড়াতে মতামত দিচ্ছেন। আর বাংলাদেশকে বৈদেশিক মুদ্রায় দেওয়া চার দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলারের ঋণ মঞ্জুরের সময় আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) পরামর্শ দিয়েছে বেঁধে দেওয়া সুদহারের সীমা তুলে দিতে। সংস্থাটি অবশ্য ঋণ সুদহার নিয়ে একটি করিডোর দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে। 

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানায়, বাংলাদেশ ব্যাংক ঋণ সুদের একটি অঙ্ক নির্ধারণ করে দিবে বাজারের বিদ্যমান পরিস্থিতি অনুযায়ী। তার সঙ্গে ঋণের খাত অনুযায়ী সুদের একটি সর্বোচ্চ সিলিং নির্ধারণ করে দেওয়া হবে; সেখানে কতো শতাংশ বেশি নিতে পারবে ব্যাংকগুলো তা ঠিক করে দেওয়া হবে। মূল্যস্ফীতির পারদ চড়তে থাকলে আমানত প্রবৃদি্ধ কমে আসতে থাকে ব্যাংকে। এসময় অর্থনীতিবিদদের পক্ষ থেকে দাবি করা হয় আমানতের সুদহার বাড়াতে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মূল্যস্ফীতির তিন মাসের গড় হারের চেয়ে আমানতের সুদহার কম হবে না। বর্তমানে মূল্যস্ফীতির হার ৮ শতাংশের ঘরে রয়েছে কয়েক মাস ধরে। এমন প্রেক্ষাপটে শুধু ভোক্তা ঋণের উপর বিদ্যমান ৯ শতাংশ ঋণ সুদহারের  সঙ্গে সর্বোচ্চ ২ শতাংশ বেশি সুদ নেওয়ার সুযোগ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এমন নির্দেশনা বাংলাদেশ ব্যাংক মৌখিকভাবে দিলেও বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে এখনো লিখিতভাবে দেওয়া হয় নি।

এআরএস

Link copied!