Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ০৩ মে, ২০২৪,

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৪ বিভাগের ১৮টিতেই সেশনজট

ববি প্রতিনিধি

ববি প্রতিনিধি

ডিসেম্বর ২৫, ২০২২, ০৭:৪৬ পিএম


বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৪ বিভাগের ১৮টিতেই সেশনজট

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (ববি) ৬টি অনুষদে ২৪টি বিভাগ রয়েছে। এর মধ্য ১৮টি বিভাগেই রয়েছে সেশনজট। সেশনজটমুক্ত মাত্র ৬টি বিভাগ।

২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের ১৮টি বিভাগের এক হাজারের অধিক শিক্ষার্থী সেশনজটে পড়েছেন। এর মধ্য কয়েকটি বিভাগের ফাইনাল পরীক্ষা চলমান। ১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের কয়েকটি বিভাগের ৭ম সেমিস্টারের ফাইনাল পরীক্ষা চলছে জানুয়ারিতে পরীক্ষা শেষ হবে।

তীব্র সেশনজটের কারণে অনার্স শেষ না হওয়ায় ৪৫তম বিসিএসে আবেদন করতে পারছেন না এই ১৮টি বিভাগের শিক্ষার্থীরা। সেশনজটের কারণে সরকারি চাকরি থেকে পিছিয়ে পড়ছেন শিক্ষার্থীরা।

খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, বিজ্ঞান ও ইন্জিনিয়ারিং অনুষদের ৬টি বিভাগের ৫টিতেই সেশনজট রয়েছে। সিএসই বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে ৬মাসের জট রয়েছে। গণিত, রসায়ন ও ভূতত্ত্ব খনিবিদ্যা বিভাগের এক সেমিস্টার করে জট রয়েছে। পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষা চলমান যা জানুয়ারিতে শেষ হবে। পরিসংখ্যান বিভাগে কোন জট নেই বিভাগটি ১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষ থেকে চালু হয়েছে।

জীব বিজ্ঞান অনুষদের ৪টি বিভাগের ২টিতে জট রয়েছে। কোস্টাল ও ডিজিস্টার ম্যানেজমেন্ট, প্রাণরসায়ন ও জৈবপ্রযুক্তি বিভাগ। কোস্টাল ও ডিজিস্টার ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের এক শিক্ষার্থী বলেন, ২১ সালে অনার্স শেষ হওয়ার কথা থাকলেও ২৪ সালেও অনার্স শেষ হবে কিনা ভরসা পাচ্ছি না। প্রাণরসায়ন ও জৈবপ্রযুক্তি বিভাগের ৪র্থ বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষা চলমান।

ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ৪টি বিভাগের প্রত্যেকটিতে জট রয়েছে। ৪টি বিভাগের ১টি বিভাগেরও ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থীরা অনার্স শেষ করতে পারেননি। ম্যনেজমেন্ট বিভাগের ৮ম সেমিস্টারের রুটিন দিয়েছে যার পরীক্ষা শুরু হবে জানুয়ারি থেকে। মার্কেটিং ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থীরা এখনো ৬ষ্ট সেমিস্টার শেষ করতে পারেননি। ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থীরাও ৩য় বর্ষে পদার্পণ করতে পারেনি।

সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ৫টি বিভাগের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ ছাড়া বাকি ৪টি বিভাগেই সেশনজট রয়েছে। অর্থনীতি বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থীদের ৭ম সেমিস্টার এখনো শেষ করতে পারেনি। লোকপ্রশাসন বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা অনার্স শেষ করতে পারেননি। ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থীরাও ৬ মাসের জটে রয়েছেন। সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা অনার্স শেষ করতে পারেনি।

কলা ও মানবিক অনুষদের ৪টি বিভাগের ২টিতে জট রয়েছে। ইংরেজি ও বাংলা বিভাগের ১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের অনার্স শেষ করতে পারেনি হয়নি। ১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা এখনো ৪র্থ বর্ষে উঠতে পারেননি।

আইন অনুষদের আইন বিভাগের ১৭-১৮ সেশনের ফাইনাল পরীক্ষা চলমান জানুয়ারিতে শেষ হবে।

১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থীদের অনার্স শেষ এ বিষয়ে বিভাগের চেয়ারম্যান সহকারী অধ্যাপক মোঃ ইমরান হোসেনের কাছে জানতে চাইলে বলেন, আমাদের সবার প্রচেষ্টা ছিল সময়মত ক্লাস পরীক্ষা নিয়ে নেওয়া যেন সেশনজট না থাকে। সেজনজট শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার আগ্রাহ কমিয়ে দেয়। বিভাগের সকল শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের আন্তরিক সহযোগিতা ও প্রচেষ্টায় সময়মত আমরা ক্লাস পরীক্ষা শেষ করতে পেরেছি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও এ বিষয়ে আমাদের যথেষ্ট সাহায্য করেছে।

১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী বাসুদেব কর্মকার বলেন, সেশনজটের অন্যতম প্রধান সমস্যা হচ্ছে পূর্ববর্তি সেমিস্টারের রিজাল্ট দেরিতে প্রকাশিত হওয়া।

মার্কেটিং বিভাগের এক শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, সেশনজটের কারনে আমাদের পড়াশোনায় মনোযোগ দিতে পারছি না। পরিবারথেকেও নানান চাপ সৃষ্টি হচ্ছে। অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার সহপাঠীদের অনার্স শেষ হয়েছে অনেকে চাকরিও করছে সেখানে আমরা এখনো অনার্স শেষ করতে পারলাম না।

লোকপ্রশাসন বিভাগের এক শিক্ষার্থী বলেন, ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে ক্লাস শুরু করেছি এখনো ২য় বর্ষ শেষ করতে পারিনি। তিন বছরে মাত্র ৩টা সেমিস্টার শেষ হয়েছে।

বিজ্ঞান ও ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের ডিন সহযোগী অধ্যাপক শফিকুল আলম বলেন, আমাদের সেশনজটের পিছনে কিছু সংকট রয়েছে যেমন ল্যাব সংকট, শিক্ষক সংকট অনেক সময় দেখা যায় পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশে বিভিন্ন কারনে দেরি হয় এর কারণে পরবর্তি সেমিস্টারের পরীক্ষা নিতে পারি না। উক্ত সংকট নিরসনে আমরা কাজ শুরু করেছি প্রশাসনও আমাদের কাজে যথেষ্ট সাহায্য করছে আশা রাখছি আগামীতে সেশনজট কমে আসবে।

সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন সহযোগী অধ্যাপক দিল আফরোজ খানম বলেন, সেশনজট নিরসনে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি ইতিমধ্যে আমরা বিভাগগুলোর সাথে বসে আলোচনা করেছি। আমাদের একাডেমিক ক্যালেন্ডার তৈরি করা শেষ পরবর্তি সেশনগুলো আশারাখছি আর জটে পড়বে না। তিনি আরও বলেন যে সমস্ত বিভাগুলোতে জট থাকবে না তাদেরকে ডিন অফিস থেকে পুরস্কৃত করা হবে।

ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ডিন সহযোগী অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল মাসুদ বলেন, আমি ডিন হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছি কয়েকদিন হলো করোনার সময় থেকে মূলত জটটি শুরু হয়েছে এই জটগুলো নিরসনে ইতিমধ্যে আমরা কাজ শুরু করেছি। আশাকরি আগামী ৬মাস পর থেকে সেশনজট কমতে শুরু করবে।

কেএস 

Link copied!