ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা রবিবার, ০৩ আগস্ট, ২০২৫
Amar Sangbad

শব্দ দূষণের নগরী ‘জাহাঙ্গীরনগর’

তানভীর ইবনে মোবারক, জাবি

তানভীর ইবনে মোবারক, জাবি

জানুয়ারি ২৯, ২০২৩, ০৫:২৪ পিএম

শব্দ দূষণের নগরী ‘জাহাঙ্গীরনগর’
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার। সংগৃহীত

ঢাকার অদূরে প্রকৃতির প্রাণচাঞ্চল্যে ভরা শান্ত-স্নিগ্ধ ক্যাম্পাস জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি)। মূল শহর থেকে বেশ দূরে হওয়ায় যান্ত্রিক কোলাহল থেকে মুক্ত এ শিক্ষাঙ্গনে শিক্ষা ও গবেষণার সুষ্ঠু পরিবেশ রয়েছে।

তবে সম্প্রতি নিজেদের পরিবেশকে শব্দ দূষণের নগরীতে পরিণত করেছে এর শিক্ষার্থীরাই। এতে করে নষ্ট হচ্ছে প্রাণ-প্রকৃতি, ব্যাঘাত ঘটছে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশের।

সরেজমিনে ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা যায়, মূল ফটক থেকে কিছুদূর প্রবেশ করলেই সেলিম আল দীন মুক্তমঞ্চে চলছে সাংস্কৃতিক আয়োজন বা কনসার্ট। কনসার্টের বাজনার উচ্চধ্বনি ছড়িয়ে পড়ছে আবাসিক হল পর্যন্ত।

এরপর কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়া প্রাঙ্গনে বসেছে মেলা। সেখানে হাজার রকম পসরা নিয়ে বসেছেন দোকানিরা। পেছনে বসানো হয়েছে একটি নাগরদোলা; দর্শনার্থীদের চিৎকার চেঁচামেচিতে সেখানে অবস্থান করা দুঃসাধ্য।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) প্রবেশ করলে দেখা যায় সেখানে উচ্চস্বরে স্পিকারে বাজছে ভিনদেশি গান। আরেকটু এগিয়ে সপ্তম ছায়ামঞ্চে আসর বসিয়েছে অন্য আরেক দল। একই চিত্র জহির রায়হান মিলনায়তন ও ছবি চত্বরেও।

একটি ব্যাচের শিক্ষার্থীদের স্নাতক শেষ হওয়ায় তারা সেখানে দু’তলা মঞ্চ বানিয়ে রাতভর উচ্চস্বরে ভিনদেশি গানের তালে উল্লাস করছে। এদিকে শহীদ মিনারের পাশেই বাংলা বিভাগের উদ্যোগে তৈরি করা হয়েছে ‘মহুয়া মঞ্চ’। পাশে ‘মুরাদ চত্বরে’ ও রাতভর গান আর বারবিকিউ করছে শিক্ষার্থীরা।

একই চিত্র ক্যাম্পাসের বটতলা, বঙ্গবন্ধু হল, শহীদ সালাম-বরকত হল, রবীন্দ্রনাথ হল সংলগ্ন খাবারের দোকান সংলগ্ন এলাকায়ও। রাতে নির্দিষ্ট সময়ের পর দোকান বন্ধ করে দেয়ার নিয়ম থাকলেও গভীর রাত পর্যন্ত সেখানে খাওয়া-দাওয়া, যানবাহনের উচ্চশব্দ লেগেই থাকে।

ক্যাম্পাসের পরিবহন চত্বর, জাকসু ভবনের ভেতরে ও চারপাশে দিনরাত ২৪ ঘন্টাই চলতে থাকে গান-বাজনার আসর। শিক্ষা সমাপনী উৎসবের আয়োজনের জন্য সেখানে গভীর রাত পর্যন্ত আড্ডা-গানে মশগুল থাকে শিক্ষার্থীরা।

দিনভর লোকসমাগম আর উচ্চমাত্রার শব্দের কারণে এবার অতিথি পাখিদের সংখ্যাও আশঙ্কাজনক হারে কমে গেছে। ক্যাম্পাসের পুরাতন কলাভবন ও আল বেরুণী হল এলাকায়ও প্রতিনিয়ত কোন না কোন অনুষ্ঠান চলতেই থাকে।

গত দু’মাসের ধারাবাহিক এসব আয়োজনের কারণে আশেপাশের আবাসিক হল ও একাডেমিক ভবনে নষ্ট হচ্ছে শিক্ষার পরিবেশ, অতিষ্ঠ হয়ে উঠছেন শিক্ষার্থীরা। 

জাবিতে অটোরিক্সা ও যানবাহনের হর্ণে মাত্রাতিরিক্ত শব্দ দূষণ হচ্ছে। ছবি-আমার সংবাদ 

রবীন্দ্রনাথ হলের আবাসিক শিক্ষার্থী পার্থ কর্মকার ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, ‘গত কয়মাস ধরে ক্যাম্পাসে একটানা প্রোগ্রাম হচ্ছে। র‌্যালি, সুবর্ণজয়ন্তী কি শুরু করেছে সবাই? লাইব্রেরিতে পড়তে বসলেও দূর থেকে গানের আওয়াজ আসে। বটতলার রাস্তা দিয়ে তো অটোরিক্সা-গাড়ির শব্দে হাঁটাই যায় না। হলের সামনেও অনেক রাত পর্যন্ত দোকান খোলা থাকে। অন্যান্য হল থেকে সবাই এখানে এসে জড়ো হয়। ক্যাম্পাসে কোথাও একটু নিরিবিলি বসার জায়গা নাই। ’
ফজিলাতুন্নেসা হলের আবাসিক শিক্ষার্থী মরিয়ম জান্নাত বলেন, ‘আমার হলের সামনেই যেন উৎসব বসেছে। প্রতিদিন সন্ধ্যার পর পুরো ক্যাম্পাসের সবাই এখানে এসে জড়ো হয়। র‌্যাগ অনুষ্ঠানের জন্য গানের রেওয়াজ চলে। কারো পরীক্ষা চলে কিনা এ ব্যাপারে তাদের কোনো মাথাব্যাথা নাই। আর প্রশাসনও এসব বন্ধ করতে কিছুই বলেনা।’

জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক সামি আল জাহিদ প্রীতম বলেন, ‘শীতকালে বিভিন্ন প্রোগ্রাম আয়োজন করা সুবিধাজনক। এজন্যে নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ধারাবাহিক প্রোগ্রাম হচ্ছে।

এছাড়া করোনার কারণে প্রোগ্রামের যে জট সৃষ্টি হয়েছিল তা কাটাতে অনেকগুলো বিভাগ সুবর্ণজয়ন্তীর মত বড় বড় আয়োজনগুলো করছে। তবে আমাদের খেয়াল রাখা দরকার যেন লাইব্রেরি বা মেডিকেল সেন্টারের সামনে লাউড স্পিকার ব্যবহার না করা হয়। ক্যাম্পাসে শিক্ষার পরিবেশ যেন বিনষ্ট না হয়, এজন্যে একাডেমিক ক্যালেন্ডারের সাথে সমন্বয় করে  যেকোন আয়োজন করা উচিত।’

এ ব্যাপারে উপাচার্য অধ্যাপক ড. নূরুল আলম বলেন, ‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সংস্কৃতির রাজধানী হিসেবে সমাদৃত। একটা আনন্দঘন পরিবেশে এখানে সবাই পড়াশোনা করে। তবে শব্দ দূষণের ব্যাপারটি খুবই দুঃখজনক। গভীর রাতে উচ্চশব্দে গানবাজনা করা কোনভাবেই কাম্য নয়। আমি প্রক্টর মহোদয়ের সঙ্গে কথা বলে রাতের প্রোগ্রামগুলো সীমিত করার ব্যবস্থা নেব।

এআরএস 
 

Link copied!