নিজস্ব প্রতিবেদক
আগস্ট ৩, ২০২৫, ০৬:০০ পিএম
শহিদদের স্বপ্নের নতুন দেশ গড়তে ছাত্রদের ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
রোববার বিকালে রাজধানীর শাহবাগে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের আয়োজিত ছাত্র সমাবেশে লন্ডন থেকে অনলাইনে যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তি উপলক্ষে বিএনপির মাসব্যাপী ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
তারেক রহমান বলেন, “যারা দেশের জন্য জীবন দিয়েছেন তাদের রক্তের ঋণ শোধ করতে আমাদেরই হবে। শহিদদের স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়তে ছাত্রসমাজকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “তোমাদের নিজের মেধা, মনন, জ্ঞান-বিজ্ঞানে গড়ে তুলতে হবে নিজেকে। পাশাপাশি দেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে বিএনপি মানবিক রাজনীতি, কর্মসংস্থানের রাজনীতি ও নিরাপদ দেশের রাজনীতি গড়ে তুলতে চায়।”
তারেক রহমান বলেন, “সব ছাত্রকে রাজনৈতিক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হতে হবে, তা জরুরি নয়। তবে নিজেকে যোগ্য করে গড়ে তোলা জরুরি। যোগ্য নেতৃত্ব গড়ে তোলাই প্রয়োজন, যা আগামীর বাংলাদেশ বদলে দিতে সক্ষম হবে এবং শহিদদের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন করবে।”
তিনি দেড় দশকের ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে হাজার হাজার নেতাকর্মীর শিকারে পড়া ও জেল-জুলুমের স্মরণ করেন। তিনি বলেন, “জুলাই অভ্যুত্থানে চট্টগ্রামের ছাত্রদল নেতা ওয়াসিমসহ অনেকে নিহত হয়েছেন, দুই হাজারের বেশি আহত হয়েছেন। তাদের প্রতি আমার শ্রদ্ধা ও দোয়া।”
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, “লাখো মানুষের সমাবেশ ও লাখো ছাত্রের অংশগ্রহণ প্রমাণ করে তোমরা সাহসিকতার সঙ্গে এগিয়ে গেলে জনগণ তোমাদের সঙ্গে থাকবে। জনগণই বিএনপির ক্ষমতার উৎস।”
তিনি আরও বলেন, “৭১ সালের স্বাধীনতা অর্জনের যুদ্ধ ও ২৪ সালের স্বাধীনতা রক্ষার যুদ্ধে শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই। দেশ চায় প্রতিহিংসার রাজনীতি নয়, গুণগত পরিবর্তনের রাজনীতি।”
তারেক রহমান তারুণ্য ও নারী শক্তিকে রাজনীতির মূল চালিকাশক্তি হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, “তথ্য প্রযুক্তির যুগে সবার জন্য সম্ভাবনার দুয়ার উন্মুক্ত। আমরা কৃত্রিম বাস্তবসম্মত ভিশন তৈরি করছি, সবাইকে তথ্যপ্রযুক্তি ও কারিগরি শিক্ষায় দক্ষ হতে হবে।”
তিনি বলেন, “তোমরাই ভবিষ্যতে দেশ গড়ে তুলবে, এজন্য নিজেদের যোগ্য করে গড়ে তুলতে হবে। নিজেকে যোগ্য করতে একাধিক ভাষা শিখতে হবে। বিএনপি তরুণদের একাধিক ভাষা শেখার সুযোগ তৈরি করতে চায়। বিশেষ করে ইংরেজির ওপর জোর দেওয়া হবে।”
বিকেল সোয়া ৩টায় লন্ডন থেকে অনলাইনে সমাবেশে যুক্ত হন তারেক রহমান। দুপুর ৩টার দিকে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মঞ্চে উপস্থিত হন। এর আগে ছাত্রদলের নেতারা সমাবেশস্থলে উপস্থিত হন।
সমাবেশ কুরআন তিলাওয়াতের মধ্য দিয়ে শুরু হয়। শুরুতেই জুলাই শহিদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয় এবং জাতীয় সংগীত গাওয়া হয়।
ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক আমান উল্লাহ আমান স্বাগত বক্তব্য দেন। সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দীন নিহত নেতাকর্মীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
সমাবেশের আগেই সমাবেশস্থল দর্শকসঙ্কুল হয়ে ওঠে। গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিতেও নেতাকর্মীরা স্লোগান, মিছিল ও ব্যানার নিয়ে শাহবাগে সমাবেশে যোগ দেন।
নেতাকর্মীরা বাস বা পিকআপ থামিয়ে রেখে ছোট ছোট মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে প্রবেশ করেন। তাদের অধিকাংশের মাথায় ব্যান্ড, হাতে জাতীয় পতাকা ও ছাত্রদলের পতাকা ছিল। তারা স্লোগান দেন– ‘তারেক রহমান বীরের বেশে, আসবে ফিরে বাংলাদেশে’, ‘জিয়ার সৈনিক এক হও’, ‘স্বৈরাচার নিপাত যাক’, ‘খালেদা জিয়া ভয় নাই’ প্রভৃতি।
ইএইচ