নিজস্ব প্রতিবেদক
জুলাই ১৩, ২০২৪, ০৮:০১ পিএম
নিজস্ব প্রতিবেদক
জুলাই ১৩, ২০২৪, ০৮:০১ পিএম
চলতি বছরের গত ৬ মাসে অর্থাৎ জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন স্থান সড়ক দুর্ঘটনায় ৬১১ শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। আর ২০১৯ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত ৫ বছরে ৫ হাজার ৮ জনের মৃত্যু হয়। এর মধ্যে প্রায় ৫০ শতাংশই মারা গেছে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায়। সড়ক দুর্ঘটনায় যেসব শিক্ষার্থী মারা গেছেন তাদের ৫৩ শতাংশ কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে অধ্যায়নরত ছিলেন।
সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে কাজ করা সংগঠন বাংলাদেশ রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। শনিবার (১৩ জুলাই) রাজধানীর ধানমন্ডিতে অবস্থিত সংগঠনটির কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সড়ক দুর্ঘটনায় শিক্ষার্থী নিহতের মাত্রা খুবই উদ্বেগজনক। ২০১৯ থেকে ২০২৪ সালের জুন মাস পর্যন্ত সাড়ে ৫ বছরে সড়ক দুর্ঘটনায় ৫ হাজার ৬১৯ জন শিক্ষার্থী নিহত হয়েছে। যা মোট নিহতের ১৬ দশমিক ২৯ শতাংশ। একই সময়ে মোট নিহত হয়েছে ৩৪ হাজার ৪৭৮ জন। আর আঞ্চলিক সড়কগুলোতেই দুর্ঘটনা ঘটেছে সবচেয়ে বেশি।
সড়ক দুর্ঘটনায় শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনা পর্যবেক্ষণ ও পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, ৫ থেকে ১৭ বছর বয়সী স্কুল ও মাদরাসার শিক্ষার্থী নিহত হয়েছে ২ হাজার ৬৪১ জন, যা মোট নিহত শিক্ষার্থীর ৪৭ শতাংশ। ১৮ থেকে ২৫ বছর বয়সী কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নিহত হয়েছে ২ হাজার ৯৭৮ জন। যা মোট নিহত শিক্ষার্থীর ৫৩ শতাংশ।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের গবেষণা অনুযায়ী, মোটরসাইকেলের চালক ও আরোহী হিসেবে নিহত হয়েছে ২ হাজার ৭৮৩ শিক্ষার্থী। দুর্ঘটনায় নিহত মোট শিক্ষার্থীর এটি প্রায় অর্ধেক। আর শিক্ষার্থীরা পথচারী হিসেবে যানবাহনের চাপা বা ধাক্কায় নিহত হয়েছে ১ হাজার ৫৩৪ জন। যানবাহনের যাত্রী হিসেবে নিহত হয়েছে ৭২১ জন। আবার বাইসাইকেল আরোহী হিসেবে নিহত হয়েছে ৪৯৭ জন। অটোরিকশার চাকায় ওড়না বা পোশাক পেঁচিয়ে ৮৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।
সড়কে শিক্ষার্থী নিহতের কারণ প্রসঙ্গে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ত্রুটিপূর্ণ সড়ক এবং অনিরাপদ যানবাহন, নিরাপদে সড়ক ব্যবহার বিষয়ে জ্ঞানের অভাব, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সড়ক নিরাপত্তা বিষয়ে মোটিভেশনাল প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা না থাকা, সড়ক নিরাপত্তা বিষয়ে গণমাধ্যমে সচেতনতামূলক প্রচারণা না থাকা, শিক্ষার্থীদের মধ্যে বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানোর মানসিকতা, ট্রাফিক আইন না জানা ও না মানার প্রবণতা এবং অসুস্থ রাজনৈতিক সংস্কৃতি উল্লেখযোগ্য।
এছাড়া, সড়কে এসব দুর্ঘটনা কমাতে ওই প্রতিবেদনে ৭টি সুপারিশ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে- শিক্ষ প্রতিষ্ঠানে সড়ক নিরাপত্তা বিষয়ে বছরে একবার ক্যাম্পেইনের আয়োজন করা; সরকারি উদ্যোগে শিক্ষকদের সড়ক নিরাপত্তামূলক প্রশিক্ষণ দেওয়া; ক্লাস পরীক্ষায় সড়ক নিরাপত্তা বিষয়ক প্রশ্ন রাখা; অনিরাপদ যানবাহন বন্ধ করা এবং কোনোভাবেই যেন অপ্রাপ্ত বয়স্করা মোটরসাইকেল চালাতে না পারে সেজন্য আইনের কঠোর প্রয়োগ নিশ্চিত করা অন্যতম।
আরএস