Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ৩০ মে, ২০২৫,

শান্তির পথে গর্বের ৩৭ বছর: জাতিসংঘ শান্তিমিশনে সেরা বাংলাদেশ

আমার সংবাদ ডেস্ক

আমার সংবাদ ডেস্ক

মে ২৯, ২০২৫, ১১:৪১ এএম


শান্তির পথে গর্বের ৩৭ বছর: জাতিসংঘ শান্তিমিশনে সেরা বাংলাদেশ

বিশ্ব শান্তিরক্ষায় জাতিসংঘ মিশনে বাংলাদেশ দীর্ঘ সময় ধরে যে নেতৃত্বের ভূমিকা পালন করে আসছে, তা এক গর্বিত ইতিহাসে পরিণত হয়েছে। ১৯৮৮ সালে ইরান-ইরাক যুদ্ধে সামরিক পর্যবেক্ষক হিসেবে যাত্রা শুরুর পর গত ৩৭ বছরে শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশ বিশ্বের সর্বোচ্চ অবদানকারী দেশগুলোর অন্যতম হয়ে উঠেছে।

জাতিসংঘের সর্বশেষ তথ্যমতে, চলতি বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মিশনে শান্তিরক্ষী প্রেরণের দিক থেকে বাংলাদেশ রয়েছে তৃতীয় অবস্থানে। এ সময় বাংলাদেশ মিশনে ৫ হাজার ২৩০ জন শান্তিরক্ষী নিয়োজিত রেখেছে, যার মধ্যে ৪৪৭ জন নারী। প্রথম স্থানে রয়েছে নেপাল (৫,৩৫০ জন) এবং দ্বিতীয় স্থানে রুয়ান্ডা (৫,২৩৭ জন)।

আইএসপিআরের তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ ৬৩টি মিশনে অংশ নিয়েছে। এসব মিশনে দায়িত্ব পালন করেছেন মোট ২ লাখ ৫৮ জন শান্তিরক্ষী, যার মধ্যে ৩,৬৪৫ জন নারী। দুঃখজনকভাবে এ পর্যন্ত ১৬৮ জন শান্তিরক্ষী দায়িত্ব পালনকালে শহিদ হয়েছেন, আহত হয়েছেন ২৭২ জন।
এ বছর দুই আহত শান্তিরক্ষীকে জাতিসংঘের পক্ষ থেকে সম্মাননা জানানো হচ্ছে।

নৌবাহিনী: ২০১০ সালে প্রথমবারের মতো যুদ্ধজাহাজ পাঠানোর মাধ্যমে নৌবাহিনীর অংশগ্রহণ শুরু হয়। বর্তমানে জাহাজ ‘সংগ্রাম’ ভূমধ্যসাগরে লেবাননে জাতিসংঘের মেরিটাইম টাস্কফোর্সে দায়িত্ব পালন করছে। দক্ষিণ সুদানে স্পেশাল ফোর্সের কন্টিনজেন্ট কাজ করছে ২০১৫ সাল থেকে।

বিমানবাহিনী: কঙ্গোতে (DR Congo) ৬টি হেলিকপ্টার, সি-১৩০ পরিবহন বিমান এবং সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকে ৩টি হেলিকপ্টারসহ ইউনিট নিয়োজিত রয়েছে।

পুলিশ: এখন পর্যন্ত ২১,৮১৫ জন পুলিশ সদস্য শান্তিরক্ষা মিশনে দায়িত্ব পালন করেছেন, যার মধ্যে নারী ১,৯২৭ জন। বর্তমানে ১৯৯ জন পুলিশ সদস্য (নারী ৭১ জন) মিশনে কর্মরত।

আজ ২৯ মে, আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস। বাংলাদেশের গৌরবময় ভূমিকা স্মরণে রাষ্ট্রীয়ভাবে পালন করা হচ্ছে নানা কর্মসূচি।

সকালে ‘শান্তিরক্ষী দৌড়-র‌্যালি ২০২৫’ দিয়ে দিবসের সূচনা হয়, যেখানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লে. জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
এরপর বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে আহত শান্তিরক্ষীদের সংবর্ধনা ও জাতিসংঘ মিশনের ওপর বিশেষ উপস্থাপনা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।

উপস্থিত ছিলেন সরকারের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য, কূটনৈতিক প্রতিনিধি, জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী, বাহিনীর প্রধান ও বিভিন্ন গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শান্তিরক্ষী পাঠানো শুধু কূটনৈতিক সাফল্য নয়, এটি বাংলাদেশের সামরিক সক্ষমতা, পেশাদারিত্ব ও আন্তর্জাতিক দায়িত্বশীলতার প্রতীক। জাতিসংঘে এ ভূমিকা বাংলাদেশকে একটি মারাত্মক সহিংসতা-পীড়িত বিশ্বে আশার প্রতীক হিসেবে তুলে ধরেছে।

দিবসটি উপলক্ষে জাতীয় দৈনিকগুলোতে বিশেষ ক্রোড়পত্র, বিটিভি ও বেসরকারি চ্যানেলে টক শো এবং প্রামাণ্যচিত্র সম্প্রচারিত হচ্ছে।

বিআরইউ

Link copied!