ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা রবিবার, ০৩ আগস্ট, ২০২৫
Amar Sangbad

স্মার্ট সিটিজেন তৈরির সূচনা হোক প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকেই

মো. মাসুম বিল্লাহ

ডিসেম্বর ১৪, ২০২৩, ০৭:১৩ পিএম

স্মার্ট সিটিজেন তৈরির সূচনা হোক প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকেই

অপ্রতিরোধ্য উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশের পরবর্তী জংশন, স্মার্ট বাংলাদেশ। স্মার্ট নাগরিক, স্মার্ট অর্থনীতি, স্মার্ট সরকার, স্মার্ট সমাজ এ চারটি স্তম্ভের প্রথমটিই হচ্ছে স্মার্ট নাগরিক। ইতোমধ্যে ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়িত হওয়ায় ডিজিটাল বাংলাদেশকে ম্মার্ট বাংলাদেশে রূপান্তরের সমন্বিত ও পরিকল্পিত রূপকল্পই হচ্ছে স্মার্ট বাংলাদেশ। ডিজিটাল প্রযুক্তিই হবে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে অন্যতম হাতিয়ার এবং স্মার্ট নাগরিক, স্মার্ট অর্থনীতি, স্মার্ট সরকার এবং স্মার্ট সমাজের জন্য চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সাথে খাপ খাইয়ে সর্বক্ষেত্রে ডিজিটাল সংযোগ স্থাপন এর মূল ভিত্তি হিসেবে কাজ করবে। ১২ ডিসেম্বর, ২০২২ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবস উদযাপন উপলক্ষে ঘোষণা দেন ‘আমরা আগামী ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে তুলব এবং বাংলাদেশ হবে ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশ।’ ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়নের জাতীয় টাস্কফোর্সের প্রথম সভা ৩ আগস্ট ২০২৩ অনুষ্ঠিত হওয়ার মাধ্যমে এর কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

২. আর্থ সামাজিক উন্নয়নের প্রতিটি সূচকে টেকসই উন্নয়নই হলো স্মার্টনেস। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার চারটি স্তম্ভের প্রথমটিই হলো স্মার্ট নাগরিক। একটি মানবশিশু পরিবারের গণ্ডির বাইরে আদর্শ নাগরিক হিসেবে গড়ে উঠার প্রাতিষ্ঠানিক প্রক্রিয়া শুরু হয় প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে। তাই স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার জন্য স্মার্ট নাগরিক গড়ে তুলতে হবে যার কেন্দ্রবিন্দু হবে প্রাথমিক বিদ্যালয়। প্রতিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্মার্ট অবকাঠামো, স্মার্ট কারিকুলাম, স্মার্ট শিক্ষক ও স্মার্ট শিক্ষক প্রশিক্ষণ, স্মার্ট শিখন-শেখানো কার্যক্রম, স্মার্ট পরিবেশ এগুলোর মাধ্যমেই তৈরি হবে স্মার্ট নাগরিক। স্মার্ট নাগরিক কেমন হবে? প্রযুক্তির সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করে সমস্যা সমাধানে প্রস্তুত এবং দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় শাণিত মানবিক মূল্যবোধ সম্পন্ন নাগরিকই হবে স্মার্ট নাগরিক। এ লক্ষ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ সরকার নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। বর্তমানে সরকারের ডিজিটাল কর্মপরিকল্পনার একটি উল্লেখযোগ্য অংশজুড়ে রয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা। ইনফো সরকারসহ ইন্টারনেট সংযোগের নানামুখী কর্মপরিকল্পনার মাধ্যমে প্রতিটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পৌঁছে গেছে ইন্টারনেট ও ওয়াইফাই সংযোগ। প্রায় প্রতিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ইন্টারনেট-ওয়াইফাই সংযোগের পাশাপাশি স্থাপন করা হয়েছে মাল্টিমিডিয়া শ্রেণিকক্ষ, সরবরাহ করা হয়েছে ল্যাপটপ, মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর, স্মার্ট বোর্ড এবং ইন্টারএকটিভ ফ্লাট প্যানেল। আকর্ষণীয় প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণিকক্ষ তৈরিসহ দুই বছর মেয়াদি প্রাক প্রাথমিক শিক্ষার প্রবর্তন করা হয়েছে। গতানুগতিক শিখন-শেখানো কার্যক্রমকে শিক্ষার্থীকেন্দ্রিক আনন্দময় শিক্ষায় রূপান্তর করা হয়েছে। প্রাক-প্রাথমিকে প্লে-বেজড লার্নিংসহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সমূহকে শিক্ষার্থীদের জন্য আকর্ষণীয় ও চাহিদাভিত্তিক করে গড়ে তোলার কার্যক্রম অব্যাহত আছে। জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা ২০২১ এর আলোকে রূপান্তরিত শিক্ষা কার্যক্রমে ২০২৪ সালে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির বই তৈরির মাধ্যমে প্রাথমিক পর্যায়ে নতুন কারিকুলামের প্রবর্তন সম্পন্ন হবে। এর সাথে সাযুজ্যতা রক্ষা করে শিক্ষকগণকে দক্ষ, যোগ্য ও চাহিদাভিত্তিক মেন্টর, লিডার ও গাইড হিসেবে গড়ে তোলার জন্য প্রাথমিক শিক্ষা-প্রশিক্ষণকে ঢেলে সাজানো হয়েছে। ডিপিএডের পরিবর্তে প্রশিক্ষণ মোডে চাহিদাভিত্তিক যুগোপযোগী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জন্য ১০ মাস মেয়াদি সম্পূর্ণ পরিমার্জিত মৌলিক প্রশিক্ষণ  কার্যক্রম ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। এ ছাড়া ক্ষেত্রভিত্তিক ও বিভিন্ন ধরনের চাহিদাভিত্তিক স্বল্পমেয়াদি কর্মকালীন ধারাবাহিক প্রশিক্ষণ ও বিশেষায়িত অগ্রসর প্রশিক্ষণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

৩. সর্বাধুনিক প্রযুক্তির সাথে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিশুটিও যেন উদ্ভাবনী মানষিকতা-সম্পন্ন হয় এবং নিজের মধ্যে অন্তর্নিহিত প্রতিভাকে যেন বিকশিত করার সুযোগ পায় এবং মানবিক গুণাবলি সম্পন্ন নাগরিক হয় সে জন্য শিখন-শেখানো পদ্ধতিকে করা হয়েছে কার্যকর ও যুগোপযোগী। শিক্ষকদের নিজেদের মধ্যে নলেজ শেয়ারিংয়ের জন্য শিক্ষক বাতায়নের যে প্লাটফর্মটি তৈরি করা হয়েছে তা অভাবনীয় ভূমিকা রাখছে। আধুনিক প্রযুক্তি-নির্ভর শিখন-শেখানো কার্যক্রম গ্রহণ আর ইংরেজি মাধ্যম স্কুল বা কিন্ডারগার্টেন স্কুলের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই; বরং ছড়িয়ে পড়েছে গ্রামবাংলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে।

৪. করোনা মহামারিকালে সমগ্র বিশ্ব যখন স্থবির তখনো ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহার করে আমাদের শিশুদের কলকাকলিতে মুখর ছিল অনলাইন শিক্ষাঙ্গন। প্রাথমিক শিক্ষা পাঠ ‘ঘরে বসে শিখি’ এবং ‘অনলাইন স্কুল’ পরিচালনাসহ দূরশিক্ষণের নতুন ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে। বর্তমানে প্রাথমিক শিক্ষায় আরো একধাপ এগিয়ে দুর্যোগকালীন সময়ে মৌলিক প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে নেয়ার উদ্দেশে একাধিক প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে এবং শিক্ষকদেরকে প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। একীভূত শিক্ষা নিশ্চিত করা, প্রতিবন্ধী শিশুদেরকে মূল স্রোতধারায় সম্পৃক্ত করার লক্ষ্যে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। প্রাথমিক শিক্ষার প্রতিটি পর্যায়কে আনা হচ্ছে স্মার্ট শিক্ষাব্যবস্থায়। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে দেশের সামগ্রিক প্রাথমিক শিক্ষাসংক্রান্ত কার্যক্রমের একটি সমন্বিত প্ল্যাটফর্ম ‘ওয়ান স্মার্ট প্ল্যাটফর্ম, অল ডিজিটাল সার্ভিস’ বাস্তবায়ন করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। তৈরি করা হয়েছে Integrated Primary Education Management Information Szstem ev IPEMIS। 

সারা দেশের ৬৫ হাজার ৫৬৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ প্রাথমিক পর্যায়ের বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সমূহের প্রয়োজনীয় তথ্য সংরক্ষণ ও সমন্বিত সেবা প্রদানের সুযোগ সৃষ্টি করা হয়েছে। সব সরকারি-বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রয়োজনীয় তথ্যসহ মৌলিক পরিসংখ্যানের তথ্য, শিক্ষকদের অনলাইনভিত্তিক বদলি ব্যবস্থাপনার জন্য প্রয়োজনীয় সব তথ্যাদি একটি স্মার্ট প্ল্যাটফর্মে সমন্বিত করা হয়েছে। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বাইরে থাকা ৪০ হাজারেরও অধিক বেসরকারি প্রাথমিক পর্যায়ের প্রতিষ্ঠানকে একটি সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ও তত্ত্বাবধানের আওতায় আনার জন্য বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নিবন্ধন বিধিমালা, ২০২৩ জারি করা হয়েছে। ইতোমধ্যে দীর্ঘ প্রতিক্ষিত প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর কর্মচারী নিয়োগ বিধিমালা-২০২৩ জারি করা হয়েছে। প্রাথমিক শিক্ষায় প্রশিক্ষণ রিসোর্স পুল গঠন ও ব্যবস্থাপনা নির্দেশিকা-২০২৩, বিদ্যালয় পর্যায়ে উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন নির্দেশিকা-২০২৩, সমন্বিত অনলাইন বদলি নির্দেশিকা ২০২৩, প্রাথমিক শিক্ষা উপবৃত্তি কার্যক্রম বাস্তবায়ন নির্দেশিকা (সংশোধিত-২০২৩), পরিমার্জিত ডিপিএড (প্রাথমিক শিক্ষকদের জন্য মৌলিক প্রশিক্ষণ, BTPT) বাস্তবায়ন ও মূল্যায়ন নির্দেশিকা-২০২৩, নেপ গবেষণা নির্দেশিকা-২০২৩, প্রাথমিক শিক্ষা পদক নীতিমালা-২০২৩, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নামকরণ ও বিদ্যমান নাম পরিবর্তন নীতিমালা-২০২৩ সহ সম্প্রতি শিক্ষক কল্যাণ ট্রাস্ট আইন-২০২৩ জারি করা হয়েছে যা প্রাথমিক শিক্ষাকে কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় পৌঁছানোর জন্য ইতিবাচক ভূমিকা রাখছে। অনলাইন শিক্ষক বদলি ব্যবস্থাপনা ও শিক্ষক কল্যাণ ট্রাস্ট আইন প্রণয়নের ফলে শিক্ষকদের মধ্যে কর্মস্পৃহা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং তারা দীর্ঘ দিনের হয়রানি থেকে মুক্তি পেয়েছে। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর-২০২৩ সালে সর্বোচ্চ স্বচ্ছতার সাথে সর্বোচ্চ সংখ্যক ৩৭ হাজার ৫৭৪ জন সহকারী শিক্ষক নিয়োগের ফলে একদিকে যেমন মেধাবী শিক্ষকরা এ পরিবারে যুক্ত হয়েছে, তেমনি দীর্ঘ দিনের শিক্ষক শূন্যতা দূর হয়েছে। পরিমার্জিত যুগোপযোগী ১০ মাস মেয়াদি বাধ্যতামূলক মৌলিক প্রশিক্ষণের কারণে দক্ষ মেন্টর হিসেবে শিক্ষকদেরকে গড়ে তোলার অপূর্ব সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।

৫. ১ জানুয়ারি কোমলমতি শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই প্রদান, উপবৃত্তি প্রদান, স্কুল মিল কর্মসূচি চালু, স্মার্ট ক্লাসরুম ও স্মার্ট শিখন-শেখানো কার্যক্রম চালু, আকর্ষণীয় প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা চালু করার কারণে ঝরেপড়া হ্রাসসহ  প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নেট ও গ্রস এনরোলমেন্ট বৃদ্ধি পেয়েছে। ‘প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের জন্য প্রোফাইল প্রণয়ন’ প্রকল্পের আওতায় প্রাথমিক পর্যায়ের সল সরকারি-বেসরকারি স্কুলের শিক্ষার্থীদের ইউনিক আইডি নম্বর দেয়া হচ্ছে যা পর্যায়ক্রমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে এনআইডিতে রূপান্তারিত হবে। বর্তমানে চলমান পিইডিপি-৪ কর্মসূচির আওতায় ইতোমধ্যে প্রায় ৮০ শতাংশ স্কুলে নতুন অবকাঠামো ও ওয়াশব্লক তৈরি করা হয়েছে। ঢাকা শহরের বর্তমান ৩৪২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রত্যেকটিকে আলাদা আলাদা নান্দনিক স্থাপত্য নকশায় নতুনভাবে সাজানোর কার্যক্রমসহ উত্তরা ও পূর্বাচলে ১৪টি আন্তর্জাতিক মানের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপনের কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হচ্ছে যা ২০২৪ সালের মধ্যে সম্পন্ন করা যাবে বলে আশা করা যায়।

৬. উন্নত বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে, ডিজিটাল লার্নিং মেটারিয়েল প্রদান, শিশুদেরকে আত্মপ্রত্যয়ী ও আত্মনির্ভরশীল করে গড়ে তোলার জন্য কাব-স্কাউটিং কার্যক্রম সম্প্রসারণের ব্যাপক উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। শিক্ষকদের বাধ্যতামূলক মৌলিক প্রশিক্ষণে কাব-স্কাউটিং বেসিক কোর্সকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে যাতে করে সব শিক্ষক ও শিক্ষার্থী পর্যায়ক্রমে কাব-স্কাউটিং প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত-ধারণাপ্রাপ্ত হয়। এ ছাড়া উন্নত বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে শিখন-সহায়ক সামগ্রি প্রদান, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ‘ফিউচার ল্যাব’ স্থাপন, শিক্ষক নির্দেশিকা প্রদান, ডিজিটাল লার্নিং মেটারিয়াল প্রদানসহ কার্যকর ধারাবাহিক মূল্যায়নের লক্ষ্যে অ্যাপস তৈরির ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে যা সামনের দিনগুলোতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। জাতীয় শিক্ষা পদক নীতিমালার আওতায় খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড এবং সহপাঠ্যক্রম কর্মসূচিকে গুরুত্ব দিয়ে বার্ষিক কর্মকাণ্ডের অংশ করা হয়েছে। বঙ্গমাতা ও বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপসহ এ ধরনের কর্মসূচির মাধ্যমে সরকারি প্রাথমিক স্কুল থেকেই খ্যাতনামা খেলোয়াড়, শিল্পী ও সাংস্কৃতিক কর্মী সৃষ্টি করা হচ্ছে। 

হালনাগাদ নীতিমালার কারণে স্থানীয় সুধীজন ও স্থানিক পর্যায়ের বিদুৎসাহী লোকজনের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাথে সম্পৃক্ততা আগের চেয়ে বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রাথমিক স্কুল পর্যায়ে ক্ষুদে ডাক্তার কর্মসূচি, পুষ্টি কর্নার স্থাপন, সততা স্টোর, প্লেয়িং কর্নার, ডিজিটাল ল্যাব, স্মার্ট শ্রেণিকক্ষ তৈরি কার্যক্রমগুলো আগামী দিনে স্মার্ট সিটিজেন তৈরিতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। এ ছাড়া, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নতুনভাবে সঙ্গীত ও শারীরিক শিক্ষার শিক্ষকের পদ সৃজন চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। প্রতিটি বিদ্যালয়ের সামগ্রিক তথ্য উপাত্ত সংরক্ষণসহ স্থানীয় ও কেন্দ্রীয়ভাবে ডিজিটাল মনিটরিংয়ের যে সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে তা সামনের দিনগুলোতে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। ২০১৩ সালে ২৬ হাজার ১৯৩টি স্কুল জাতীয়করণের ফলে স্কুলের আওতা বহির্ভূত এলাকা নেই বললেই বলা চলে। এ ছাড়া কর্মজীবী ও পিছিয়ে থাকা শিশুদের জন্য আরো ২০৪টি শিশুকল্যাণ ট্রাস্ট স্কুল পরিচালনাসহ উপ-আনুষ্ঠানিক শিক্ষা দেয়ার জন্য বাংলাদেশের প্রত্যেক জেলায় উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর লার্নিং সেন্টারসমূহের মাধ্যমে ঝরেপড়া শিশুদের মধ্যে স্বাক্ষরতা বিস্তার কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। বর্তমানে আকর্ষণীয় স্কুল ভবন, স্কুল প্রাঙ্গণ, আধুনিক শিক্ষা উপকরণ, দক্ষ প্রশিক্ষিত শিক্ষক, শিখন-শিখানো কার্যক্রমে ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার এবং রূপান্তরিক ও যুগোপযোগী কারিকুলাম কোমলমতি শিক্ষার্থীদের যেমন স্কুলের প্রতি আকৃষ্ট করছে; তেমনি তাদের জানার আগ্রহকে বাড়িয়ে দিচ্ছে বহুগুণ। প্রতিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রতিটি উপকরণ যেন হয় শিক্ষার উপকরণ এমন ভাবনা থেকে আধুনিক তথ্য প্রযুক্তির মেলবন্ধন ঘটিয়ে কাজ করে যাচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষা সংশ্লিষ্ট সবাই; আসলে এটিই স্মার্টনেস।

৭. শিক্ষকদের স্মার্ট করে তোলা, স্মার্ট শ্রেণিকক্ষ তৈরি করা, শিখন-শেখানো কার্যক্রমকে স্মার্ট করাসহ এ সব কর্মসূচির উদ্দেশ্যই হচ্ছে সময়োপযোগী দক্ষ, যোগ্য, প্রযুক্তিজ্ঞানসম্পন্ন ও মানবিক গুণসম্পন্ন দেশপ্রেমিক স্মার্ট নাগরিক সৃষ্টি। প্রযুক্তির সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করে সমস্যা সমাধানে সক্ষম মানবিক গুণসম্পন্ন দেশপ্রেমিক নাগরিকই হবে স্মার্ট নাগরিক; যার আতুরঘর হিসেবে আবির্ভূত হবে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো। আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস, সবার সহযোগিতায় স্মার্ট বাংলাদেশের স্মার্ট সিটিজেন তৈরির সূচনাই হবে প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে।    

লেখক : সচিব, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়
 

Link copied!