আমার সংবাদ ডেস্ক
জুন ১, ২০২৫, ০৪:৩২ পিএম
আমার সংবাদ ডেস্ক
জুন ১, ২০২৫, ০৪:৩২ পিএম
ঈদুল আযহা শুধু একটি উৎসব নয়, এটি মুসলমানদের জন্য ত্যাগ, আত্মসমর্পণ ও খোদাভীতির এক মহা শিক্ষা। কোরবানি এই ঈদের মূল অনুষঙ্গ। তবে প্রশ্ন হচ্ছে—কোরবানি কি সবার জন্য বাধ্যতামূলক? কিংবা কোরবানি আদায়ের নির্দিষ্ট সময় কোনটি?
ইসলামি বিধান অনুযায়ী, কোরবানি ওয়াজিব বা ফরজ নয়, বরং তা নির্দিষ্ট শর্ত পূরণকারীদের জন্য ওয়াজিব, অর্থাৎ অবশ্য পালনীয়।
কোরবানির নির্দিষ্ট সময় হলো হিজরি বর্ষের ১০, ১১ ও ১২ জিলহজ—এই তিন দিন। ঈদুল আযহার নামাজ আদায়ের পর থেকে শুরু হয় কোরবানির সময়। এই সময়ের আগে কিংবা পরে কোরবানি করলে তা গ্রহণযোগ্য হয় না।
কাদের ওপর কোরবানি ওয়াজিব?
ইসলামের দৃষ্টিতে, যাদের মধ্যে নিচের চারটি শর্ত পূর্ণ হয়, তাদের ওপর কোরবানি ওয়াজিব হয়—
১. মুসলমান হতে হবে
২. বয়ঃপ্রাপ্ত (সাবালক) হতে হবে
৩. মুকীম (অর্থাৎ মুসাফির নয়)
৪. নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হতে হবে ।
যার কাছে ঈদের দিন ওয়াক্তের সময়ে প্রয়োজনের অতিরিক্ত প্রায় ৭.৫ তোলা স্বর্ণ বা ৫২.৫ তোলা রূপা বা সমমূল্যের সম্পদ থাকে নারী-পুরুষ উভয়েই এই শর্তে পড়লে তাদের ওপর কোরবানি ওয়াজিব হয়।
কোরবানির মূল শিক্ষা রয়েছে হজরত ইব্রাহিম (আ.) ও তাঁর পুত্র হজরত ইসমাঈল (আ.)-এর ঐতিহাসিক আত্মত্যাগের গল্পে। আল্লাহর আদেশ পালনে ইব্রাহিম (আ.) যখন পুত্রকে কোরবানি করতে উদ্যত হন, তখনই মহান আল্লাহ তাঁর আনুগত্যে সন্তুষ্ট হয়ে পশু কোরবানির বিধান দেন। সেই স্মৃতিতেই এই ইবাদত প্রতিষ্ঠিত।
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘কোরবানির দিনে আল্লাহর কাছে সবচেয়ে প্রিয় কাজ হলো কোরবানি। কিয়ামতের দিন সেই পশু তার শিং, খুর ও পশমসহ উপস্থিত হবে। রক্ত মাটিতে পড়ার আগেই তা আল্লাহর দরবারে পৌঁছে যায়।’ (তিরমিজি)।
প্রসঙ্গত, ঈদুল আযহা কেবল উৎসবের দিন নয়—এটি এক আত্মিক প্রস্তুতির সময়, যেখানে একজন মুসলমান নিজেকে আল্লাহর পথে উৎস্বর্গ করে দিতে শিখে। কোরবানি যেন শুধু রক্ত ঝরানোর আনুষ্ঠানিকতা না হয়ে দাঁড়ায়; বরং তা যেন হয় আত্মত্যাগের জীবন্ত প্রকাশ।
বিআরইউ