আমার সংবাদ ডেস্ক:
জুন ৫, ২০২৫, ০৪:৩২ পিএম
আমার সংবাদ ডেস্ক:
জুন ৫, ২০২৫, ০৪:৩২ পিএম
কোরবানির পশু জবাই শুধু একটি আনুষ্ঠানিক ইবাদত নয়, বরং তা আত্মিক প্রশান্তি ও সুন্নাত পালনের গুরুত্বপূর্ণ দিক। রাসুলুল্লাহ (সা.) নিজ হাতে কোরবানি করেছেন—এ হাদিসের আলোকে আলেমরা বলেন, যার সামর্থ্য আছে, তার উচিত নিজ হাতে কোরবানির পশু জবাই করা। এতে যেমন রয়েছে সওয়াব, তেমনি আছে সাহস ও আত্মবিশ্বাস গড়ে তোলার শিক্ষা।
তবে অনেকেই কোরবানির নিয়ম না জানার কারণে নিজে জবাই করতে সাহস পান না। অথচ ইসলাম এই প্রক্রিয়াকে করেছে সহজ, করুণাময় ও মানবিক। হাদিসে স্পষ্টভাবে এসেছে, ‘তোমরা যখন জবাই করবে, উত্তমভাবে করবে। প্রত্যেকে যেন তার ছুরিকে ধার দেয়, যাতে পশুকে কষ্ট না হয়।’ (সহিহ মুসলিম: ১৯৫৫)
আসুন জেনে নিই কোরবানির সময় যেসব নিয়ম জানা জরুরি—
১. ছুরি ধার দেওয়া: পশু জবাইয়ের আগে ছুরি ভালোভাবে ধার দিতে হবে, যেন কষ্ট না পায়।
২. বিসমিল্লাহ বলা: জবাইয়ের সময় 'বিসমিল্লাহ, আল্লাহু আকবার' বলা সুন্নাত।
৩. সঠিকভাবে কাটতে হবে: খাদ্যনালি, শ্বাসনালি ও পাশে থাকা দুটি রক্তনালি কাটা হলে জবাই সম্পূর্ণ হয়।
৪. পশুকে কষ্ট নয়: এক পশুর সামনে অন্য পশুকে জবাই করা যাবে না, ছুরি ধার দেওয়াও পশুর সামনে নিষেধ।
৫. শোয়ানোর নিয়ম: পশুকে বাম পাশে শুইয়ে পা রাখতে হবে পশ্চিম দিকে, কেবলামুখী করে জবাই করা উত্তম।
সুন্নাতের প্রতি ভালোবাসা ও সচেতনতা থাকলেই নিজ হাতে কোরবানি করা কঠিন কিছু নয়। বরং এটি একজন মুসলমানের ইমানি সাহস ও ইবাদতের গভীরতা প্রকাশ করে।
পশু জবাইয়ের দোয়া—
কোরবানির পশু জবেহ করার জন্য শোয়ানোর পর দোয়া পড়া। দোয়াটি হাদিসের বিভিন্ন বর্ণনায় এসেছে। যদিও অনেকে দোয়াটির সনদের ব্যাপারে মতপার্থক্য করেছেন। তবে এ দোয়াগুলো পড়ে কোরবানি করা উত্তম। তবে কেউ শুধু বিসমিল্লাহ বলে নালিগুলো কেটে দিলেই কোরবানি শুদ্ধ হয়ে যাবে। দোয়াটি হলো-
اَللَّهُمَّ إِنِّي وَجَّهْتُ وَجْهِيَ لِلَّذِي فَطَرَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ عَلَى مِلَّةِ اِبْرَاهِيْمَ حَنِيفًا وَمَا أَنَا مِنَ الْمُشْرِكِينَ - إِنَّ صَلَاتِي وَنُسُكِي وَمَحْيَايَ وَمَمَاتِي لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ - لَا شَرِيكَ لَهُ وَبِذَٰلِكَ أُمِرْتُ وَأَنَا مِنَ الْمُسْلِمِينَ - بِسْمِ اللهِ اَللهُ اِكِبَر - اَللَّهُمَّ مِنْكَ وَ لَكَ
বাংলা উচ্চারণ- ‘ইন্নি ওয়াঝঝাহতু ওয়াঝহিয়া লিল্লাজি ফাতারাস সামাওয়াতি ওয়াল আরদা আলা মিল্লাতি ইবরাহিমা হানিফাও ওয়া মা আনা মিনাল মুশরিকিন।
ইন্না সালাতি ওয়া নুসুকি ওয়া মাহইয়ায়া ওয়া মামাতি লিল্লাহি রাব্বিল আলামিন। লা শারিকা লাহু ওয়া বি-জালিকা উমিরতু ওয়া আনা মিনাল মুসলিমিন। বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার, আল্লাহুম্মা মিনকা ও লাকা।’
যদি কেউ এ দোয়াটি না পারেন তবে ছোট্ট এ অংশটুকু পড়বেন-
بِسْمِ اللهِ اَللهُ اِكِبَر - اَللَّهُمَّ مِنْكَ وَ لَكَ
বাংলা উচ্চারণ : ‘বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার, আল্লাহুম্মা মিনকা ওয়া লাকা।’
নিজের পশু নিজে কোরবানি করলে পশু জবেহ করার পর এ দোয়া পড়া-
اَللهُمَّ تَقَبَّلْ لَهُ مِنِّى كَمَا تَقَبَّلْتَ مِنْ حَبِيْبِكَ مَحَمّدٍ وَّ خَلِيْلِكِ اِبْرَاهِيْم
বাংলা উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা তাকাব্বালহু মিন্নি কামা তাকাব্বালতা মিন হাবিবিকা মুহাম্মাদিও ওয়া খালিলিকা ইবরাহিম।’
অন্য কেউ কোরবানি বা অন্য কারো কোরবানি করলে এ দোয়া পড়া-
اَللهُمَّ تَقَبَّلْ لَهُ مِنِكَ-مِنْكُمْ كَمَا تَقَبَّلْتَ مِنْ حَبِيْبِكَ مَحَمّدٍ وَّ خَلِيْلِكِ اِبْرَاهِيْم
বাংলা উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা তাকাব্বালহু মিনকা-মিনকুম’ কামা তাকাব্বালতা মিন হাবিবিকা মুহাম্মাদিও ওয়া খালিলিকা ইবরাহিম।’
উল্লেখ্য, যদি কেউ একাকি কোরবানি দেয় এবং নিজে জবাই করে তবে বলবে মিন্নি; আর অন্যের কোরবানির পশু জবাই করার সময় ‘মিনকা-মিনকুম’ বলে যারা কোরবানি আদায় করছে তাদের নাম বলা।
বিআরইউ