ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০৩ জুলাই, ২০২৫
Amar Sangbad
কিডনি চিকিৎসা

ব্যয়বহুল চিকিৎসায় অসহায় রোগী

সাহিদুল ইসলাম ভূঁইয়া

সাহিদুল ইসলাম ভূঁইয়া

মার্চ ১৪, ২০২৪, ০২:৪৭ এএম

ব্যয়বহুল চিকিৎসায় অসহায় রোগী
  • আজ বিশ্ব কিডনি দিবস
  • দেশে আক্রান্ত রোগী তিন কোটি ৮০ লাখ
  •  বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের তীব্র সংকট
  •  ডায়ালাইসিসের সুযোগ পাচ্ছেন ২০ শতাংশ রোগী

প্রতিদিনই বাড়ছে কিডনি রোগে আক্রান্তের সংখ্যা। চিকিৎসা সহজলভ্য করতে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও অবকাঠামো বৃদ্ধি করতে হবে

—অধ্যাপক ডা. মো. বাবরুল আলম

পরিচালক, জাতীয় কিডনি ডিজিজেস অ্যান্ড ইউরোলজি ইনস্টিটিউট

সরকারি হাসপাতালে ডায়ালাইসিস খরচ কম। কিন্তু সরকারি হাসপাতালে ডায়ালাইসিস সিডিউল পেতে দীর্ঘসময় অপেক্ষা করতে হয়। এ সময়ে রোগী মৃত্যুশয্যায় চলে যাবে। বাধ্য হয়ে নিজের সারাজীবনের সঞ্চয় ভেঙে বেসরকারি হাসপাতালে স্ত্রীর ডায়ালাইসিস করাচ্ছি। সপ্তাহে দুই দিন ডায়ালাইসিস করাতে খরচ হচ্ছে ছয় হাজার টাকা। মাসে খরচ হচ্ছে ২৪ হাজার টাকা। এ ব্যয় কতদিন বহন করতে পারব জানি না। এভাবেই নিজের অসহায়ত্বের কথা বলছিলেন পঞ্চাশোর্ধ্ব মনির হোসেন। দেশে কিডনি চিকিৎসা অপ্রতুল ও ব্যয়বহুল হওয়ায় এমন অসহায়ত্ব শুধুমাত্র মনির হোসেনের নয়। দেশের নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারের কিডনি রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নেয়া রোগী ও স্বজনদের। 

কিডনি চিকিৎসক ও কিডনি চিকিৎসকদের সংগঠন বাংলাদেশ রেনাল অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য মতে, দেশে কিডনিজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা তিন কোটি ৮০ লাখ। এর বিপরীতে দেশে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের সংখ্যা মাত্র ৪০০ জন। আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী ৫০ হাজার মানুষের জন্য একজন কিডনি বিশেষজ্ঞ থাকা প্রয়োজন। এই হিসাবে ১৭ কোটি মানুষের দেশে কিডনি বিশেষজ্ঞ প্রয়োজন তিন হাজার ৪০০। কিডনি আক্রান্ত রোগীর মধ্যে যাদের কিডনি বিকল হয় তাদের নিয়মিত ডায়ালাইসিস করতে হয়। দেশে ডায়ালাইসিস সেন্টার রয়েছে ২৫০টির কিছু বেশি। ডায়ালাইসিস সেন্টারের মধ্যে সরকারি ডায়ালাইসিস সেন্টারের সংখ্যা ৪৫টি। 

রোগী অনুপাতে দেশের ডায়ালাইসিস সেন্টারগুলোর মাধ্যমে আক্রান্ত রোগীর ২০ ভাগ রোগীকে ডায়ালাইসিস দেয়া সম্ভব। এ ডায়ালাইসিস আবার এতটাই ব্যয়বহুল যে, ৯০ ভাগ রোগীই ছয় মাসের মধ্যে চিকিৎসার খরচ বহন করতে না পেরে চিকিৎসা বন্ধ করে দেন। প্রতি ডায়ালাইসিসের জন্য সরকারি হাসপাতালের ফি সাধারণত হাজার টাকার কাছাকাছি হলেও বেসরকারি হাসপাতালে এ খরচ তিন থেকে চারগুণ বেশি। একজন রোগীকে সাধারণত সপ্তাহে দুই থেকে তিন বার ডায়ালাইসিস নিতে হয়। অন্যদিকে দেশে প্রতিবছর পাঁচ হাজার মানুষের কিডনি প্রতিস্থাপনের প্রয়োজন পড়ে। কিন্তু প্রতিস্থাপন করা সম্ভব হচ্ছে সর্বোচ্চ ৩৬৫ জনের, যা প্রয়োজনের মাত্র ৭.৩ শতাংশ। বেশির ভাগ মানুষ দেশের বাইরে গিয়ে কিডনি প্রতিস্থাপন করে। কিডনি প্রতিস্থাপনের ব্যয় সরকারি হাসপাতালে তিন থেকে চার লাখ টাকা। দেশের বাইরে কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট করাতে পাশ্ববর্তী দেশ ভারতেই খরচ হয় ১০ থেকে ১২ লাখ টাকা। দেশে কিডনি রোগের চিকিৎসার এমন সংকটের মধ্যেই বিশ্বজুড়ে মার্চ মাসের দ্বিতীয় বৃহস্পতিবার পালিত হওয়া বিশ্ব কিডনি দিবস বিভিন্ন আয়োজনে আজ বাংলাদেশেও পালিত হবে।

দেশের সর্ববৃহৎ কিডনি হাসপাতাল জাতীয় কিডনি ডিজিজেস অ্যান্ড ইউরোলজি ইনস্টিটিউট। সারাদেশ থেকে কিডনি রোগীরা এখানে আসেন সেবা নিতে। হাসপাতালটির বহির্বিভাগে প্রতিদিন ৭০০ থেকে ৮০০ রোগী সেবা নেন। ৩০০ বেডের  হাসপাতালের সবকয়টি বেডই সব সময় রোগী দিয়ে পরিপূর্ণ থাকে। হাসপাতালটিতে পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) চুক্তির আওতায় স্যানডোর ডায়ালাইসিস সার্ভিসের মাধ্যমে ডায়ালাইসিস দেয়া হচ্ছে। 

স্যানডোরের তথ্য অনুযায়ী, এই ইনস্টিটিউটে তাদের ৫৯টি ডায়ালাইসিস মেশিন আছে। এই মেশিন দিয়ে বছরে ৮৬ হাজার ১৪০টি সেশন করা যায়। প্রতিটি সেশনে সরকার ভর্তুকি দেয় দুই হাজার ৪০০ আর রোগী দেন ৫৩৫ টাকা। এর মধ্যে ১৩ হাজার সেশনে সরকার ভর্তুকি দেয়। বাকি সেশনে রোগীকেই পুরোটা বহন করতে হয়।  সে ক্ষেত্রে রোগীর খরচ পড়ে প্রতি সেশনে দুই হাজার ৯৩৫ টাকা। নতুন করে কোনো রোগী ডায়ালাইসিসে অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে না। হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীরা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ডায়ালাইসিস সুবিধা পেয়ে থাকেন। হাসপাতালটির পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. বাবরুল আলম। তার সাথে কথা হয় আমার সংবাদের এ প্রতিবেদকের। কিডনি রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধির কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে 

তিনি বলেন, ‘যাদের ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ আছে, তারা সবচেয়ে বেশি কিডনি রোগের ঝুঁকিতে থাকেন। তাছাড়া অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন, অ্যান্টিবায়োটিকের অযাচিত ব্যবহার থেকেও অনেকে কিডনি রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন।’ দেশে কিডনি রোগের চিকিৎসা সংকট নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রতিদিনই কিডনি রোগে আক্রান্ত রোগী বাড়ছে। কিডনি চিকিৎসা অন্য যে কোনো চিকিৎসার চেয়ে ব্যয়বহুল। দেশে রোগী অনুপাতে কিডনি চিকিৎসকেরও সংকট রয়েছে। কিডনি চিকিৎসা সহজলভ্য করতে প্রয়োজন দক্ষ জনবলের পাশাপাশি সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগ।

Link copied!