Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৪,

বিচারহীনতার সংস্কৃতি ঢাবি ক্যাম্পাসে

অভিযোগের তদন্ত হয় না

নিজস্ব প্রতিবেদক

নিজস্ব প্রতিবেদক

মে ১৬, ২০২৪, ১০:৫৮ পিএম


অভিযোগের তদন্ত হয় না

আন্দোলনের মাধ্যমে তদন্ত কমিটি চাপে না রাখলে অভিযোগের তদন্ত হয় না ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি)। দীর্ঘদিন ধরেই এরকম সংস্কৃতি চলে আসছে ঢাবিতে।  ধারাবাহিক আন্দোলনের কারণে মাত্র তিন মাসের কম সময়ে প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে ঢাবির গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক নাদির জুনাইদের শাস্তি হলেও কয়েকটি ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ের জন্য গঠিত তদন্ত কমিটি ছয় মাস কিংবা ছয় বছর পরও তদন্ত রিপোর্ট জমা দিতে পারেনি! ফলে বিচারহীনতার সংস্কৃতি তৈরি হয়েছে ঢাবি ক্যাম্পাসে।

ছয় বছরে শত চেষ্টা করেও তদন্ত রিপোর্ট পাননি মুহসীন হলের নির্যাতিত ছাত্র জালাল : ঐতিহাসিক কোটা সংস্কারের সময় সংবাদ প্রচার  করার কারণে ২০১৮ সালের ৪ মার্চ দিবাগত রাতে ঢাবির হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের আবাসিক ছাত্র এবং ‘জাতীয় অর্থনীতি’ পত্রিকার তৎকালীন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি জালাল আহমদকে হলের ৩৫১ নম্বর রুম থেকে মারধর করে জোরপূর্বক বের দিয়েছিলেন ছাত্রলীগ নেতা তারেক হাসান নির্ঝর এবং হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান সানীর সাঙ্গপাঙ্গরা। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়ে জালাল তার নিজের ফেসবুক আইডিতে হাইকোর্টে রিট করবেন মর্মে পোস্ট দিলে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন প্রক্টর অধ্যাপক ড. একেএম গোলাম রব্বানী তার কাছে অভিযোগ দিলে তদন্ত কমিটি গঠন করে অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন। তাই প্রক্টর অধ্যাপক গোলাম রব্বানীর কথায় বিশ্বাস করে ২০১৮ সালের ৫ মার্চ প্রক্টর অফিসে অভিযোগ দেন জালাল। প্রক্টর অফিস থেকে হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের তৎকালীন প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. নিজামুল হক ভূঁইয়ার কাছে সেই আবেদন ফরোয়ার্ড করে দেয়া হলে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটি ওই বছরের মার্চের শেষ সপ্তাহে জালালসহ ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য রেকর্ড করেছিল। তদন্ত কমিটির প্রধান হলের আবাসিক শিক্ষক অধ্যাপক একেএম ইফতেখারুল ইসলাম তদন্ত রিপোর্ট হল প্রশাসনের কাছে জমা দিয়েছেন বলে বারবার দাবি করেন। কিন্তু হল প্রশাসন বিষয়টি অস্বীকার করে। আজ পর্যন্ত বারবার লিখিতভাবে আবেদন করলেও কোনো তদন্ত রিপোর্ট পাননি ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী। এমনকি অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থাও নেয়া হয়নি। কথিত আছে, তদন্ত কমিটির প্রধান ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক একেএম ইফতেখারুল ইসলাম ছাত্রলীগের সঙ্গে যোগসাজশে জালালের তদন্ত ধামাচাপা দেয়ার বিনিময়ে ‘বঙ্গবন্ধু স্কলারশিপ’ নিয়ে এখন লন্ডনে অবস্থান করছেন। 

সম্প্রতি তিনি ছুটিতে দেশে এলে জালাল তার কাছে তদন্ত রিপোর্ট চাইলে তিনি জানান, কীসের তদন্ত রিপোর্ট? আমি এসব কিছুই জানি না!  তাই দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে তদন্ত কমিটির প্রধান একেএম ইফতেখারুল ইসলাম, হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের তৎকালীন প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মো. নিজামুল হক এবং বর্তমান প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মো. মাসুদুর রহমানসহ জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান এবং বর্তমান ভিসি অধ্যাপক ড. এএসএম মাকসুদ কামালের কাছে ডাকযোগে আবেদন করলেও এখনো ন্যায়বিচার পাননি তিনি। একাডেমিক স্বার্থে জালাল এতদিন ধরে ছাড় দিলেও অনার্সের ফলাফল সমন্বয় করার পর তিনি আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। প্রয়োজনে ন্যায়বিচার পেতে উচ্চ আদালতে রিট করবেন বলে জানান তিনি। উইমেন 

অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের নিপীড়িত ছাত্রী ছয় মাসেও পাননি তদন্ত রিপোর্ট : ঢাবির উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক অমিয় সৃজন সাম্যের বিরুদ্ধে একই বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থীকে যৌন নিপীড়ন ও প্রতারণার অভিযোগের তদন্তে  কোনো অগ্রগতি নেই ছয়-সাত মাস ধরে।

জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক অমিয় সৃজন সাম্যের বিরুদ্ধে ভুক্তভোগী এক নারী শিক্ষার্থী যৌন নিপীড়ন ও প্রতারণার প্রতিকার চেয়ে গত বছরের ৮ অক্টোবর বিভাগের চেয়ারপারসন বরাবর লিখিত অভিযোগ জমা দেন। অভিযোগপত্রে ওই শিক্ষার্থী উল্লেখ করেন, অমিয় সৃজন সাম্য তাকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সম্পর্ক শুরু করেন। পরবর্তীতে ওই সম্পর্কের ভিত্তিতে অনিচ্ছা সত্ত্বেও তাকে শারীরিক সম্পর্কে বাধ্য করেন। এ ঘটনায় অভিযোগকারী ভেঙে পড়লে অভিযুক্ত শিক্ষক বারবার বিয়ের বিষয়ে আশ্বস্ত করেন। কিন্তু পরবর্তীতে তাদের সম্পর্ক চলাকালীন সময়েই ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে অভিযুক্ত শিক্ষক গোপনে অন্য মেয়েকে বিয়ে করেন। অভিযোগকারী শিক্ষার্থী একইসঙ্গে সামাজিকবিজ্ঞান অনুষদের ডিন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য ড. মো. আখতারুজ্জামানের কাছে অভিযোগপত্রের অনুলিপি জমা দেন। 

এদিকে বিভাগের চেয়ারপারসন ড. উম্মে বুশরা ফাতেহা সুলতানার কাছে অভিযোগটি আসার পর তিনি তৎকালীন উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. আখতারুজ্জামান বরাবর অভিযোগটি ফরওয়ার্ড করে দেন। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে সামাজিকবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. জিয়া রহমানকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের একটি ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি (ঘটনা অনুসন্ধান কমিটি) গঠন করেছিলেন তৎকালীন ভিসি অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান। নবাগত উপাচার্য অধ্যাপক ড. এএসএম মাকসুদ কামাল নভেম্বরের শুরুতে দায়িত্ব গ্রহণের পর তার সঙ্গে দেখা করে বিষয়টি মৌখিকভাবে অবহিত করেন ওই নারী শিক্ষার্থী। এ বিষয়টি সামাজিকবিজ্ঞান অনুষদের ডিন তদরকি করছেন বলেও উপাচার্য ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে আশ্বস্ত করেন। 

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী জানান, ‘আমি ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে অভিযোগ করার পর দীর্ঘ সময় পার হয়ে গেলেও উল্লেখযোগ্য কোনো অগ্রগতি দেখতে পাচ্ছি না। ফ্যাক্ট চেকিংয়ের পর থেকে চলমান তদন্ত প্রক্রিয়া যেন থেমেই আছে। বিচারে বিলম্ব হওয়ার পেছনে কী কারণ থাকতে পারে— সে বিষয়ে আমি অবগত নই। দ্রুততম সময়ে আমি এই অভিযোগের সমাধান চাই।’

গত ২৩ মার্চ মারা যান সামাজিকবিজ্ঞান অনুষদের ডিন ও তদন্ত কমিটির প্রধান অধ্যাপক ড. জিয়া রহমান। মারা যাওয়ার আগে এ বিষয়ে ঘটনা অনুসন্ধান কমিটির প্রধান সামাজিকবিজ্ঞান অনুষদের ডিন ড. জিয়া রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানিয়েছিলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যেই ঘটনায় অভিযুক্ত এবং অভিযোগকারী উভয়ের বক্তব্য নিয়েছি। কমিটির এক সদস্য বিদেশে ছিলেন বিধায় তদন্ত রিপোর্ট জমা দিতে দেরি হচ্ছে।’ 

অধ্যাপক ড. জিয়া রহমানের মৃত্যুর পর সামাজিকবিজ্ঞান অনুষদের ভারপ্রাপ্ত ডিন সামাজিকবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক রাশেদা ইরশাদ নাসিরের কাছে তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ভর্তিপরীক্ষার ভাইভা বোর্ডে ব্যস্ত সময় পার করছি। ফ্রি হলে আগামী সপ্তাহে তদন্ত রিপোর্ট জমা দিতে পারব।’ বিভাগের শিক্ষার্থী উপদেষ্টা অমিয় সৃজন সাম্য কর্তৃক পক্ষপাতমূলক আচরণের বিচারের দাবিতে গত বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন এবং অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন বিভাগের কয়েকজন পুরুষ শিক্ষার্থী। তারা আরও অভিযোগ করেন, শিক্ষার্থী উপদেষ্টা অমিয় সৃজন সাম্য কর্তৃক স্বজনপ্রীতি, পক্ষপাতিত্বমূলক আচরণ বিভাগের ছেলেদের জন্য শিক্ষার পরিবেশ হুমকিজনক করে তুলেছে। তিনি ক্লাস গ্রহণে অনিয়মিত এবং শিক্ষার্থীদের ব্যাপারে উদাসীন বলেও জানা গেছে। শুধুমাত্র হাজী মুহম্মদ মুহসীন হল কিংবা উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের ঘটনাই নয়, নানামুখী তৎপরতা এবং চাপ না থাকলে এরকম শত শত ঘটনার পর গঠিত তদন্ত কমিটির অবহেলার কারণে আজ ন্যায় বিচার হারিয়ে যাচ্ছে।

ঢাবির ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক আবু বিল্লাহ একই বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক কেএম সাইফুল ইসলাম খানের বিরুদ্ধে চারটি অভিযোগ দিয়েছিলেন। কিন্তু একটি অভিযোগেরও তদন্ত হয়নি। সাবেক ভিসি অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক ভাষা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক শামীম বানুকে দিয়ে একটি অভিযোগ তদন্ত করিয়েছিলেন কিন্তু আরেফিন সিদ্দিকের বিদায়ের পরে অধ্যাপক আখতারুজ্জামান ভিসি হয়ে সেটিও চাপা দিয়ে রেখেছেন বলে অভিযোগ করেছেন অধ্যাপক আবু বিল্লাহ। ঢাবির শত শত অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের ঘটনায় তদন্ত না হলেও গণমাধ্যমকর্মীদের সোচ্চার ভূমিকা এবং ধারাবাহিক আন্দোলনের কারণে সাম্প্রতিক সময়ে কয়েকটি ঘটনায় তদন্ত কমিটি দ্রুত সময়ে তদন্ত রিপোর্ট জমা দিয়েছে।  ধারাবাহিক আন্দোলনের মুখে নাদির জুনাইদের বিরুদ্ধে তদন্ত রিপোর্ট জমা ও শাস্তি : ঢাবির গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক নাদির জুনাইদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের একনিষ্ঠ সমর্থক ছিলেন। 

২০১৭ সালের জুলাই মাসে ঢাবির সিনেটে শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচনে তৎকালীন ভিসি আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক এবং বর্তমান ভিসি ড. এএসএম মাসুদ কামাল সমর্থিত প্রার্থীদের দুটি পৃথক প্যানেল জমা দেয়া হয়। রহস্যজনক কারণে মাকসুদ কামাল সমর্থিত প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়ায় আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের বিরুদ্ধে ধারাবাহিকভাবে লেগে থাকেন অধ্যাপক মাকসুদ কামাল। এক পর্যায়ে সরকারের উচ্চপর্যায়ের আদেশে বিদায় নিতে হয়েছে অধ্যাপক আরেফিন সিদ্দিককে। ভিসির পদ থেকে বিদায় নিলেও বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিককে সঙ্গ দিতেন অধ্যাপক নাদির জুনাইদ। নাদির জুনাইদের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ তুলে একই বিভাগের এক নারী শিক্ষার্থী চলতি বছরের ১০ ফেব্রুয়ারি প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দেয়ার পর ১১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সব ধরনের একাডেমিক কার্যক্রম বর্জনের ঘোষণা দিয়ে মানববন্ধন করেন বিভাগের সব ব্যাচের শিক্ষার্থী। এতে বিভাগের কয়েকজন শিক্ষক ইন্ধন দিয়েছেন এজন্যই যে, নাদির জুনাইদ যাতে বিভাগের পরবর্তী চেয়ারম্যান পদে আসতে না পারেন। পরবর্তী সময়ে গত ১২ ফেব্রুয়ারি অধ্যাপক নাদির জুনাইদের অফিসকক্ষ ও ক্লাসরুমে তালা দেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় উপাচার্যের বাসভবনের সামনে শিক্ষার্থীরা অবস্থান নিলে আরেফিন সিদ্দিকবিরোধী বর্তমান ভিসি অধ্যাপক ড. এএসএম মাকসুদ কামাল অধ্যাপক নাদির জুনাইদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার মোক্ষম সুযোগ পেয়ে যান। ফলে অধ্যাপক নাদির জুনাইদকে তিন মাসের বাধ্যতামূলক ছুটি দেয় প্রশাসন। পাশাপাশি তদন্ত কমিটি গঠন করে দুই সপ্তাহের মধ্যে রিপোর্ট প্রদানের নির্দেশনাও দেয়া হয়। 

গত ১৮ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিকবিজ্ঞান অনুষদ ভবন প্রাঙ্গণে প্রেস ব্রিফিং করে ১০ দিনের মধ্যেই তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশের আল্টিমেটাম দিয়ে শিক্ষার্থীরা ক্লাসে ফিরে যান। এর মধ্যেই গত ২৮ ফেব্রুয়ারি অধ্যাপক নাদির জুনাইদের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ তোলেন বাংলাদেশ ইউভার্সিটি অব প্রফেশনালসের (বিইউপি) এক সাবেক শিক্ষার্থী। এ বিষয়ে ঢাবি প্রক্টরের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন তিনি।

দীর্ঘদিন ধরে তদন্তের অগ্রগতি না হওয়ায় গত ৬ মে সকালে প্রেস ব্রিফিং করে অধ্যাপক নাদির জুনাইদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ তদন্তের অগ্রগতি জানাতে বিশ্ববিদ্যালয়কে তিন দিনের আল্টিমেটাম দেন ঢাবির গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা অভিযোগ করেন, প্রশাসন অধ্যাপক নাদির জুনাইদকে বাঁচানোর চেষ্টা করছে। এর একদিন পরই ৭ মে নাদির জুনাইদকে সব ধরনের প্রশাসনিক ও একাডেমিক কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট। যৌন নিপীড়নের অভিযোগে অধ্যাপক ড. নাদির জুনাইদের সঙ্গে একই সময়ে ফলিত গণিত বিভাগের শিক্ষক মোহাম্মদ ফেরদৌসকে যৌন হয়রানি ও মানসিক নিপীড়নের অভিযোগে তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত সব প্রশাসনিক ও একাডেমিক কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট। বিষয়টি আরও অধিকতর তদন্তের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়ন প্রতিরোধ সেলে পাঠানো হয়েছে। যৌন নিপীড়ন প্রতিরোধ সেলকে তদন্ত করতে দুই মাস সময় দেয়া হয়েছে। সার্বিক বিষয়ে ঢাবির উপাচার্য মাকসুদ কামালের মন্তব্য জানতে চাইলে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে কথা বলতে চাই না। আপনি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।’
 

Link copied!