অর্থনৈতিক ডেস্ক
আগস্ট ২০, ২০২৫, ১০:৩২ পিএম
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির আলোচনায় রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে যুক্ত করার ইঙ্গিত মিলেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির আলোচনায় রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে যুক্ত করার ইঙ্গিত মিলেছে। এতে শান্তি আলোচনায় অগ্রগতির প্রত্যাশা বেড়েছে বাজারে। একই সঙ্গে বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের সরবরাহ নিয়ে উদ্বেগ কিছুটা কমেছে। এমন প্রেক্ষাপটে গতকাল দাম কমেছে পণ্যটির। খবর আনাদোলু এজেন্সি।
অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের আন্তর্জাতিক বাজার আদর্শ ব্রেন্টের দাম গতকাল দশমিক ৭৭ শতাংশ কমেছে। প্রতি ব্যারেলের মূল্য নেমেছে ৬৫ ডলার ৬৩ সেন্টে। এটি আগের দিনের সমাপনী দাম ব্যারেলপ্রতি ৬৬ ডলার ১৪ সেন্টের তুলনায় ৫১ সেন্ট কম। এ সময় মার্কিন বাজার আদর্শ ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েটের (ডব্লিউটিআই) দাম দশমিক ৭৯ শতাংশ কমে ব্যারেলপ্রতি মূল্য দাঁড়িয়েছে ৬২ ডলার ১১ সেন্টে।
ট্রাম্প পুতিন ও জেলেনস্কিকে নিয়ে ত্রিপক্ষীয় সম্মেলনের প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছেন। অন্যদিকে জেলেনস্কি নিজেও পুতিনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় আলোচনায়ও প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন। জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মের্জ জানিয়েছেন, দুই নেতার মধ্যে দুই সপ্তাহের মধ্যে বৈঠক হওয়ার সম্ভাবনা আছে। বিশ্লেষকদের মতে, এখনই যুদ্ধবিরতি বা শান্তি চুক্তি না হলেও আলোচনার অগ্রগতি ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা কমিয়েছে।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্র-ভারত বাণিজ্য সম্পর্ক নিয়েও অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। ট্রাম্প প্রশাসন ৬ আগস্ট ভারতীয় পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক ঘোষণা করেছে, যা ২৭ আগস্ট কার্যকর হবে। ফলে অনেক ভারতীয় পণ্যে শুল্কহার দাঁড়াবে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত। হোয়াইট হাউজের বাণিজ্য উপদেষ্টা পিটার নাভারো অভিযোগ করেছেন, রাশিয়া থেকে ভারতের অপরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি যুদ্ধ শুরু হওয়ার আগে ছিল ১ শতাংশ। এখন তা বেড়ে ৩০ শতাংশের বেশি হয়েছে। ‘ভারতের জ্বালানি তেল খাত পুতিনের যুদ্ধযন্ত্রকে অর্থায়ন করছে’ বলে অভিযোগ করেন তিনি।
ভারত এ অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের এ পদক্ষেপ ‘অন্যায্য ও অবিচারপূর্ণ’। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক থাকলে ভারতীয় পরিশোধনাগারগুলো রাশিয়ার জ্বালানি তেল কেনা অব্যাহত রাখবে। আগস্টের শেষ দিকে যুক্তরাষ্ট্র-ভারতের সম্ভাব্য বৈঠক বাজারের নীতিনির্ধারণে প্রভাব ফেলতে পারে।
অন্যদিকে বিনিয়োগকারীরা বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভের (ফেড) বার্ষিক জ্যাকসন হোল সম্মেলনের দিকে নজর রাখছেন। এটি ২১-২৩ আগস্ট অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এ সময় ফেড চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েলের মন্তব্য থেকে সুদহার কমানো হবে কিনা এ বিষয়ে ইঙ্গিত খুঁজবেন বাজারসংশ্লিষ্টরা।
এদিকে সর্বশেষ মাসভিত্তিক প্রতিবেদনে ওপেক জানিয়েছে, ২০২৬ সালে বিশ্বব্যাপী জ্বালানি তেলের দৈনিক চাহিদা ১৩ লাখ ৮০ হাজার ব্যারেল বাড়তে পারে। এটি সংস্থাটির আগে দেয়া পূর্বাভাসের তুলনায় দৈনিক এক লাখ ব্যারেল বেশি। যদিও সর্বশেষ প্রকাশিত প্রতিবেদনে ওপেক চলতি বছরের চাহিদা বৃদ্ধির পূর্বাভাস অপরিবর্তিত রেখেছে।