Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪,

পাঁচবিবিতে ভেড়া পালন করে ভাগ্য বদল রেহেনার

জয়পুরহাট প্রতিনিধি

জয়পুরহাট প্রতিনিধি

আগস্ট ১০, ২০২২, ০৬:০৩ পিএম


পাঁচবিবিতে ভেড়া পালন করে ভাগ্য বদল রেহেনার

হতদরিদ্র শ্বশুড়-শ্বাশুড়ির সংসারে বোঝা হয়ে পড়েন রেহেনা। স্বামীসহ দুই সন্তানকে নিয়ে কি করবেন এই চিন্তায় দিশেহারা হয়ে পড়েন তিনি। এরই মধ্যে শ্বশুর-শ্বাশুড়ি তাদের সংসার থেকে পৃথক করে দেন।

সামনের দিনগুলো অন্ধকার দেখতে পান তিনি। তবুও হাল ছেড়ে দেননি রেহেনা। শ্বাশুির দেওয়া দুটি ভেড়া থেকে আজ তিনি এলাকার রোল মডেল হয়ে দাড়িয়েছেন। আত্ম বিশ্বাসই তাকে অনেক দূরে এগিয়ে নিয়ে গেছে।

জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার কুসুম্বা ইউনিয়নের হরেন্দা গ্রামের ভ্যান চালক আব্দুর রহিমের স্ত্রী রেহেনা বেগমের সাথে কথা হয় এই প্রতিনিধির। তার অতীত জীবনের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে কেঁদে ফেলেন রেহেনা।

বাবা-মা’র সংসারে অভাব অনটনের কারণে পড়াশুনা করতে পারেননি, ঠিকমত খাবারো জোটেনি তাদের। অল্প বযসে রেহেনার বিয়ে দেন তার বাবা-মা। স্বামীর সংসারে এসে রেহেনা দেখতে পান ৫শতক জমির উপরে জরাজীর্ণ কুড়েঘরেই ভ্যানচালক স্বামীরসহ শ্বশুড়-শ্বাশুড়ির পরিবার।

স্বামীর সামান্য আয়ে বহুকষ্টে চলে তাদের সংসার। ফলে বাধ্য হয়ে পাশের বাড়িতে ঝি’য়ের কাজ নেন তিনি। বিয়ের তিন বছরের মধ্যে রেহেনার কোলে আসে রাশেদ ও আশিক।

খরচ বেড়ে যাওয়ায় শ্বশুড়-শ্বাশুড়ী তাদের পৃথক করে দেন। বহু কষ্টে তাদের দিনসংসার চলতে থাকে। ছেলেদের লেখাপড়ার খরচ যোগাতে তাদের হিমশিম খেতে হয়।

শ্বাশুড়ি পুত্রবধু রেহেনাকে ভবিষ্যতের সঞ্চয়ের জন্য দুটি ভেড়ার বাচ্চা দেন। শিশু দুই সন্তানের সাথে ভেড়ার বাচ্চাটিকেও লালন পালন করতে থাকেন রেহেনা। প্রথমে দুটি বাচ্চা দেয় একটি ভেড়াটি। বছরে ভেড়া তিনবার বাচ্চা দেওয়ায় স্বল্প সময়ে তার খামারে সংখ্যা বাড়তে থাকে।

রেহেনা বলেন, এপর্যন্ত তার খামার থেকে প্রায় এক’শ ভেড়া বিক্রি করেছেন। এখন ছোটবড় অর্ধশতাধিক ভেড়া রয়েছে তার খামারে। রেহেনার বড় ছেলে রাসেদ চাটার একাউন্টেডেন্ট নিয়ে ঢাকায় আর ছোট ছেলে আসিক স্থানীয় হাকিমপুর কৈজুড়ী বিএনআর উচ্চ বিদ্যালয়ে দশম শ্রেণিতে লেখাপড়া করছে। রেহেনার মতে কষ্ট করলে একদিন তার ফল পাওয়া যায়। দেশের গ্রামের মেয়েরা আমার মত যদি সাবলম্বী হওয়ার জন্য ধযর্যসহকারে পরিশ্রম করে তাহলে কারো অভাবী সংসার থাকবে না।

তিনি বলেন, সরকারী ভাবে সাহায্য সহযোগীতা পেলে তার ভেড়া পালনে উৎসাহ বেড়ে যাবে।

উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা নিয়াজ কাযমির বলেন, হরেন্দা গ্রামের রেহেনা বেগমের ভেড়া পালনের মাধ্যমে সাবলম্বি হওয়ার খবরে আমরা তার খোঁজ খবর নিয়েছি। নিঃসন্দেহে এটি একটি ভাল উদ্যোগ। অনেকে তাকে দেখে অনুসরণ করবে। ইতিমধ্যে রেহেনার সাফল্যের বিষয়ে আমরা উর্ধ্বতন কৃতপক্ষকে অবহিত করেছি। আশা করছি অচিরেই সরকারীভাবে সাহায্য আসবে। আসলে আমরা তার নিকট পৌঁছে দিব।  

এআই

Link copied!