Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪,

শুঁটকি তৈরিতে স্বপ্ন দেখেন দীঘিনালার সজিব

সোহেল রানা, (খাগড়াছড়ি) দীঘিনালা

সোহেল রানা, (খাগড়াছড়ি) দীঘিনালা

ডিসেম্বর ২০, ২০২৩, ০৫:০৫ পিএম


শুঁটকি তৈরিতে স্বপ্ন দেখেন দীঘিনালার সজিব

খাগড়াছড়ি দীঘিনালায় তরুন উদ্যেক্তা সজিব চাকমা কাঁচা মাছ থেকে শুঁটকি তৈরি করে মাসে আয় করছে ৮০হাজার টাকা। 

খাগড়াছড়ির দীঘিনালা উপজেলা বাবুছড়া ইউনিয়নে সজিব চাকমা গড়ে তুলেছে শুঁটকি তৈরির কারখানা। প্রায় এক একর জমি লিজ নিয়ে কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম থেকে কাঁচা মাছ নিয়ে এসে সম্পূর্ন প্রাকৃতিক ভাবে রোদে শুকিয়ে শুঁটকি তৈরি করছে।

স্থানীয় ও অনলাইনে বিক্রি করছে এসব শুঁটকি। প্রতিদিন স্থানীয় লোকজন সজিবে শুঁটকি তৈরি করা প্রক্রিয়া দেখতে আসে এবং শুঁটকি কিনে নিয়ে যায়। শুঁটকির মধ্যে বেশ জনপ্রিয় ছুরি মাছ, শাপলা পাতা মাছ ও হাঙ্গর মাছ এছাড়াও আরো না ধরনে মাছের শুকটি রয়েছে।

ছুরি মাছের শুঁটকি  ৬শত-১৪শত টাকা কেজি, শাপলা পাতা মাছের শুঁটকি কেজি ৮শত-১৪শত টাকা ও হাঙ্গার মাছের শুঁটকি কেজি ৪শত-১৮শত টাকা বিক্রিয় করা হচ্ছে। এছাড়ও আরো বিভিন্ন প্রজাতির মাছের শুঁটকি বিভিন্ন দামে বিক্রয় করা হচ্ছে।

দৈনিক আমার সংবাদের সাংবাদিক মো. সোহেল রানাকে সজিব চাকমা বলেন, আমি উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করার পর টাকা পয়সার সমস্যার কারণে পড়ালেখা করতে পারি নাই। ভাড়ায় মোটরসাইকলে চালাতাম। আমি প্রথমে স্থানীয় ভাবে বিষ ও কেমিক্যাল মুক্ত সিদল (নাপ্পি) তৈরি করে বিক্রি করি এতে অনেক সাড়া পেয়েছি।

সিদল (নাপ্পি) শুধু স্থানীয় সম্প্রদায়ে লোকজন খায়। পাড়াহি ও বাঙ্গালিদের মাঝে শুটকি একটি জনপ্রিয় খাবার, তাই আমি  কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম থেকে সামুদ্রিক কাঁচা মাছ কিনে এনে ভালো ভাবে পরিষ্কার করে প্রাকৃতিক ভাবে রৌদে শুকিয়ে শুঁটকি তৈরি করে বিক্রি করছি।

স্থানীয় লোকজন এসে কিনে নিয়ে যায় এবং অনলাইনেও অর্ডার আসে এবং আমার মোবাইলেও ফোনে শুটকি জন্য কল দেয়। এখন পাইকারি ভাবে শুটকি বিক্রি করি নাই। গত মাসে প্রথমবারে বিক্রি করে প্রায় ৭০/৮০হাজার টাকা লাভ হয়েছে। সরকারি ভাবে সহযোগীতা পেলে আরো ভাল কিছু করতে পারব।

বাবুছড়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান গগন বিকাশ চাকমা বলেন, আমার ইউনিয়নে প্রত্যন্ত এলাকায় সজিব চাকমার মত উদ্যোক্তা নিজের প্রচেষ্টায় সিদল(নাপ্পি) ও বিভিন্ন প্রজাতির মাছের অর্গানিক ভবে শুটকটি তৈরি করছে। সজিব চাকমা শুঁটকি তৈরিতে এলাকার বেকার ৮/১০জন বেকার‘র কর্মসংস্থান হয়েছে। স্থানীয় ভাবে সজিব চাকমা শুটকটির চাহিদা বেশি থাকায় তার বাড়ি থেকে অনেকে এসে শুঁটকি নিয়ে যায়। আমি আশা করি তাকে দেখে এলাকার শিক্ষিত বেকার ছেলেরা নতুন নতুন কিছু নিয়ে উদ্যোক্তা সৃষ্টি হবে।

দীঘিনালা স্যানিটারি ইন্সপেক্টর(নিরাপদ খাদ্য) তুজিম চাকমা বলেন সজিব চাকমা সম্পূর্ন অর্গানিক ভাবে শুঁটকি তৈরি করছে। স্বাস্থ্য সম্মত কোন ধরনে কেমিক্যাল ব্যবহার করছে না। তারপরও নিবিড় পর্যবেক্ষন এর জন্য তিন ধরনে নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকায় ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। কারন সজিব চাকমা কাঁচা মাছগুলো কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম থেকে নিয়ে আসে সেখানে কোন ধরনে কেমিক্যাল মিশানো হয় কিনা পরীক্ষা করার জন্য।

দীঘিনালা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা অর্বনা চাকমা বলেন, পার্বত্য অঞ্চলে বসবাসরত সম্প্রদায়ের মাঝে সামুদ্রিক মাছের শুঁটকি খুব জনপ্রিয় খাবার। সজিব চাকমা সামুদ্রিক বিভিন্ন প্রকার কাচাঁ মাছ এনে প্রকৃতিক ভাবে রৌদে শুকিয়ে শুঁটকি তৈরি করছে। সকল ধরনে পুষ্টির গুনগতমান বজায় রেখে স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে প্রক্রিয়াজাতকরনে অনুরোধ করা হয়েছে। তবে কোন মাধ্যম ছাড়া সরাসরি আড়তদার অথবা জেলেদের কাছে থেকে মাছ আনতে পারত তবে শুঁটকির স্বাদ গুন অনেক বৃদ্ধি পেত।

এইচআর

Link copied!