Amar Sangbad
ঢাকা রবিবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪,

কিশোরগঞ্জে চাঞ্চল্যকর খোকন হত্যা মামলার আসামি গ্রেপ্তার

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি

ডিসেম্বর ২৩, ২০২৩, ০৩:৩৭ পিএম


কিশোরগঞ্জে চাঞ্চল্যকর খোকন হত্যা মামলার আসামি গ্রেপ্তার
ছবি: আমার সংবাদ

কিশোরগঞ্জে চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার এজাহার নামীয় আসামি হুমায়ুন মিয়া(৩০) কে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-১৪ এর সিপিসি-২ কিশোরগঞ্জ ক্যাম্পের সদস্যরা।

কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার সুন্দিরবন মাইজখাপন গ্রামের মৃত লাল মিয়ার ছেলে ভিকটিম খোকন মিয়া(৪৫) প্রায় ১৭ বছর পূর্বে একই এলাকার মৃত দুলাল মিয়ার মেয়ে মোছা. হোসনা বেগমকে বিবাহ করে এবং তাদের সংসারে দুই ছেলে ও এক মেয়ে সন্তান রয়েছে। প্রায় দুই তিন মাস ভিকটিম খোকন মিয়া ও তার স্ত্রী মোছা. হোসনা বেগমের মধ্যে পারিবারিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মনোমালিন্য চলে আসায় প্রায় দুই মাস পূর্বে মোছা. হোসনা বেগম তার সন্তানদেরকে স্বামীর ঘরে রেখে তার বাবার বাড়িতে চলে যায়।

ভিকটিম খোকন মিয়া তার সন্তানদেরকে তার বোন মোছা. শিউলি আক্তারের কাছে দেখভালের জন্য রেখে সে ঢাকা শহরে গাড়ী চালাত এবং প্রতি সপ্তাহে তার সন্তানদের দেখার জন্য সে গ্রামের বাড়িতে আসত। গত ৩০ নভেম্বর রাত ৮ টার দিকে ভিকটিম খোকন মিয়া তার গ্রামের বাড়িতে আসার সংবাদ পেয়ে ওই দিন রাত ১১ ঘটিকার সময় হোসনা বেগম তার স্বামী ভিকটিম খোকন মিয়াকে খবর দিয়া তার বাবার বাড়িতে নিয়ে আসে। রাতে ভিকটিম খোকন মিয়া নিজ বাড়িতে ফিরে না আসায় ভিকটিমের খোজ নেওয়ার জন্য ভিকটিমের বোন মোছা. শিউলি আক্তার ভিকটিমের ছেলে মো. ফেরদৌস মিয়া(১৩) কে পরদিন  গত ১ ডিসেম্বর সকাল অনুমান ৬ ঘটিকার সময় মোছা. হোসনা বেগমের বাপের বাড়িতে পাঠায়।

ভিকটিমের ছেলে মো. ফেরদৌস ভিকটিমের শশুর বাড়ি অর্থাৎ আসামিদের বাড়িতে আসিয়া দেখতে পাই যে, আসামী মো. হুমায়ুন মিয়া(৩০) এবং আসামি রহিম মিয়া(৬৫) সহ অন্যান্য আসামিরা ভিকটিমকে আটক করিয়া দেশীয় অস্ত্র শস্ত্র দ্বারা মারাত্নকভাবে মারপিট করতেছে। তখন ভিকটিমের ছেলে মো. ফেরদৌস মিয়া তাৎক্ষনিক বাড়িতে এসে ভিকটিমের বোন মোছা. শিউলি আক্তারসহ আত্মীয়স্বজনদেরকে ঘটনার বিষয়ে জানালে, তারা দ্রুত ভিকটিমের উদ্ধারের জন্য আসামিদের বাড়িতে যায়। তবে আসামীগণ তাদেরকে দেখে আরও ক্ষিপ্ত হয়ে তাদের বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়। ভিকটিমের পরিবারের লোকজন ভিকটিমকে উদ্ধার করতে না পেরে নিরুপায় হয়ে সদর থানায় এসে মৌখিকভাবে থানা পুলিশের নিকট উক্ত ঘটনার বিষয়ে অবহিত করে। অতঃপর থানা পুলিশের সহায়তায় ভিকটিমকে উদ্ধারের জন্য রওনা হয়ে পথে মধ্যে জানতে পারে যে, ভিকটিমকে আসামীরা আহত অবস্থায় সদর হাসপাতালে ফেলে রেখে চলে গেছে। 

অতঃপর তারা সদর হাসপাতালে গিয়ে ভিকটিমকে মৃত অবস্থায় দেখতে পায়। এ ঘটনায় ভিকটিমের বোন মোছাঃ শিউলি আক্তার বাদী হয়ে কিশোরগঞ্জ সদর থানায় ১টি হত্যা মামলা দায়ের করেন। যা কিশোরগঞ্জ সদর থানার মামলা নং-৩,তারিখ-০২/১২/২০২৩।বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ায় প্রচারিত হলে দেশব্যাপী ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয় এবং আসামীরা গ্রেফতার এড়াতে ঘটনার পর পরই এলাকা ছেড়ে আত্মগোপনে চলে যায়।

আসামীদেরকে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে র‌্যাব গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে। র‌্যাবের গোয়েন্দা নজরদারী এবং তথ্য প্রযুক্তির সাহায্যে আসামীদের অবস্থান জানার চেষ্টা করে এবং তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে কিশোরগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার গাইটাল চরপাড়া এলাকায় আসামী মোঃ হুমায়ুন মিয়া(৩০) এর অবস্থান নিশ্চিত হয়ে গত ২২ ডিসেম্বর  বিকাল ৪ ঘটিকার সময় কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার গাইটাল চরপাড়া এলাকায় র‌্যাব-১৪, সিপিসি-২ কিশোরগঞ্জ ক্যাম্পের  একটি চৌকশ আভিযানিক দল অভিযান পরিচালনা করে এ মামলার আসামী মোঃ হুমায়ুন মিয়া(৩০) কে গ্রেফতার করে।

হুমায়ুন মিয়া সদর উপজেলার মাইজখাপন ইউনিয়নের সুন্দিরবন গ্রামের আব্দুল গণির ছেলে। হত্যার ঘটনায় জড়িত অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতারের জন্য র‌্যাবের অভিযান অব্যাহত আছে।

গ্রেফতারকৃত আসামীর বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কিশোরগঞ্জ সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

এআরএস

Link copied!