ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই, ২০২৫
Amar Sangbad

ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে বাবার মৃত্যু, মা কারাগারে, মামলার আসামী তিন শিশু ঘুরছে দ্বারে দ্বারে

এন কে বি নয়ন, ফরিদপুর

এন কে বি নয়ন, ফরিদপুর

জানুয়ারি ২৭, ২০২৫, ০৭:৫১ পিএম

ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে বাবার মৃত্যু, মা কারাগারে, মামলার আসামী তিন শিশু ঘুরছে দ্বারে দ্বারে

ফরিদপুরের বোয়ালমারী পৌর সদরের পোল্ট্রি মুরগী ব্যবসায়ী মৃত আমিন শেখ ও পপি খাতুন দম্পতির তিন শিশু সন্তান আইরিন(১০), আহমাদুল্লাহ (৫) ও জানাতুন নাঈমা (৪)। নাবলক এতিম তিন শিশু বাবার ঋণের দায়ে ব্র্যাক ব্যাংকের দায়ের করা অর্থ ঋণের মামলার আসামী।

রবিবার(২৬ জানুয়ারি) বিকেলে পৌরসদরের অডিটোরিয়াম এলাকায় এক সংবাদ সন্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। মা পপি খাতুন জেলে যাওয়ার পর থেকেই একই মামলার আসামি তিনটি এতিম নাবালক শিশু সারাক্ষণ শঙ্কা ও আতংকের মধ্যে রয়েছে, কখন জানি তাদেরও পুলিশ ধরে নিয়ে যায়।

স্বামী আমিন শেখের নেওয়া ব্যাংক ঋণ পরিশোধ করতে না পারায় পপি খাতুন বর্তমানে কারাগারে। বাবা নেই, মা কারাগারে। এতিম তিনটি শিশুর জীবন এখন বিষাদে ভরা, যন্ত্রণা কাতর। ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে মা পপি খাতুন জেলে যাবার পর তাদের নানা উপজেলার ময়না ইউনিয়নের বান্দুগ্রামের বাসিন্দা সিরাজ শেখ বাড়িতে আশ্রয়ে রয়েছেন অবুঝ শিশুরা। দিনমজুর নানা সিরাজ শেখের নিজের সংসারই ঠিকমতো চলে না তার উপর যুক্ত হয়েছে এতিম নাবালক তিন নাতি-নাতনি। দিশেহারা নানা তাই এতিম শিশুদের নিয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন।

সংবাদ সম্মেলনে শিশুদের নানা সিরাজ শেখ বলেন, আমার মেয়ের জামাই আমিন শেখ বোয়ালমারী বাজারের পোল্ট্রি মুরগী ব্যবসায়ী ছিলেন। ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি মারা যান। তার মৃত্যুর পর জানতে পারি তিনি ব্র্যাক ব্যাংক পিএলসি বোয়ালমারী শাখা থেকে ২০২২ সালের ২৫ অক্টোবর ৩০ লাখ টাকা  ঋণ নেন।

সংবাদ সন্মেলনে তিনি বলেন, আমিন শেখ জীবিত থাকা অবস্থায় কিস্তিতে সুদে আসলে ৬ লাখ ২১ হাজার ৩৭৮ টাকা পরিশোধ করেন। তার মৃত্যুর পর ২০২৩ সালের ২৫ অক্টোবরে ফরিদপুর জেলা জজ ১ম অর্থঋণ আদালতে আমার মেয়ে পপি খাতুন, তার তিন এতিম নাবালক শিশু সন্তানসহ, আমিন শেখের মা সালেহা বেগম ও মো. চুন্নু মিয়ার নাম উল্লেখ পূর্বক ছয় জনের নামে মামলা করেন। যাতে ২৫ লাখ ৯৩ হাজার ২৮৩  আসল, ৩ লাখ ৩৯ হাজার ৩২৯ টাকা সুদ ও ৬০ হাজার ৫৭০ টাকা আইনী খরচ বাবদ মোট ২৯ লাখ ৯৩ হাজার ১৩৮ টাকা পরিশোধের ডিক্রিজারি করেন আদালত। মামলার বিষয়ে কিছুই জানতেন না বলে তাদের দাবি।

এদিকে, মামলার বিবরণে ফরিদপুর জজ আদালতের বাদির পক্ষের আইনজীবী তার স্বাক্ষরিত আর্জিতে বিবাদীগণের নামে ২০২১ সালের ৯ ডিসেম্বর লিগ্যাল নোটিশ জারি করেছেন বলে দাবি করেছেন। অথচ ঋণ গৃহীতা ব্যাংক থেকে ঋণ নেন তারও ১ বছর পর অর্থাৎ ২০২২ সালে। গত ২০২৪ সালের ২ ডিসেম্বর মোসা. পপি খাতুন গ্রেফতার হলে পরিবারের সদস্যরা জানতে পারেন মৃত আমিন শেখের ঋণের দায়ে তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।

মামলা সুত্রে জানাগেছে, ব্র্যাক ব্যাংক পিএলসি বোয়ালমারী শাখা আমিন শেখের দুই এতিম নাবালক মেয়ে ও নাবালক ছেলের বয়স গোপন করে তাদেরও মামলার আসামি করা হয়েছে। মায়ের জামিন করাতে আদালতে ঋণের দায়ের (২৫ শতাংশ)৭ লাখ টাকা পরিশোধ করতে হবে। একদিকে বাবা হারানোর শোক, মা জেলে। অন্যদিকে সুদে আসলে ২৯ লাখ টাকা ব্যাংক ঋণ পরিশোধের চাপ। ওয়ারিশ সূত্রে মা,দাদির সাথে অর্থ ঋণের মামলায় আসামি তারাও।

পপি খাতুনের আত্মীয় হুমায়ুন কবির বলেন, অসহায় এতিম তিনটি শিশু, যারা এখনো ঠিকমতো টাকা, ঋণ, লেনদেনের অর্থই বোঝে না। বয়স লুকিয়ে তাদেরও করা হয়েছে আসামী। এরা নাকি জামিনদার হয়েছিলো। এরা ঋণের কী বুঝে। আদালতের নিকট আবেদন মৃত ঋণ গ্রহীতার অসহায় ওয়ারিশদের আর্থিক অবস্থা বিবেচনা করে ঋণ মওকুফ করে তাদেরকে বেকসুর খালাস দেওয়া হোক। তাদের জায়গা-জমি বলতে কিছুই নেই।

জানতে চাইলে ব্র্যাক ব্যাংক বোয়ালমারী শাখার ব্যবস্থাপক রাসেল আহমেদ বলেন, ঋণ গ্রহীতা মৃত আমিন শেখ ত্রিশ লাখ টাকা ঋণ নেন। ব্যাংকের শর্ত ও নিয়মের মধ্যে থেকেই চলমান ব্যবসার অনুকূলে ঋণ দেওয়া হয়েছে। শর্তাবলী মেনেই ঋণের টাকা অনাদায়ে জামিনদার ও ওয়ারিশ গণের নামে মামলা হয়েছে। এতিম নাবালক শিশুদের নামে মামলার বিষয়ে আমাদের আইনজীবী ভালো বলতে পারবেন।

এ বিষয়ে বিবাদী পক্ষের আইনজীবী এ্যাড. মেহেদী হাসান বলেন, ঋন গ্রহীতা আমিন শেখের অপ্রাপ্ত বয়সী অবুঝ শিশুদের এ মামলায় ওয়ারিশ সূত্রে আসামী করা হয়েছে। তারা ওয়ারিশ হলেও বয়ঃপ্রাপ্তির আগে বাবার সম্পত্তির অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পারবে না। শিশুদের বিরুদ্ধে মামলা করা নিসন্দেহে তারা প্রত্যারণার আশ্রয় নিয়েছেন। আদালতকে ভুল তথ্য দিয়েছেন। এটা আদালত অবমাননার সামিল বলেও তিনি জানান।

আরএস

Link copied!