ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই, ২০২৫
Amar Sangbad

নতুনরূপে মেহেরপুরের ঐতিহাসিক আমবাগান

নিজস্ব প্রতিবেদক

নিজস্ব প্রতিবেদক

ফেব্রুয়ারি ৩, ২০২৫, ০৪:৫৮ পিএম

নতুনরূপে মেহেরপুরের ঐতিহাসিক আমবাগান

মেহেরপুরের বৈদ্যনাথতলা তথা মুজিবনগর আমবাগান যেন প্রাণ ফিরে পেয়েছে। ঐতিহাসিক এবং পরিবেশগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ বিশাল এই আমবাগান পরিচর্যার অভাবে বিলীনের পথেই হাঁটছিলো। হর্টিকালচার সেন্টারের পরিচর্যায় গাছগুলো থেকে পরগাছা দমন, পুষ্টির ব্যবস্থাসহ প্রয়োজনীয় পরিচর্যা করা হয়েছে। যার মাধ্যমে নতুনরূপে সৌন্দর্য ছড়াচ্ছে পর্যটকদের জন্য আকর্ষণীয় এই বাগানটি।

জানা গেছে, দীর্ঘসময় ধরে বিভিন্ন মিডিয়ায় আমবাগানের ধ্বংসাবস্থা নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছে। অন্যদিকে জেলার বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের দাবি ছিলো আমবাগান রক্ষা করার বিষয়ে সরকারিভাবে উদ্যোগ গ্রহণ করা হোক। এরই অংশ হিসেবে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ‘বছরব্যাপী ফল উৎপাদনের মাধ্যমে পুষ্টি উন্নয়ন প্রকল্প’ এর আওতায় আমগাছগুলো পুনরুজ্জীবিত করার উদ্যোগ নেয়া হয়। মেহেরপুর হর্টিকাল সেন্টারের তত্ত্বাবধানে প্রায় এক বছর ধরে বাগানে নানা প্রকার কাজ করা হয়। এরমধ্যে গাছ থেকে পরগাছাগুলো অপসারণ করা; একই সাথে শুকনো ও রোগাক্রান্ত ডালপালা ছেঁটে দেয়া হয়েছে। দীর্ঘ সময় বাগানে চাষ না দেয়াড় কারণে মাটি ও গাছের শিকড় মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলো। সেখানে প্রয়োজনীয় সেবা, সার, কীটনাশক, বিভিন্ন জৈব পদার্থ প্রয়োগ করা হয়েছে কয়েক ধাপে। গাছের চাহিদা অনুযায়ী অন্যান্য গৌণ পুষ্টির জোগান দেয়া হয়েছে। এছাড়াও রোগাক্রান্ত গাছের বাড়তি পরিচর্যার পাশাপাশি ফাঁকা হয়ে যাওয়া স্থানগুলো লাগানো হয়েছে নতুন চারা। নতুন লাগানো চারাগুলোর বেড়ে ওঠার জন্য লোহার বেড়া দিয়ে ঘেরা হয়েছে। সব মিলিয়ে গাছের চেহারা পাল্টে গেছে। এখন যেদিকে দৃষ্টি যায় সেদিকেই সবুজের সমারোহ। ডাল থেকে বের হচ্ছে নতুন কুশি।

জানা গেছে, গাছের সংখ্যা ঠিক রাখার জন্য প্রতিটি গাছে ট্যাগ লাগানো হয়েছে। পরিচর্যা করার পর নতুন পুরাতন মিলে সর্বমোট গাছের সংখ্যা এক হাজার ২০০টি। এর মধ্যে পুরাতন গাছ এক হাজার ৪০টি এবং নতুন গাছের সংখ্যা ১৬০টি। ব্রিটিশ সময়ে জমিদার কেদারনাথ চৌধুরীর স্ত্রীর আমের আচার বাগান ছিলো এ আম্রকাননটি। কালক্রমে তা হয়ে ওঠে বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্র জন্মের শপথ ভূমি। ইতিহাসের পাতায় বাগানটির নাম স্বগৌরবে স্থান পেলেও আমবাগান রক্ষায় কোন উদ্যোগ ছিলো না। জেলা প্রশাসন প্রতি বছর বাগানের ফল ইজারা দিয়ে রাজস্ব আদায় করেছে। তবে বাগান পরিচর্যায় তেমন কোনো কার্যক্রম ছিলো না। ফলে শতবর্ষী এসব গাছ ক্রমেই মৃত্যুর দিকে যাচ্ছিলো। গাছের ডালে ডালে ছিলো পরগাছায় ভরপুর। ঝড়ে ভেঙে যাওয়ার ডাল শুকিয়ে ক্ষত হচ্ছিলো ফলদায়ী এসব বৃক্ষ। অন্যদিকে প্রয়োজনীয় সেচ ও সার না পেয়ে অনেক গাছ মারা যায়। ফাঁকা হতে থাকে ইতিহাসের জীবন্ত সাক্ষী কেদারনাথ বাবুর আমবাগান।

স্থানীয়রা জানায়, প্রতি বছর জেলা উপজেলা প্রশাসন থেকে বাগানের ফল ইজারা দেয়া হয়। এর মাধ্যমে সরকারের রাজস্ব আদায় হলেও ইজারাগ্রহণকারীরা নানাভাবে বাগান ক্ষতিগ্রস্ত করেছেন। মরাবাগান তাজা করেছে হর্টিকালচার সেন্টার। সারি সারি আমগাছগুলো সতেজ ও সবুজে ভরে গেছে। গাছগুলোর এমন রূপই দেখতে চান স্থানীয়রা।

বছরব্যাপী ফল উৎপাদনের মাধ্যমে পুষ্টি উন্নয়ন প্রকল্প পরিচালক ডক্টর মেহেদি মাসুদ জানান, গাছপালা কমে যাওয়ায় জলবায়ুর ওপর বিরূপ প্রভাব পড়েছে। অনুকূল পরিবেশ রাখতে এই আমবাগানের মতো বাগানগুলো টিকিয়ে রাখতে হবে। পরিচর্যার মাধ্যমে গাছগুলো যেমনি পুনরুজ্জীবিত হয়েছে; তেমনি এলাকার পরিবেশের ওপর ইতিবাচক একটি প্রভাব পড়েছে। বাগান রক্ষার এই ধারা সংশ্লিষ্টরা ধরে রাখবেন বলে প্রত্যাশা করেন। 

জানতে চাইলে মেহেরপুর হর্টিকালচার সেন্টারের উপপরিচালক হাবিবুল ইসলাম খান বলেন, বাগানটির বর্তমান অবস্থা দেখলে যে কারও প্রাণ জুড়িয়ে যাবে। যা হর্টিকালচার সেন্টারের কর্মীদের নিরলস প্রচেষ্টার ফসল। বাগান টিকিয়ে রাখার দায়িত্ব সকলের। সবাই নিজ নিজ অবস্থান থেকে বাগানটির দিকে সুদৃষ্টি রাখবেন এ প্রত্যাশা।

আরএস

Link copied!