ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই, ২০২৫
Amar Sangbad

মাদরাসা ও এতিমখানার নামে চাঁদা নাকি ধোঁকাবাজি?

আরিফ হোসেন, বরিশাল ব্যুরো

আরিফ হোসেন, বরিশাল ব্যুরো

ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০২৫, ০৬:০৬ পিএম

মাদরাসা ও এতিমখানার নামে চাঁদা নাকি ধোঁকাবাজি?
  • অস্তিত্ব না থাকলেও ব্যয় নিয়ে রয়েছে প্রশ্ন

  • কে এই জাহাঙ্গীর ও রিফাত-রায়হান?

  • দেখে বোঝার উপায় নেই, এরা কি হুজুর না প্রতারক?

  • রসিদ বই ছাপিয়ে আয় লক্ষ টাকা

  • প্রশাসনের কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা নগরবাসীর

বরিশালে বেড়েই চলছে পাড়া-মহল্লা, রাস্তা-ঘাট কিংবা গণপরিবহণ থেকে শুরু করে মসজিদ, মাদরাসা ও এতিমখানার নামে চাঁদা আদায়।

মাদরাসা ও এতিমখানার অস্তিত্ব না থাকলেও ব্যয় নিয়ে রয়েছে নানা প্রশ্ন। বরিশাল নগরীর গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি পয়েন্টে মসজিদ- মাদরাসার জন্য এভাবেই চাঁদা তুলছে কয়েকটি চক্র। পাশাপাশি মাইকে বিভিন্ন ধর্মীয় বাণী প্রচারের মাধ্যমে পথচারীদের সহানুভূতি আদায়ের চেষ্টাও চলছে। আবার রসিদ হাতে ধরিয়ে দিয়ে এতিমখানা বা লিল্লাহ বোর্ডিংয়ের নামেও তোলা হচ্ছে অর্থ। তবে এ ধরনের বেশকিছু এতিমখানায় গিয়ে দেখা গেলো ভিন্ন চিত্র।

ছোট দুই কামরার বাসা ভাড়া নিয়ে কয়েকটি শিশুকে দ্বীনি শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে। তবে এতিম শিশু মাত্র দুটি। কেউ কেউ আবার মাসিক বেতন দিয়ে পড়তে আসে। বিষয়টি স্পর্শকাতর হওয়ায় অনেকে এড়িয়ে যেতে চান।

তবে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের নামে চাঁদাবাজি নিয়ে ইসলাম কী বলে? আর এসব ক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা কী হওয়া উচিত?

দান-খয়রাতের বিষয়ে ইসলাম ধর্ম উৎসাহিত করে, তবে প্রয়োজন যথাযথ নজরদারিও।

এছাড়া প্রতারক চক্রের কারণে মুসলমান সন্তানদের সঠিকভাবে তা‍‍`লীম-তরবিয়াতের মাধ্যমে হিফাজত করা, অর্থাৎ ইলম ও আমল শেখানো চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ছে। ইসলামী চিন্তাবিদদের মতে, এভাবে চাঁদা তুলে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান পরিচালনা শরীয়তসম্মত নয়।

দেখা গেছে, মানুষের ধর্মীয় অনুভূতি আর সরল বিশ্বাসকে কাজে লাগিয়ে, নাম-পরিচয়হীন এতিমখানার নামে চাঁদাবাজি করছে এক শ্রেণীর মানুষ। এভাবেই সাধারণ মানুষের কাছ থেকে প্রতিদিন জাহাঙ্গীর ও রিফাতসহ একাধিক চক্র হাতিয়ে নিচ্ছে এতিমখানার নামে অর্থ।

সমাজের মানুষের ধর্মীয় বিশ্বাসকে পুঁজি করে জমজমাট ব্যবসা করছে এই সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রগুলো। নিজেদের আলেম দাবি করে এই প্রতারক চক্র ছড়িয়ে আছে বরিশাল শহরসহ গোটা দক্ষিণাঞ্চলে। জাহাঙ্গীর, রিফাত, রায়হানসহ একাধিক প্রতারক চক্রের সন্ধান মিলেছে বরিশাল নগরীতে।

অনুসন্ধানে দেখা গেছে, বরিশাল শহরের বিভিন্ন এলাকায় প্রতিদিন যাতায়াত করেন লাখো মানুষ। কেউ পথচারী, কেউবা বিনোদনের আশায়। এসব আগন্তুকদের ঘিরে গড়ে উঠেছে এতিমের নামে টাকা আদায়কারী কয়েকটি সিন্ডিকেট। এদের উৎপাতে চরম বিব্রতকর অবস্থায় পড়ছেন পথচারীরা।

বিরক্ত পথচারীদের কেউ এটিকে এতিমদের সাহায্যার্থে ভিক্ষাবৃত্তির নামে এক ধরনের ব্যবসা হিসেবে দেখছেন। কেউ সন্দেহভরা মনে এড়িয়ে চলছেন। কেউ আবার সাত-পাঁচ না ভেবেই সওয়াবের আশায় কিংবা সম্মান রক্ষায় দানও করছেন। তবে অভিযোগের সুরে অনেকেই বলছেন, রাস্তার মাঝে এভাবে টাকা আদায় বন্ধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বা প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।

নগরীর ব্রাউন কম্পাউন্ড এলাকার বাসিন্দা ছালেহা বলেন, ‘নিয়মিত এখানে দেখি এতিমখানার নামে টাকা সংগ্রহ করছে কিছু লেবাসধারী। আসলে তারা ভদ্রবেশে এক প্রকার নিরব চাঁদাবাজি করছে।’

অনুসন্ধানে আরও দেখা গেছে, লিফলেট বা রশিদ থাকলেও অনুসন্ধানে অনেক প্রতিষ্ঠান খুঁজেই পাওয়া যায় না। নগরীর মার্কেট, হাট-বাজার, বাস টার্মিনাল ও লঞ্চঘাটসহ বিভিন্ন এলাকায় দিন-রাত চলে এ ধরনের নিরব চাঁদাবাজি।

বরিশালে অন্তত দশটি স্পটে চলছে মাদরাসার নামে টাকা আদায়। কিন্তু মাদরাসায় গিয়ে দেখা যায়, শিক্ষার্থী নিজ খরচে লেখাপড়া তো দূরের কথা, মাদ্রাসারই কোনো সন্ধান নেই প্রদত্ত রশিদের ঠিকানায়। আবার নেই কোনো এতিম শিশুও। তবুও চলছে এতিমখানার নামে টাকা উত্তোলন। ভুয়া কাগজপত্র দেখিয়ে এতিমখানার নামে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে প্রতারক চক্রের সদস্যরা।

এতিমখানার রশিদ নিয়ে অনুসন্ধানে গিয়ে দেখা যায়, বরিশাল সদর উপজেলার লামচরি বশিরিয়া এতিমখানা মাদ্রাসা এবং রুপাতলী দারুল কুরআন আব্বাসিয়া মাদরাসার রশিদ বই ছাপিয়ে দীর্ঘদিন ধরে মানুষের কাছ থেকে টাকা সংগ্রহ করে যাচ্ছে প্রতারক জাহাঙ্গীর ও রিফাত বাহিনী।

এই জাহাঙ্গীর ও রিফাত এতিমখানার নাম বলে বিভিন্ন জায়গা থেকে অনুদান সংগ্রহ করে এবং সেই অর্থ নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে নেয় বলে অভিযোগ রয়েছে।

বরিশাল জেলা শিক্ষা অফিসার মো. হারুনুর রশীদ বলেন, ‘মাদরাসার ছোট ছোট শিশুদের দিয়ে এ ধরনের চাঁদা সংগ্রহ কোনোভাবেই কাম্য নয়। মাত্র তিন মাস আগে তিনি বরিশালে যোগদান করেছেন, এ কারণে এই ধরনের কোনো অভিযোগ এখন পর্যন্ত তার দৃষ্টিতে আসেনি। তবে উপযুক্ত প্রমাণ সাপেক্ষে এ ধরনের অন্যায়কারীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।’

বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ ইমদাদ হুসাইন বলেন, ‘বিষয়টি আপনার কাছ থেকে শুনলাম। তবে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য থাকলে দিন, আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।’

বরিশাল জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমি যোগদানের পর থেকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে যেসব মাদরাসা, মসজিদ ও এতিমখানার জন্য অনুদান দেওয়া হচ্ছে, তা তদন্ত করে দেওয়া হচ্ছে। আমি যোগদানের পর থেকে মসজিদ, মাদ্রাসা ও এতিমখানায় অনুদানের জন্য আবেদন করা প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের খোঁজ নিয়ে দেখি, তাদের মধ্যে ২০ শতাংশই প্রতিষ্ঠান ভূয়া।’

তিনি আরও বলেন, ‘শুধু তাই নয়, অনুদানের জন্য আবেদন করা কয়েকটি এতিমখানার দেওয়া ঠিকানায় তাদের কোনো অস্তিত্ব নেই। এ ধরনের চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে খুব শিগগিরই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তবে আমাদের সবাইকে এই বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে।’

ইএইচ

Link copied!