Amar Sangbad
ঢাকা রবিবার, ১৮ মে, ২০২৫,

এলজিইডিতে ৯ মাসে ২২৮৭টি স্কিমের অগ্রগতি ৮১ শতাংশ

রাইসুল ইসলাম লিটন, টাঙ্গাইল

রাইসুল ইসলাম লিটন, টাঙ্গাইল

মে ১৮, ২০২৫, ০৫:৪৪ পিএম


এলজিইডিতে ৯ মাসে ২২৮৭টি স্কিমের অগ্রগতি ৮১ শতাংশ
  • টাঙ্গাইলে সাবেক এমপিদের সুপারিশকৃত ২৮টি স্কিম বাতিল

টাঙ্গাইলে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) চলতি অর্থবছরে সাবেক সংসদ সদস্যদের সুপারিশে গ্রহণকৃত ২৮টি উন্নয়ন প্রকল্পের স্কিম বাতিল করেছে। একই সঙ্গে চলমান ৫৪৭টি স্কিমের মধ্যে ৪০টিরও বেশি প্রকল্পে দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে দ্রুত কাজ শেষ করার নির্দেশ দিয়ে চূড়ান্ত নোটিশ পাঠানো হয়েছে। ফলে গত ৯ মাসে এলজিইডির প্রকল্প বাস্তবায়নের গতি বাড়িয়ে গড় অগ্রগতি ৮১ শতাংশে পৌঁছেছে।

সূত্র জানায়, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে টাঙ্গাইল এলজিইডি কার্যালয় থেকে ১৯টি প্রকল্পের আওতায় মোট ২২৮৭টি স্কিম গ্রহণ করা হয়, যার প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ২ হাজার ৫৬৯ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। এর মধ্যে প্রায় ১ হাজার ৯১৭ কোটি ৩৭ লাখ টাকা ব্যয়ে ১,৪৭৯টি স্কিমের কাজ ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। বর্তমানে ৫৪৭টি স্কিমের কাজ চলমান রয়েছে।

বাতিল হওয়া ২৮টি স্কিমের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১১টি স্কিম অন্তর্ভুক্ত রয়েছে "টাঙ্গাইল জেলার গুরুত্বপূর্ণ গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পে (টাঙ্গাইল প্রজেক্ট)"। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১০টি স্কিম রয়েছে "এমআরআরআইডিপি" প্রকল্পে এবং তৃতীয় সর্বোচ্চ ২টি "সিআইবিআরআর" প্রকল্পে। এছাড়াও অন্যান্য প্রকল্প যেমন গ্রামীণ বাজার অবকাঠামো উন্নয়ন, সেতু নির্মাণ, পুকুর ও খাল উন্নয়ন, রুরাল ব্রিজেস ও উপজেলা-ইউনিয়ন সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পেও একটি করে স্কিম বাতিল করা হয়েছে।

জানা যায়, গত বছরের ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর মোহাম্মদ কামরুজ্জামান টাঙ্গাইল এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। দায়িত্ব নিয়েই তিনি প্রকল্পগুলো সরেজমিন পরিদর্শন করেন এবং কাজের ধীরগতি ও অনিয়ম লক্ষ্য করে ২৮টি স্কিম বাতিল করেন। পাশাপাশি চলমান প্রকল্পগুলোর গতি বাড়াতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেন।

উপজেলা প্রকৌশলী ও ঠিকাদারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নির্বাহী প্রকৌশলী নিয়ম মেনে এবং গুণগত মান বজায় রেখে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ সম্পন্নের বিষয়ে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন। ফলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর চাপ বাড়লেও উন্নয়ন কাজে গতি এসেছে।

স্থানীয়দের মতে, সাম্প্রতিক সময়ে এলাকা ভিত্তিক সড়ক, সেতু, কালভার্ট নির্মাণে দৃশ্যমান অগ্রগতি হচ্ছে। দিন-রাত কাজ চলছে এবং এলজিইডির কর্মকর্তারা নিয়মিত গুণগত মান যাচাই করছেন।

কিছু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিকরা জানান, পূর্বের মতো এখন আর কাজে অবহেলা বা নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের সুযোগ নেই। এতে লাভ কম হলেও প্রতিষ্ঠানের সুনাম ও লাইসেন্স রক্ষার্থে তারা কাজ সম্পন্ন করতে বাধ্য হচ্ছেন।

অন্যদিকে, বাতিল হওয়া কয়েকটি প্রকল্পের ঠিকাদাররা জানিয়েছেন, নিয়ম মেনে টেন্ডারে অংশ নিয়ে কাজ পেলেও নানা কারণে দেরি হয়েছিল। কাজ বাতিল হওয়ায় তারা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন। তারা এ বিষয়ে নির্বাহী প্রকৌশলী ও এলজিইডির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, "বাতিল হওয়া স্কিমগুলো দীর্ঘদিন ফেলে রাখা হয়েছিল। এগুলোর বিরুদ্ধে নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে এ পদক্ষেপের ফলে অন্যান্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো সক্রিয় হয়ে উঠেছে, যার ফলেই উন্নয়ন কাজের গতি বেড়েছে।"

তিনি আরও বলেন, "ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো এলজিইডির উন্নয়নে অংশীজন। কিন্তু সময় ও গুণগত মানের বিষয়ে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। নির্দিষ্ট সিডিউল অনুযায়ী কাজ সম্পন্ন করাই তাদের দায়িত্ব।"

ইএইচ

Link copied!