গোলাম কিবরিয়া সোহেল, নেত্রকোণা
মে ২৭, ২০২৫, ০৭:৫৮ পিএম
গোলাম কিবরিয়া সোহেল, নেত্রকোণা
মে ২৭, ২০২৫, ০৭:৫৮ পিএম
প্রেমের প্রস্তাবে সাড়া না দেয়ায় নেত্রকোণার বারহাট্টায় দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী মুক্তি রানী বর্মনকে (১৬) ধারালো অস্ত্র দিয়ে নৃশংস ভাবে কুপিয়ে হত্যাকাণ্ডের অভিযুক্ত বখাটে যুবক আসামি মো. কাওছার মিয়াকে (১৮) গলায় রশি দ্বারা ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড ও পঞ্চাশ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দিয়েছে আদালত।
মঙ্গলবার (২৭ মে) বিকাল ৩টার দিকে নেত্রকোণার জেলা ও দায়রা জজ মো. হাফিজুর রহমান আসামির উপস্থিতিতে এ রায় প্রদান করেন।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণীতে প্রকাশ, নেত্রকোণা জেলার বারহাট্টা উপজেলার বাউসী ইউনিয়নের প্রেম নগর গ্রামের অখিল চন্দ্র বর্মণ এর মেয়ে প্রেমনগর ছালিপুরা উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী মুক্তি রানী বর্মণ বিদ্যালয়ে আসা যাওয়ার পথে একই গ্রামের মো. শামসুদ্দিনের বখাটে পুত্র মো. কাওছার তাকে প্রেম নিবেদন করে আসছিল। মুক্তি রানী বর্মণ প্রেমের প্রস্তাবে সাড়া না দেয়ায় কাওছার ক্ষিপ্ত হয়ে ২০২৩ সালের ২রা মে দুপুর ২টা ২০ মিনিটের দিকে বিদ্যালয় ছুটির পর তার সহপাঠী ও বন্ধু বান্ধব নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে প্রেমনগর কংস নদীর পাড়ে আসা মাত্রই, কাওছার তার হাতে থাকা ধারালো দা দিয়ে মুক্তি রানি বর্মনকে খুন করার উদ্দেশ্যে নৃশংস ভাবে মাথা ও ঘাড়ে এলোপাথাড়ি কোপাতে থাকে।
এ সময় তার আর্তচিৎকার আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে কাওছার পালিয়ে যায়। মুমূর্ষু অবস্থায় মুক্তি রাণীকে প্রথমে বারহাট্টা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কর্মরত চিকিৎসক মুক্তি রানীকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। আত্মীয় স্বজনের সহযোগিতায় অ্যাম্বুল্যান্স যোগে মুক্তি রানী বর্মনকে দ্রুত ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক মুক্তি রানি বর্মনকে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় তার পিতা নিখিল চন্দ্র বর্মন বাদী হয়ে অভিযুক্ত বখাটে যুবক কাওছারকে একমাত্র আসামি করে ৩রা মে বারহাট্টা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ ঘটনার দিনই অভিযুক্ত বখাটে যুবক কাওছারকে বাড়ির পাশে জঙ্গল থেকে আটক করে।
পুলিশ তদন্ত শেষে অভিযুক্ত বখাটে যুবক কাওছারের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে। বিজ্ঞ বিচারক আদালতে উপস্থাপিত প্রয়োজনীয় কাগজপত্র এবং স্বাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহনান্তে আসামি কাওছারের বিরুদ্ধে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় উপরোক্ত রায় প্রদান করেন।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন বিজ্ঞ পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট আবুল হাসেম আর আসামিপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট দেলুয়ারা বেগম।
এ রায়ে বাদী পক্ষ সন্তোষ প্রকাশ করে রায় দ্রুত কার্যকরের অনুরোধ জানান।
আরএস