Amar Sangbad
ঢাকা মঙ্গলবার, ১০ জুন, ২০২৫,

ঈদের ছুটিতে কক্সবাজারে লাখো পর্যটকের ঢল, জমজমাট ব্যবসা-বাণিজ্য

আবদুল হালিম, কক্সবাজার

আবদুল হালিম, কক্সবাজার

জুন ৯, ২০২৫, ১১:২১ পিএম


ঈদের ছুটিতে কক্সবাজারে লাখো পর্যটকের ঢল, জমজমাট ব্যবসা-বাণিজ্য

পবিত্র ঈদুল আজহার ছুটি ঘিরে দেশের প্রধান পর্যটন নগরী কক্সবাজারে নেমেছে পর্যটকের ঢল। ঈদের দ্বিতীয় দিন থেকেই ১২০ কিলোমিটার দীর্ঘ সমুদ্রসৈকতজুড়ে লাখো মানুষ ভিড় করেছেন। সমুদ্রস্নান, সূর্যাস্ত উপভোগ, বিচ বাইক চালানো কিংবা ঘোড়ার পিঠে চড়ে আনন্দে মেতে উঠেছেন পর্যটকরা।

রোববার সকাল থেকেই কক্সবাজার শহরের প্রবেশপথগুলোতে পর্যটকবাহী বাস, মাইক্রোবাস ও ব্যক্তিগত গাড়ির দীর্ঘ সারি দেখা গেছে, ফলে সৃষ্টি হয়েছে তীব্র যানজট। শহরের লাবণী, সুগন্ধা ও কলাতলী পয়েন্টে দেখা গেছে মূল ভিড়, যেখানে প্রতিদিনই বাড়ছে মানুষের উপস্থিতি।

হোটেল-মোটেল ব্যবসায়ীদের মুখে ফিরেছে স্বস্তির হাসি। কক্সবাজার হোটেল-মোটেল মালিক সমিতির তথ্য অনুযায়ী, শহরের প্রায় ৯৫ শতাংশ আবাসিক হোটেল ও রিসোর্ট ইতিমধ্যেই পূর্ণ হয়ে গেছে। অনেক পর্যটক আগেভাগেই কক্ষ বুক করেছেন, আবার কেউ কেউ স্থানীয়ভাবে থাকার ব্যবস্থা খুঁজে নিচ্ছেন। এই পর্যটক স্রোতের প্রভাবে জমে উঠেছে রেস্টুরেন্ট, দোকানপাট, পরিবহনসহ সবধরনের ব্যবসা-বাণিজ্য।

নিরাপত্তায় তিন স্তরের নজরদারি

পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জেলা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তৎপর রয়েছে। ট্যুরিস্ট পুলিশ, র‍্যাব ও স্বেচ্ছাসেবকদের সমন্বয়ে গঠিত হয়েছে বিশেষ নজরদারি টিম। সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে বসানো হয়েছে ওয়াচ টাওয়ার, স্থাপন করা হয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরা।

ট্যুরিস্ট পুলিশের কক্সবাজার জোনের সহকারী পুলিশ সুপার নিত্যানন্দ দাস জানান, “তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। প্রতিটি গোলঘরে রয়েছে পুলিশ সদস্য, পাশাপাশি মোবাইল টিম ও সাদা পোশাকে সদস্যরাও নজরদারিতে রয়েছেন।”

জেলা প্রশাসনের পর্যটন সেলের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নাফিস ইনতেসার নাফি বলেন, “পর্যটকদের যেন কোনো ধরনের হয়রানি না হয়, সেদিকে লক্ষ্য রেখে একাধিক মোবাইল টিম মাঠে কাজ করছে। পর্যটকের নিরাপত্তা ও স্বাচ্ছন্দ্যই প্রশাসনের প্রধান লক্ষ্য।”

৫-৬ লাখ পর্যটক, কয়েকশ কোটি টাকার লেনদেন

ঈদের ছুটিতে কক্সবাজারে প্রায় ৫-৬ লাখ পর্যটক আগমন করেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এতে জেলার অর্থনীতিতে পড়েছে ইতিবাচক প্রভাব। স্থানীয় হোটেল, রেস্টুরেন্ট, দোকানপাট ও পরিবহন খাতে লেনদেন বেড়েছে কয়েকগুণ। ধারণা করা হচ্ছে, এই সময় কক্সবাজারে কয়েকশ কোটি টাকার বাণিজ্য হবে।

ঢাকা থেকে আসা এক পর্যটক বলেন, “সপরিবারে অনেক দিন ধরেই কক্সবাজারে আসার পরিকল্পনা ছিল। ভিড়ের কথা ভাবিনি, তবে পুরো পরিবেশ উপভোগ করছি। নিরাপত্তা আর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতায় সন্তুষ্ট।”

আরেক পর্যটক বলেন, “বন্ধুদের সঙ্গে ছুটি কাটাতে এখানে এসেছি। সৈকতের সৌন্দর্য, খাবার আর মানুষের প্রাণবন্ত উপস্থিতি—সব মিলিয়ে এক অনন্য অভিজ্ঞতা হচ্ছে।”

ঈদের এই বিশেষ সময়ে কক্সবাজারের সৈকতজুড়ে যে জনস্রোত দেখা যাচ্ছে, তা শুধু দেশের পর্যটনপ্রেমীদের আকর্ষণই নয়, বরং বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পের উজ্জ্বল সম্ভাবনার কথাও নতুন করে সামনে এনেছে।

ইএইচ

Link copied!