আমার সংবাদ ডেস্ক
জুলাই ৫, ২০২৫, ১২:০০ পিএম
প্রকৃতির রঙিন ছোঁয়ায় মোড়ানো আমাদের গ্রামবাংলার জলাভূমিতে দেখা মিলেছে এক আশ্চর্য সৌন্দর্যের প্রতীক—জলময়ূর।
টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার ধলাপাড়া ইউনিয়নের রানাদহ বিলে সম্প্রতি দেখা গেছে এ বিরল প্রজাতির জলজ পাখিকে। গত মঙ্গলবার বিকেলে বিলটিতে ছবি তুলতে গিয়ে জলময়ূরের দেখা পান একদল প্রকৃতিপ্রেমী।
ইংরেজিতে এ পাখির নাম Pheasant-tailed Jacana। বাংলায় একে কেউ বলেন "জলময়ূর", কেউ বা আদর করে ডাকেন লতাপাদপের রানী। বিল-ঝিল ও জলজ উদ্ভিদে ঘেরা পরিবেশে এক স্বর্গীয় আবির্ভাব যেন এই পাখির। দীর্ঘ লেজ, গাঢ় বাদামি-সাদা পালক আর চঞ্চল ভঙ্গিতে পানির উপর ভেসে চলা জলময়ূর চোখের সৌন্দর্য হয়ে হৃদয়েও রেখাপাত করে।
পাখিটির প্রজনন মৌসুম জুন থেকে সেপ্টেম্বর। এই সময় জলময়ূরদের দেখা মেলে বেশি। শাপলা, পদ্ম বা কচুরিপানার পাতা ও ডগায় বাসা বানায় তারা। বিস্ময়ের বিষয় হলো, ডিম পাড়ার পর মা পাখি বিদায় নেয়। বাবা পাখিই ডিমে তা দেয় এবং ছানা ফুটিয়ে তোলে। মাত্র ২৫ দিনের মধ্যে ডিম ফুটে বাচ্চা বের হয়, আর দেড় মাসের মাথায় ছানারা উড়তে শেখে।
ওয়াইল্ডলাইফ ফটোগ্রাফার ও পাখি গবেষক মো. কামাল হোসেন জানান, “জলময়ূর এখনো বিপন্ন তালিকায় না পড়লেও, এর সংখ্যা কমছে। এদের টিকিয়ে রাখতে জলাভূমি সংরক্ষণ ও জনসচেতনতা জরুরি।”
জীবনকাল মাত্র ৪ থেকে ৫ বছর। খাবার তালিকায় রয়েছে জলজ উদ্ভিদের কচিপাতা, বীজ, অঙ্কুর, পোকামাকড় ও শালুক।
জলময়ূর শুধু একটি পাখি নয়—এ যেন প্রকৃতির এক কবিতা। আমাদের জলাভূমির জীববৈচিত্র্যের ভারসাম্য রক্ষায় তার ভূমিকা অনন্য। প্রকৃতির এই শান্ত সুর যেন হারিয়ে না যায়, সে চেষ্টাই এখন সময়ের দাবি।
বিআরইউ