যশোর ব্যুরো
আগস্ট ৬, ২০২৫, ০৫:৩১ পিএম
যশোরে উৎসবমুখর পরিবেশে যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হয়েছে জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস।
মঙ্গলবার সকাল ৯টায় যশোর শহরের বকুলতলা মোড়ে নির্মাণাধীন জুলাই শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে দিবসের সূচনা হয়।
বিজয়ের এক বছর পূর্ণ হলেও শহীদ ও যোদ্ধাদের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য এখনো বাস্তবায়িত হয়নি বলে দাবি করেছেন শহীদ পরিবারের সদস্য ও আহতরা। তবে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক নেতারা দলমত নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন।
২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে সংগঠিত ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান বাংলাদেশের ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় ঘটনা। এই গণঅভ্যুত্থান দেশের মানুষকে মুক্তির বার্তা ও স্বাধীনতার স্বাদ এনে দিয়েছে। আত্মত্যাগকারী শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ বিএনপি, সরকারি দপ্তর, রাজনৈতিক, সামাজিক ও পেশাজীবী সংগঠনের প্রতিনিধিরা শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করেন।
পুষ্পস্তবক অর্পণের পর বর্ণাঢ্য র্যালি অনুষ্ঠিত হয়। এরপর যশোর শিল্পকলা একাডেমিতে জুলাই শহীদ ও আহত যোদ্ধাদের পরিবারের সম্মেলনে আলোচনা সভা ও সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠিত হয়।
শহীদ ও আহতরা বলেন, “বিজয়ের এক বছর পূর্ণ হলেও আমাদের দাবিগুলো পূরণ হয়নি। শহীদদের রক্তের সঙ্গে বেঈমানি করার বিরুদ্ধে আমরা কঠোর অবস্থানে আছি। আহতদের পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসা ও পুনর্বাসন দাবি করি।”
শহীদ আব্দুল্লাহর পিতা আব্দুল জব্বার বলেন, “সরকারের কাছে আমাদের দাবি এক বছরেও পূরণ হয়নি। যারা জীবন দিয়েছেন, তাদের রক্তের অপমান কেউ করতে পারবে না। শিক্ষার্থীদের আত্মত্যাগ না হলে আমরা নতুন বাংলাদেশ দেখতে পারতাম না। আমরা চাই বৈষম্যহীন ও মানবিক রাষ্ট্র গড়ে উঠুক।”
শহীদ ইমতিয়াজ জাবেরের পিতা নওশের আলী বলেন, “অনেক অভিযোগ রয়েছে। যারা জীবন দিয়েছেন তারা এমন একটি দেশে বাঁচতে চায়নি যেখানে শোষণ ও সন্ত্রাস আছে। দ্রুত জুলাই সনদ প্রকাশ ও তার ভিত্তিতে দেশ পরিচালনার দাবি করছি।”
আহত জুলাই যোদ্ধারা বলেন, “রাজনৈতিক দলগুলোর অসহযোগিতার কারণে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য পূরণ হয়নি। আমরা দলগুলোর ঐক্য ও শহীদ পরিবার ও আহতদের পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসা ও পুনর্বাসন চাই। যশোরে ৮৪ জন আহত হয়েছে, যার মধ্যে ৬ জন কর্মক্ষমতা হারিয়েছে।”
যশোর জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু বলেন, “ফ্যাসিজমবিরোধী লড়াইয়ে শিক্ষার্থীদের আত্মত্যাগের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক ধারা ফিরে এসেছে। এই বিজয় অক্ষুন্ন রাখতে দলমত নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।”
যশোর জেলা প্রশাসক মো. আজাহারুল ইসলাম বলেন, “শুরু থেকেই আমরা শহীদ ও আহতদের পাশে রয়েছি। চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের জন্য সকল সহায়তা অব্যাহত রয়েছে এবং শীঘ্রই বাস্তবায়ন করা হবে।”
ইএইচ