ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা রবিবার, ০৩ আগস্ট, ২০২৫
Amar Sangbad

এক স্বপ্নময় কীর্তনখোলা ও বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়

মোহাম্মদ এনামুল হোসেন, ববি

মোহাম্মদ এনামুল হোসেন, ববি

সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২৪, ০১:০৬ পিএম

এক স্বপ্নময় কীর্তনখোলা ও বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়

নদীমাতৃক এই দেশে প্ৰকৃতি যেন তার অপার সৌন্দর্য বিলিয়ে দিয়েছে নদীগুলোতে।

সৌন্দর্যে ঘেরা নদীগুলোর মধ্যে অন্যতম বাংলাদেশের দক্ষিণাংশে অবস্থিত কীর্তনখোলা। দক্ষিণবঙ্গের অন্যতম বিদ্যাপীঠ বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় এই নদীর কোল ঘেঁষেই অবস্থিত। বিশ্ববিদ্যালয়টির সৌন্দর্য কীর্তনখোলা যেন তার অগণন কীর্তন লীলায় বহুগুণে বাড়িয়ে তুলেছে।

অবসরে এই খরস্রোতার তীরে বৈকালিক মৃদু মন্দ হাওয়া উপভোগ করতে কিংবা হতাশার কালো আবরণে জমাটবাঁধা অন্তরের দীর্ঘশ্বাস ত্যাগ করতে প্রতিদিনই দেখা যায় বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীদের।

প্রায়ই আড্ডা-গান, পিকনিক, নৌ ভ্রমণসহ বিভিন্ন আয়োজনের দেখা মিলে নদীর কিনারায়।

কীর্তনখোলা নদীর শুরুটা বরিশাল জেলার শায়েস্তাবাদ থেকে।

গজালিয়ার কাছে গিয়ে এটি পতিত হয়েছে গাবখান খালে। নদীটির মোট দৈর্ঘ্য ১৬০ কিলোমিটার। অতি প্রাচীনকালে গঙ্গার তিন প্রবাহের (নলিনী, হলদিনী ও পাবনী) অন্যতম পাবনী। এটি প্রাচীন পদ্মার সঙ্গে মিলিত হয়ে (মিলিত ধারা সুগন্ধা) আন্দার খাল বা আড়িয়াল খাঁ নামে ফরিদপুরের দক্ষিণে মাদারীপুর হয়ে কয়েকটি শাখায় বিভক্ত হয়ে বরিশালের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়। পথে বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন নামে পরিচিতি নিয়ে হরিণঘাটা নামে বঙ্গোপসাগরে পতিত হয়েছে।

স্টিমারে করে এই নদীর বুক চিরে চললে দেখা মেলে সবুজ বন-বনানীর। নদীর পাড়ে বিশাল নৌ বন্দর, তাতে ভিড় করে রাখা সুবিশাল নৌ বহর, কীর্তনখোলার বুকে ঢেউ তুলে ছুটে চলে তার গন্তব্যে। ইঞ্জিনের শব্দে দু -কূল ছাপিয়ে নদীর বুক চিরে স্টিমারগুলো নদীর বুক জুড়ে প্রতিনিয়তই চলে। গোধূলিতে এক অপরূপ চিত্রে চিত্রায়িত হয় এই স্রোতস্বিনী। আকাশের বিশালতায় ডানা মেলা পাখি, দূর থেকে দপদপিয়া সেতুতে চলমান যানবাহন,  সন্ধ্যা নামার মুহূর্তে শিশু-কিশোর আর জেলে কিংবা শ্রমিকদের স্নানের দৃশ্য নদীর সৌন্দর্যকে আরো বৃদ্ধি করে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মরিয়ম সারা বলেন, কীর্তনখোলা এবং বরিশাল যেন এক সুতোয় গাঁথা একটি মালা। এখানকার প্রত্যেকটা জনজীবনের সাথে দ্রবীভূত হয়ে আছে এই নদী। পড়ন্ত বিকেলে মন ছুটে যায় কীর্তনখোলার পাড়ে, যেখানে স্রোত গিয়ে মিশে যাচ্ছে সূর্যের নরম আলোয়। এই সৌন্দর্য গলে পরে তার প্রতিচ্ছায়া হয়ে। এ সৌন্দর্যে গাঁ ভাসিয়ে দিয়ে অনায়াসে করা যায় স্মৃতিচারণ অথবা সহজেই হারিয়ে যাওয়া যায় ভালো লাগার এক মুহূর্তে। কিংবা ভীষণ মন খারাপে এমন এক পড়ন্ত বিকেলের লাল আভায়  নদীতে পা ভিজিয়ে ভাসিয়ে দেয়া যায় সব গ্লানি। শিল্পীর তুলি বা কবি-লেখকের কলম অথবা কোনো চিত্রগ্রাহক লুফে নেয় এই সৌন্দর্য, তুলে ধরে তা গোটা জাতির সামনে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ইনামুল হক জানান, শতাব্দী ধরে মানুষের বসবাসের কেন্দ্রবিন্দু পানি। পানির উৎসের কাছেই গড়ে উঠেছে সভ্যতার শহর সমূহ। প্রাচ্যের ভ্যানিস খ্যাত আজকের বরিশাল নগরী গড়ে উঠেছে কীর্তনখোলা নদীর পাড়ে। সেকালের স্টিমার আর একালের বিলাসবহুল লঞ্চগুলো ছুটে চলেছে কীর্তনখোলার বুক চিরে। রাতের কলকলানি শব্দের ভিতরে নীরবে দানবের মত লন্সগুলো কারো ভবিষ্যৎ বয়ে নিয়ে চলে। কবি জীবনানন্দ দাশের কীর্তনখোলার তীর জুড়ে মেঠো পথে আলপনা আঁকা রূপসি গ্রাম বয়ে চলেছে। কীর্তনখোলার বুকে বয়ে চলা নৌকার মাঝির ভাটিয়ালি গানের ভিতরে জীবনানন্দ রূপসি নারীর কীর্তনখোলার পাড়ে এসে পানি নেওয়ার হাজার বছরের পুরাণের গান খুঁজে পান।কীর্তনখোলায় খেলা করে রুপালি ইলিশ, যা জেলেদের জীবনধারণের সঙ্গী হয়ে আছে।

উল্লেখ্য, প্রাচীন বরিশালে সনাতন ধর্মীয় মানুষদের বসবাস বেশি ছিল। ফলশ্রুতিতে এখানে কৃষ্ণলীলার কাহিনি নিয়ে কীর্তনীয়রা গানে মেতে থাকতেন। লোকমুখে প্রচলিত রয়েছে,  প্রাচীনকালে নদীর পার ঘেঁষেই ছিল শহরের সবচেয়ে পুরোনো হাট। সেখানে কীর্তনের উৎসব হতো। সেই থেকে এই এই নদীটির নাম কীর্তনখোলা। মতান্তরে, নদীর পাড়ের হাটখোলায় স্থায়ীভাবে কীর্তনের দল বসবাস করার কারণে এর নাম কীর্তনখোলা।তবে নদীর নামকরণের সঙ্গে কীর্তনের বা কীর্তনীয়দের পাশাপাশি রাধা-কৃষ্ণের অমর প্রেমের যে গল্প মিশে আছে তা নদীর নাম শুনেই বোঝা যায়।

এছাড়াও কীর্তনখোলা নদীর উপরে বরিশাল নৌ বন্দর অবস্থিত, যেটি বর্তমানে বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম নদীবন্দর।

ইএইচ

Link copied!