আন্তর্জাতিক ডেস্ক
মে ১৯, ২০২৫, ১১:১৪ এএম
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
মে ১৯, ২০২৫, ১১:১৪ এএম
বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাকসহ কিছু নির্দিষ্ট পণ্যের আমদানিতে স্থলবন্দর ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে ভারত। সম্প্রতি দেশটির বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের জারি করা এক নির্দেশনায় বলা হয়েছে, এসব পণ্য এখন থেকে শুধুমাত্র নাভাশেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর দিয়ে আমদানি করা যাবে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি, বার্তাসংস্থা পিটিআইয়ের বরাত দিয়ে রোববার (১৮ মে) এক প্রতিবেদনে জানায়, এই নিষেধাজ্ঞার ফলে পশ্চিমবঙ্গসহ সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলোতে কর্মসংস্থান ও পরিবহন খাতে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।
পশ্চিমবঙ্গের পেট্রাপোল ক্লিয়ারিং এজেন্টস স্টাফ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের (পিসিএএসডব্লিউএ) সদস্য কার্তিক চক্রবর্তী বলেন, “ভারত তৃতীয় দেশের ট্রান্সশিপমেন্ট নিষিদ্ধ করার পরেও প্রতিদিন ২০-৩০টি ট্রাকে তৈরি পোশাক আসত। এই নতুন নির্দেশনার ফলে তা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাবে। আগে যখন ট্রান্সশিপমেন্ট চালু ছিল, তখন প্রতিদিন ৬০-৮০টি ট্রাক পোশাক নিয়ে প্রবেশ করত।”
তিনি আরও জানান, এ নিষেধাজ্ঞার ফলে সীমান্ত অঞ্চলের চালক, হেলপার ও অন্যান্য লজিস্টিকস কর্মীরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।
ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সীমান্ত রাজ্যে কিছু প্রভাব পড়লেও জাতীয় স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিয়ে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তাদের মতে, বাংলাদেশ থেকে আসা সস্তা তৈরি পোশাক ভারতের খুচরা বাজারে ঢুকে পড়ায় দেশীয় শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, যা অনেক ক্ষেত্রে ‘ডাম্পিং’ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বাণিজ্য বিশেষজ্ঞ বলেন, “এই পদক্ষেপ কৌশলগত সিদ্ধান্ত হতে পারে, যার পেছনে ভূ-রাজনৈতিক বাস্তবতা, যেমন: ঢাকা-ইসলামাবাদ সম্পর্ক, প্রভাব ফেলতে পারে। অর্থনৈতিক কিছু ক্ষতি হলেও জাতীয় স্বার্থকে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে।”
নির্দেশিকায় আরও বলা হয়েছে, তৈরি পোশাক ছাড়াও ফলমূল, ফল-স্বাদযুক্ত পানীয়, কার্বনেটেড ড্রিংকস, প্রক্রিয়াজাত খাবার (যেমন: বিস্কুট, চিপস, কনফেকশনারি), তুলা ও তুলা বর্জ্য, প্লাস্টিকজাত ও পিভিসি পণ্য, ডাইস, প্লাস্টিসাইজার, গ্র্যানুলস এবং কাঠের আসবাবের আমদানিও নির্দিষ্ট স্থলবন্দর দিয়ে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এই নিষেধাজ্ঞা আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরামের এলসিএস এবং পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্ধা ও ফুলবাড়ি এলসিএসের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।
কার্তিক চক্রবর্তীর মতে, সমুদ্রপথে পণ্য আনতে ১৫ দিন সময় লাগে, যেখানে স্থলপথে লাগে মাত্র ৩-৪ দিন। ফলে ব্যবসায়ীদের কাছে স্থলপথই বেশি লাভজনক ছিল। এখন এই বাধায় তাদের ক্ষতির মুখে পড়তে হবে।
ইএইচ