Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৪,

পটুয়া কামরুল হাসানের জীবন ও কর্ম শীর্ষক সেমিনার ও আলোচনা সভা

মো. মাসুম বিল্লাহ

ডিসেম্বর ২, ২০২৩, ০৭:৫০ পিএম


পটুয়া কামরুল হাসানের জীবন ও কর্ম শীর্ষক সেমিনার ও আলোচনা সভা

বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে ‘পটুয়া কামরুল হাসানের জীবন ও কর্ম’ শীর্ষক সেমিনার ও আলোচনা সভার আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিশিষ্ট চিত্রশিল্পী ও গবেষক শিল্পী শাওন আকন্দ। আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ড. সৈয়দ আজিজুল হক। স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক মোঃ কামরুজ্জামান। সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর পর্ষদের সভাপতি অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক।  

আলোচনায় পটুয়া কামরুল হাসানের জীবনের নানাদিক বিশ্লেষণ করা হয়। কামরুল হাসান প্রখ্যাত বাংলাদেশি চিত্রশিল্পী। প্রকৃত নাম আবু শরাফ মোহাম্মদ কামরুল হাসান। ১৯২১ সালের ২ ডিসেম্বর কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন এবং তাঁর পৈতৃক নিবাস ছিল পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার নারেঙ্গা গ্রামে।

তিনি ছিলেন বাংলাদেশের আধুনিক শিল্পকলা চর্চার অন্যতম পথিকৃৎ। চিত্রশিল্পী হয়েও ‘পটুয়া’ নামে পরিচিত হতে পছন্দ করতেন। কামরুল হাসানের শিক্ষাজীবন কাটে কলকাতায়। তিনি কলকাতার মডেল এম ই স্কুল এবং কলকাতা মাদরাসায় প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করেন। ১৯৩৮ সালে কলকাতার গভর্নমেন্ট স্কুল অব আর্টসে ভর্তি হন এবং ১৯৪৭ সালে চিত্রকলায় স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন।

দেশ ভাগের পর তিনি ঢাকায় চলে আসেন এবং ১৯৪৮ সালে ‘গভর্নমেন্ট ইনস্টিটিউট অব আর্টস’ প্রতিষ্ঠায় শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের অন্যতম সহযোগী ছিলেন কামরুল হাসান। কামরুল হাসানের চিত্রকলার প্রধান উপাদান নর-নারী, পশুপাখি, সাপ ও প্রকৃতি। জীবনের শুরু থেকেই শিল্পচর্চার পাশাপাশি সামাজিক ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত থাকার মাধ্যমে নিজেকে ব্যতিক্রমী করে তোলে।

বাংলাদেশের স্বাধিকার ও অসহযোগ আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ এবং স্বাধীনতা–পরবর্তী স্বৈরশাসনবিরোধী গণতান্ত্রিক সব সংগ্রামে তিনি ছিলেন সক্রিয়। স্বাধীনতাযুদ্ধের সময়ে জেনারেল ইয়াহিয়ার মুখের ছবি দিয়ে আঁকা ‘এই জানোয়ারদের হত্যা করতে হবে’ পোস্টারটি জনপ্রিয় হয়ে উঠে। তাঁর চিত্রকর্মে স্বৈরশাসকদের অত্যাচার, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও হানাদার পাকিস্তানি বাহিনীর গণহত্যার চিত্র সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন।

এছাড়াও তিনি বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার চূড়ান্ত নকশা ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সরকারি মনোগ্রাম তৈরি করার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। কামরুল হাসান ছিলেন হাজারো গুণে গুণান্বিত মানুষ। তাঁর চিত্রকর্ম একদিকে যেমন ছিল বাস্তববাদী, তেমনি ছিল বিদ্রোহী মুখর। তাঁর চিত্রের বৈশিষ্ট্য অনেকের থেকে আলাদা ছিল বিধায় আজও তাঁর চিত্রকর্ম সকল জায়গায় উচ্চ মর্যাদার আসন লাভ করে।  

এইচআর

Link copied!