আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আগস্ট ৭, ২০২৫, ০৯:২১ এএম
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় খাদ্যের অপেক্ষায় থাকা মানুষের ভিড়ের ওপর উল্টে পড়ে একটি ত্রাণবাহী ট্রাক, এতে কমপক্ষে ২৫ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এই ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও অনেকে।
বুধবার দিনের বিভিন্ন সময়ে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় পুরো গাজাজুড়ে আরও ২৪ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।
ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা ওয়াফার বরাতে জানা যায়, সেনাবাহিনীর চাপের মুখে ট্রাকটি একটি ঝুঁকিপূর্ণ রাস্তায় যেতে বাধ্য হয় এবং সেখানেই দুর্ঘটনাটি ঘটে। তবে ঠিক কোথায় এই ঘটনা ঘটেছে, তা স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়নি।
চিকিৎসা সূত্র জানায়, দক্ষিণ গাজার রাফাহর পশ্চিমাংশে ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রের কাছে অপেক্ষমাণ অবস্থায় ইসরায়েলি গুলিতে পাঁচ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। মধ্য গাজার নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরে একটি অ্যাপার্টমেন্টে বিমান হামলায় একই পরিবারের পাঁচ সদস্য প্রাণ হারান এবং অন্তত ২০ জন আহত হন।
এছাড়া গাজা শহরে ড্রোন হামলায় ছয় মাস বয়সী এক শিশু নিহত হয়েছে, সে ত্রাণশিবিরে ছিল। একই শহরের দুটি বাড়িতে আরও হামলায় অন্তত আটজন হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে শিশুও রয়েছে।
মধ্য গাজার দেইর আল-বালাহ অঞ্চলে গুলিবর্ষণে একটি আশ্রয়শিবিরে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে।
আনাদোলু বলছে, গত ১৮ বছর ধরে গাজা অবরোধের মুখে রয়েছে, আর চলতি বছরের ২ মার্চ থেকে ইসরায়েল সব প্রবেশপথ বন্ধ করে দিয়েছে, ফলে মানবিক ত্রাণ প্রবেশে বাধা সৃষ্টি হচ্ছে। এতে ২৪ লাখ মানুষের জীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
গাজা সরকার জানায়, ২৭ জুলাই থেকে মাত্র ৮৪৩টি ত্রাণ ট্রাক প্রবেশ করতে পেরেছে, যেখানে প্রতিদিন প্রায় ৬ হাজার ট্রাক প্রয়োজন।
ফিলিস্তিনি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চলতি বছরের ২৭ মে থেকে এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র-চালিত ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রগুলোর আশপাশে ত্রাণের আশায় আসা অন্তত ১ হাজার ৫৬৮ জন নিহত এবং ১১ হাজার ২৩০ জন আহত হয়েছেন।
গাজা দখলে সরকারের নির্দেশ পালন করবে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী
গাজায় বিমান থেকে ফেলা ত্রাণের বাক্স পড়ে ফিলিস্তিনি নার্স নিহত
গাজার কর্তৃপক্ষ ইসরায়েলি সেনাবাহিনীকে ক্ষুধা ও বিশৃঙ্খলা তৈরি করার জন্য দায়ী করছে। তাদের অভিযোগ, ইচ্ছাকৃতভাবে নিরাপত্তা না দিয়ে জনগণকে ক্ষতিগ্রস্ত ও বোমা পড়া অনুন্নত রাস্তায় ত্রাণ নিতে বাধ্য করা হচ্ছে, যেখানে ইতোমধ্যে দুর্ভিক্ষে ভোগা মানুষের ভিড় রয়েছে।
অনেকেই ইসরায়েলের তৈরি ত্রাণ বিতরণ ব্যবস্থাকে ক্ষুধার্ত মানুষের জন্য মৃত্যুকূপ বলেও সমালোচনা করেছেন।
২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলের সামরিক অভিযানে এ পর্যন্ত গাজায় ৬১ হাজার ১০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। এই যুদ্ধের ফলে পুরো উপত্যকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে এবং দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে।
জেএইচআর