Amar Sangbad
ঢাকা বুধবার, ০১ মে, ২০২৪,

বাংলাদেশে রাজনৈতিক সংকট চলছে: ইসলামী আন্দোলন

নিজস্ব প্রতিবেদক:

নিজস্ব প্রতিবেদক:

ফেব্রুয়ারি ৭, ২০২৪, ১২:৩০ পিএম


বাংলাদেশে রাজনৈতিক সংকট চলছে: ইসলামী আন্দোলন

বাংলাদেশে রাজনৈতিক সংকট চলছে বলে জানিয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম।

আজ ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ আয়োজিত ‘বহুমুখী সংকট উদঘাটন ও নিরসনকল্পে কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে সভাপতির উদ্ভোধনী বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান।

তিনি বলেন,দেশের মানুষের যাবতীয় অধিকার গলা টিপে হত্যা করা হয়েছে। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে আক্ষরিক অর্থেই হত্যা করা হয়েছে। রাজনীতিকে সহিংসতা ও নোংরামির চূড়ান্ত স্তরে নিয়ে রাজনীতিকে দূষিত ও বিষাক্ত  করা হয়েছে। 
আর্থিক খাতকে আইন করে লুটেরাদের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে। জ্বালানি খাত বর্গীদের হাতে বর্গা দেয়া হয়েছে। উৎপাদন ও বিপণন ব্যবস্থাকে চাঁদাবাজদের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে। দেশে এক ধরণের স্বৈরতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। সংবিধান, আইন ও উন্নয়নের ভুয়া আবরণে একক ব্যক্তির এই শাসন ক্ষমতা বাকশালের আধুনিক সংস্করণ হয়ে জাতির ওপরে জগদ্দল পাথরের ন্যায় চেপে বসেছে।

কোন জাতির পথচলাই মসৃণ হয় না, উত্থান-পতন থাকেই। বিপদ-আপদ ও সংগ্রামের মধ্য দিয়ে জাতি এগিয়ে যায়। বর্তমানকে সুন্দর করে, ভবিষ্যৎ নির্মাণ করে। কিন্তু বাংলাদেশের বর্তমান সংকট বহুমাত্রিক ও জটিল। যা অতীতের যে কোন সংকটের চেয়ে ভয়াবহ। জাতির এই দুঃসময়ে আমরা নিশ্চুপ থাকতে পারি না। হাল ছেড়ে দিতে পারি না। এই দায়িত্বের তাকিদেই আজকের এই বৈঠক।

রেজাউল বলেন,বহুমুখী সংকটের কেন্দ্রে রয়েছে রাজনৈতিক সংকট। আর রাজনৈতিক সংকটের কেন্দ্রে রয়েছে নির্বাচন নিয়ে সৃষ্ট সংকট। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নির্বাচন নিয়ে নয়-ছয় করার দৃষ্টান্ত ছিলো। তবে সময়ের আবর্তনে বর্তমানকালে নির্বাচন নিয়ে নয়-ছয় গুটিকয়েক নিন্মস্তরের স্বৈরাচার ছাড়া আর কেউ করে না। কিন্তু এই সরকার যা করেছে তা এক অনন্য দৃষ্টান্ত। মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নেয়ার নোংরা খেলায় এই সরকার যে সৃষ্টিশীলতা দেখিয়েছে তার নজীর মেলা ভার।

২০১৪ সালে বিনা ভোটে, ২০১৮ সালে মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে রাতের ভোটে আর ২০২৪ সালে কৃত্রিম প্রার্থী দিয়ে নির্বাচন করলো। নির্বাচন ব্যবস্থাকে উপেক্ষা করে স্বৈরতন্ত্র প্রতিষ্ঠা বা নির্বাচন ব্যবস্থাকে লাভ করে বিজয়ী হওয়া এক জিনিস; আর পুরো নির্বাচন ব্যবস্থাকেই প্রতারণা, মিথ্যা, কৃত্রিমতা ও জালিয়াতি-পূর্ণ করা আরেক কথা। এই সরকার তাই করেছে। খারাপ মানুষ ভালো হয় কিন্তু প্রতারক ও মিথ্যাবাদী সহজে ভালো হয় না। এই সরকার নির্বাচন ব্যবস্থাকে সেই জায়গায় নিয়ে গেছে।
নির্বাচন নিয়ে কি কি হয়েছে তা উল্লেখ করে চর্বিত চর্বণ করতে চাই না। তথাপিও এই সরকার পুরো নির্বাচন ব্যবস্থাকে যেভাবে প্রতারণা, কৃত্রিমতা ও মিথ্যাময় করে ফেলেছে তাতে আগামীর বাংলাদেশ নিয়ে আমাদের শঙ্কিত হওয়ার যথেষ্ট কারণ আছে।

লিখিত বক্তব্য তিনি আরও বলেন,রাজনীতি নিয়ে কথা বলার সাথে এটাও সংযুক্ত করা বাঞ্ছনীয় হবে যে, দেশের সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানসহ রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে নগ্নভাবে দলীয়করণ করা হয়েছে। সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানসমূহের প্রধানদের কথাবার্তার সাথে দলীয় নেতাদের কথাবার্তায় কোন পার্থক্য দেখা যায় না। কারাগারে আটক ব্যক্তির মুক্তির মতো বিচারিক বিষয় যে এখন সরকারের নির্বাহী বিভাগের অধীন তা সদ্য সাবেক কৃষিমন্ত্রীর কথাতেই স্পষ্ট।

সার্বিক দিক বিবেচনায় দেশের রাজনীতি ক্রমশ খারাপের দিকে যাচ্ছে। একদলীয় ও একক ব্যক্তিকেন্দ্রিক স্বৈরাচার সাংবিধানিক ও আইনি ধূয়া তুলে প্রতিষ্ঠিত হয়ে যাচ্ছে। এমত অবস্থায় আমরা যারা দেশকে নিয়ে ভাবি, দেশের মানুষের কল্যাণ চিন্তা করি তাদের জন্য দেশপ্রেমিক জনতাকে ঐক্যবদ্ধ করে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে দুর্বার আন্দোলনের মাধ্যমে জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।

ইসলাম পন্থী এই নেতা বলেন,বর্তমান সময়ে দুর্নীতি আমাদের রাজনৈতিক ও আমলাতান্ত্রিক কাঠামোর রন্ধ্রে রন্ধ্রে সংক্রমিত দুরারোগ্য ক্যান্সারের মতো বিস্তার লাভ করছে। আমাদের দৈনন্দিন জীবনের সর্বত্র এ সমাজব্যাধি শক্ত শেকড় গেড়ে বসেছে। পরিতাপের বিষয় হলো- এই যে গুটিকয়েক ব্যক্তি ও দুই একটি সমাজ প্রতিষ্ঠান ছাড়া সুশীল সমাজের সদস্যরা কেউ প্রকাশ্যে এ কথা স্বীকার করছেন না যে আমাদের গোটা সমাজ অসম্ভব রকমের দুর্নীতিতে ছেয়ে গেছে। আমরা এক মারাত্মক সামাজিক ব্যাধিতে ভুগছি। অনেক নামীদামী সংগঠন ও বুদ্ধিজীবী নামধারী সুশীল সমাজের সদস্যরা আজকাল মুখে কুলুপ এঁটে বসে আছেন। এটা বিস্ময়কর বলে মনে হয়। তাতে ধরে নেওয়া যায় যে, এসব ব্যক্তি ও সমাজ প্রতিষ্ঠানগুলো সমাজে দুর্নীতি ও অন্যায়ের সুবিধাভোগী।

এআর/বিআরইউ

Link copied!