নিজস্ব প্রতিবেদক
মে ২০, ২০২৫, ১১:০২ পিএম
নিজস্ব প্রতিবেদক
মে ২০, ২০২৫, ১১:০২ পিএম
স্থানীয় সরকার নির্বাচন না হওয়ায় বিগত 'অবৈধ নির্বাচনের' প্রার্থীরা আদালতে গিয়ে সংকট তৈরি করেছেন—এমন মন্তব্য করে এনসিপি (ন্যাশনাল কনসেনসাস পার্টি) বলেছে, এই সংকট নিরসনে অবিলম্বে স্থানীয় সরকার নির্বাচন আয়োজন করা প্রয়োজন। তবে তারা অভিযোগ করেছে, বর্তমান নির্বাচন কমিশন একটি ‘ফ্যাসিবাদী’ আইনের ভিত্তিতে গঠিত এবং কমিশন পক্ষপাতমূলক আচরণ করছে। এই প্রেক্ষাপটে ইসি পুনর্গঠন ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনের দাবিতে বুধবার সকাল ১১টায় আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দিয়েছে সংগঠনটি।
মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর বাংলা মোটরের রূপায়ন ট্রেড সেন্টারে দলের অস্থায়ী কার্যালয়ে আয়োজিত এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম এবং সদস্যসচিব আখতার হোসেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, “আমরা মনে করি, বর্তমানে যে সংকটময় পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তা থেকে উত্তরণে দ্রুত স্থানীয় সরকার নির্বাচন দেওয়া উচিত। তবে বর্তমান নির্বাচন কমিশনের ওপর আমাদের আস্থা নেই। কমিশন পক্ষপাতমূলক আচরণ করছে এবং আমাদের প্রস্তাবিত সংস্কারগুলো আমলে নেয়নি। তাই আমরা কমিশনের পুনর্গঠনের দাবি জানাচ্ছি।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা পূর্বের সকল নির্বাচনকে অবৈধ বলেছি। সেসব সময়ে আমরা ফ্যাসিবাদী শক্তিগুলোর অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত নির্বাচনগুলো প্রত্যাখ্যান করেছি। এখন যদি কেউ নিজেকে বৈধ প্রার্থী দাবি করেন, সেটা দ্বিচারিতা হবে। তাই স্থানীয় সরকার নির্বাচনই সমাধানের পথ।”
নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, “৫ আগস্টের পর নির্বাচনকে পরিকল্পিতভাবে দেশের সবকিছুর কেন্দ্রবিন্দুতে নিয়ে আসা হয়েছে। আমরা কখনো নির্বাচনের বিরোধিতা করিনি, বরং আমরা বিচার ও সংস্কারের কথা বলেছি। আমরা গণপরিষদ নির্বাচনের কথাও বলছি। প্রয়োজনে জাতীয় ও গণপরিষদ নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন আয়োজন করা যেতে পারে।”
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে আখতার হোসেন বলেন, “২০২০ সালে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের অবৈধ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বর্তমান জটিল রাজনৈতিক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। ইশরাক হোসেন বনাম শেখ ফজলে নূর তাপস মামলায় নির্বাচন কমিশন বিবাদী হওয়া সত্ত্বেও আদালতে সঠিকভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেনি। এতে একতরফা রায় এসেছে এবং কমিশনের ভূমিকা পক্ষপাতমূলক বলেই প্রতীয়মান হয়।”
তিনি আরও বলেন, “রায় ঘোষণার আগেই ২০২৪ সালের ১৯ আগস্ট ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে প্রশাসক নিয়োগ দিয়ে পুরো মামলাটিকে কার্যত অকার্যকর করা হয়েছে। পরে গেজেট প্রকাশের ক্ষেত্রে আইন মন্ত্রণালয়ের মতামতের আগেই রাতারাতি গেজেট জারি করা হয়, যা কমিশনের পক্ষপাতদুষ্ট আচরণের প্রমাণ।”
আখতার বলেন, “বর্তমান কমিশন মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের নির্বাচনে অংশগ্রহণ ঠেকানোর প্রস্তাবও নাকচ করেছে। এ কারণে তাদের ওপর জনগণের আস্থা রাখা সম্ভব নয়।”
তিনি আরও বলেন, “ইশরাক হোসেনের মামলাকে নজির হিসেবে ব্যবহার করে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিতর্কিত নির্বাচনের প্রার্থীরা আদালতের দ্বারস্থ হচ্ছেন, যার ফলে জটিল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এ থেকে উত্তরণে দ্রুত স্থানীয় সরকার নির্বাচন ছাড়া অন্য কোনো পথ নেই। তবে একটি পক্ষপাতদুষ্ট ও ফ্যাসিবাদী আইনে গঠিত কমিশনের পক্ষে এই নির্বাচন আয়োজন সম্ভব নয়।”
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন এনসিপির মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব, সিনিয়র যুগ্ম সদস্যসচিব ডা. তাসনীম জারা প্রমুখ।
ইএইচ