নিজস্ব প্রতিবেদক
জুন ৯, ২০২৫, ১১:০৮ পিএম
নিজস্ব প্রতিবেদক
জুন ৯, ২০২৫, ১১:০৮ পিএম
রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মাওলা রনি বলেছেন, “রাষ্ট্রপতি হামিদ আমাদের শিক্ষা দিয়েছেন—সবাই পালায় না, পালিয়ে বাঁচেও না। তিনি কোনো উচ্চশিক্ষিত, পিএইচডিধারী ব্যক্তি নন। তিনি আমাদের হামিদ ভাই—ভাটি অঞ্চলের মানুষ, সাধারণ ভাত-ভর্তা খাওয়া মানুষ। সেই শেকড়ের মানুষটি সারাজীবন নীতি ও আদর্শ আঁকড়ে ধরে থেকেছেন।”
সোমবার রাতে এক ভিডিও বার্তায় এসব মন্তব্য করেন তিনি। ভিডিওর শুরুতেই তিনি ব্যাখ্যা করেন, কেন তিনি আব্দুল হামিদকে এখনো “রাষ্ট্রপতি” বলেই সম্বোধন করছেন।
রনি বলেন, “রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ যখন বিদেশে গেলেন এবং আবার ফিরে এলেন, এই সময়ের মধ্যে যা ঘটেছে, তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। তবে তার আগে বলি, আমি কেন তাঁকে এখনো ‘রাষ্ট্রপতি হামিদ’ বলছি, কিংবা কেন তাঁকে ‘সাবেক রাষ্ট্রপতি’ বলিনি।”
তিনি বলেন, “আমি দীর্ঘদিন পশ্চিমা দেশে ছিলাম। রাষ্ট্র, অর্থনীতি, রাজনীতি নিয়ে পড়াশোনার সুযোগ হয়েছে। সেই দেশের সরকারি স্কলারশিপে পড়েছি। সেখানে দেখেছি, জনপ্রতিনিধিদের সম্মান সবসময় অক্ষুণ্ণ রাখা হয়। প্রেসিডেন্ট বা সিনেটরের পদ থেকে অবসর নেওয়ার পরও তাঁদের প্রেসিডেন্ট বা সিনেটর বলেই সম্বোধন করা হয়। যেমন ক্লিনটন বা বুশ—তাঁরা এখন আর প্রেসিডেন্ট নন, তবুও সবাই তাঁদের প্রেসিডেন্ট বলেই ডাকেন।”
তিনি আরও বলেন, “কিন্তু আমাদের দেশে যখন কেউ ক্ষমতায় থাকেন, তখন সবাই তাঁর পায়ের নিচে পড়ে থাকে; আর ক্ষমতা হারানোর পর তাঁকে তাচ্ছিল্য করা হয়, অপমান করা হয়। আমরা যেমনই হই না কেন, যদি গণতন্ত্রের মূল্যবোধে বিশ্বাস করি, তাহলে অতীতের প্রেসিডেন্টদেরও সম্মান করতে হবে—খন্দকার মোশতাক, জিয়াউর রহমান, শেখ মুজিবুর রহমান—তাঁদের সবাইকে যথাযোগ্য মর্যাদায় স্মরণ করতে হবে। সেই সংস্কৃতির প্রভাবেই আমি আজ জনাব আব্দুল হামিদকে ‘রাষ্ট্রপতি হামিদ’ বলেছি।”
গোলাম মাওলা রনি বলেন, “তিনি ছিলেন সাধারণ মানুষের রাষ্ট্রপতি। একজন দিনমজুর কিংবা রিকশাচালকও তাঁর মধ্যে নিজের প্রতিনিধি দেখতে পেতেন। তাঁর ৬০ বছরের রাজনৈতিক জীবনে আমরা কখনোই স্মরণ করিনি যে তিনি একজন অসুস্থ বৃদ্ধ, যিনি চিকিৎসার প্রয়োজনে দেশ ছেড়েছিলেন।”
রনি বলেন, “আমরা তাঁকে গালিগালাজ করেছি, পালিয়ে যাওয়া অভিযুক্ত করেছি—যেন তিনি কোনো দস্যু বা গডফাদার! অথচ তিনি আমাদেরই রাষ্ট্রপতি, আমাদেরই স্পিকার, আমাদেরই নির্বাচিত প্রতিনিধি। তিনি হুইলচেয়ারে বসে প্লেনে উঠেছেন, লুঙ্গি পরে ফিরেছেন। এতকিছুর পরও আমরা আমাদের মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি জাগ্রত করিনি।”
তিনি মন্তব্য করেন, “এই মানসিকতার কারণেই আমরা দিনের পর দিন খারাপ শাসকের দ্বারা শাসিত হচ্ছি। কারণ আমরা সত্যের পক্ষে দাঁড়াতে শিখিনি। বাতাস যেদিকে, আমরা সেদিকেই পাল তুলে চলি।”
ইএইচ