ধর্ম ডেস্ক
জুন ৩, ২০২৫, ০৪:০৬ পিএম
ধর্ম ডেস্ক
জুন ৩, ২০২৫, ০৪:০৬ পিএম
কোরবানির ঈদের সময় স্ত্রী সহবাস বিষয়ে অনেকের মধ্যে বিভ্রান্তি রয়েছে। কেউ কেউ ধারণা করেন, ঈদের দিন ও পরবর্তী দুই দিনে স্ত্রী সহবাস করা নিষিদ্ধ। কিন্তু ইসলামী শরিয়তের দৃষ্টিতে এই ধারণা সঠিক নয়।
ঈদের দিনে স্ত্রী সহবাসের বিধান
ইসলামী বিধান অনুযায়ী, ঈদের রাত ও দিনসহ বছরের যেকোনো সময়ে স্ত্রী সহবাস বৈধ, যতক্ষণ তা শরিয়তের অন্য কোনো নিষিদ্ধ অবস্থার সঙ্গে সম্পর্কিত না হয়। শুধু রমজান মাসে দিনের বেলায় রোজা অবস্থায় স্ত্রী সহবাস হারাম। এছাড়া আরও তিনটি অবস্থায় সহবাস নিষিদ্ধ, তা হলো—
১. হজ বা ওমরার সময় ইহরাম অবস্থায়।
২. স্ত্রীর মাসিক (হায়েজ) চলাকালীন।
৩. সন্তান জন্মের পর নিফাসের (প্রসবজনিত রক্তস্রাব) সময়।
ইহরাম অবস্থায় সহবাস
হজ ও ওমরার জন্য ইহরাম বাধ্যতামূলক। ইহরাম গ্রহণের পর দাম্পত্য সম্পর্কসহ কিছু কার্যক্রম ইসলামী শরিয়ত নিষিদ্ধ করেছে। ইহরাম অবস্থায় সহবাস, সুগন্ধি ব্যবহার, চুল ও নখ কাটা, সেলাই করা কাপড় পরা এবং শিকার করা নিষিদ্ধ।
হায়েজ অবস্থায় বিধান
হায়েজ হলো নারীদের প্রাকৃতিক ঋতুস্রাব, যা সাধারণত ৯ থেকে ৫৫ বছর বয়স পর্যন্ত হয়ে থাকে। তিন দিন তিন রাতের কম হলে এবং দশ দিন দশ রাতের বেশি হলে তা হায়েজ হিসেবে গণ্য হয় না। এই সময় স্ত্রীর সঙ্গে সহবাস হারাম, তবে অন্যসব স্বাভাবিক সম্পর্ক রাখা যাবে।
নিফাস অবস্থায় সহবাস
সন্তান জন্মের পর যে রক্তস্রাব হয় তাকে নিফাস বলা হয়। এর সর্বোচ্চ সময়কাল ৪০ দিন। এই সময় সহবাস নিষিদ্ধ। এমনকি কোনো রক্তস্রাব না হলেও, সন্তান জন্মের পর স্ত্রীর জন্য গোসল ফরজ হয়।
গর্ভপাতের ক্ষেত্রে যদি ভ্রূণের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ গঠিত হয়ে থাকে এবং রক্তস্রাব হয়, তা নিফাস হিসেবে ধরা হয়। চল্লিশ দিনের বেশি রক্তস্রাব হলে নির্দিষ্ট অভ্যাস অনুযায়ী প্রথম অংশ নিফাস এবং পরবর্তী অংশ ‘ইস্তিহাজা’ (অসুস্থতা জনিত রক্তস্রাব) হিসেবে বিবেচিত হয়।
সার্বিকভাবে বলা যায়, কোরবানির ঈদের সময় স্ত্রী সহবাস সম্পূর্ণ বৈধ, যদি তা শরিয়তের নিষিদ্ধ সময়ের মধ্যে না পড়ে। যারা বলে থাকেন ঈদের তিনদিন স্ত্রী সহবাস হারাম, তারা ভুল ব্যাখ্যা দিচ্ছেন। ইসলামী বিধান অনুযায়ী, এ সময় স্ত্রী সহবাসে কোনো বাধা নেই।
ইএইচ