ধর্ম ডেস্ক
জুন ৫, ২০২৫, ১১:২৮ এএম
ধর্ম ডেস্ক
জুন ৫, ২০২৫, ১১:২৮ এএম
পবিত্র হজ ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের অন্যতম। শারীরিক ও আর্থিকভাবে সক্ষম মুসলমানের ওপর জীবনে একবার হজ পালন করা ফরজ।
হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয় জিলহজ মাসের ৮ থেকে ১২ তারিখ পর্যন্ত—এই পাঁচ দিনে। এই সময় মুসল্লিদের জন্য কিছু করণীয় রয়েছে, তেমনি রয়েছে কিছু বর্জনীয় বিষয়ও, যা জানা ও মানা আবশ্যক।
হজের দিনগুলোর করণীয়—
ইহরাম গ্রহণ
হজের উদ্দেশ্যে ইহরাম বাঁধা অত্যাবশ্যক। নির্দিষ্ট মীকাত এলাকা অতিক্রম করার আগে ইহরাম পরে হজের নিয়ত করতে হয়।
তালবিয়া পাঠ
ইহরাম পরে ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক’ বলে উচ্চকণ্ঠে তালবিয়া পাঠ করা সুন্নত।
মিনায় অবস্থান (৮ জিলহজ)
হজযাত্রীরা ৮ জিলহজ মিনায় গিয়ে ইবাদত ও নামাজ আদায় করেন।
আরাফাতের ময়দানে অবস্থান (৯ জিলহজ)
এই দিনটি হজের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিন। হাজিরা আরাফাতের ময়দানে সূর্যাস্ত পর্যন্ত অবস্থান করেন এবং দোয়া ও ইবাদতে মশগুল থাকেন।
আরাফার খুতবা ও একত্রে জোহর ও আসরের নামাজ
মসজিদে নামিরায় খুতবা শোনা ও নামাজ আদায় গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত।
মুজদালিফায় রাত্রিযাপন
আরাফাত থেকে মাগরিবের পর মুজদালিফায় গিয়ে একসঙ্গে মাগরিব ও এশার নামাজ পড়ে রাতে সেখানে অবস্থান করা সুন্নত।
জামারায় পাথর নিক্ষেপ (১০-১২ জিলহজ)
মুজদালিফা থেকে পাথর সংগ্রহ করে তিনটি শয়তান স্তম্ভে প্রতিদিন পাথর নিক্ষেপ করতে হয়।
কোরবানি ও মাথা মুণ্ডানো
১০ জিলহজ কোরবানি দেওয়ার পর পুরুষরা মাথা মুণ্ডান ও নারীরা চুল কাটেন। এরপর ইহরাম খোলা হয়।
তাওয়াফে জিয়ারত ও সাঈ
পবিত্র কাবা শরিফে তাওয়াফ করে সাফা-মারওয়া পাহাড়ের মাঝে সাঈ সম্পন্ন করতে হয়।
বিদায়ী তাওয়াফ
হজ শেষ করার আগে পবিত্র কাবা শরিফে বিদায়ী তাওয়াফ (তাওয়াফে বিদা) করা জরুরি।
হজের সময় বর্জনীয় বিষয়সমূহ
যেকোনো ধরনের ঝগড়া, গালমন্দ ও অশান্তি সৃষ্টি করা। আল্লাহ পবিত্র কোরআনে হজ পালনকারীকে “অশ্লীলতা, পাপ ও ঝগড়া-বিবাদ” থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন (সূরা আল-বাকারা: ১৯৭)।
ইহরাম অবস্থায় শারীরিক সম্পর্ক, চুল-নখ কাটা, সুগন্ধি ব্যবহার, শিকার করা ইত্যাদি নিষিদ্ধ। হজের নিয়ম-নীতি না জেনে পালন করা।
যথাযথ জ্ঞান ছাড়া হজ পালনে ভুল হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই হজের আগে প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ গ্রহণ করা জরুরি।
পবিত্র স্থানগুলোতে শৃঙ্খলা ও পরিচ্ছন্নতা রক্ষা করা ধর্মীয় দায়িত্ব।
অন্য হাজিদের হয়রানি করা বা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা।
উল্লেখ্য, হজ শুধু একটি আনুষ্ঠানিকতা নয়, এটি আত্মশুদ্ধি, ত্যাগ ও আত্মনিবেদনের এক মহান অনুশীলন। হজের সময় করণীয় ও বর্জনীয় বিষয়ে সতর্ক থাকলে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন সহজ হয় এবং হজ কবুল হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে।
ইএইচ