Amar Sangbad
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০২ মে, ২০২৪,

কীভাবে জেতা যায় সেই চেষ্টা করবো: জাকের আলী

স্পোর্টস ডেস্ক

স্পোর্টস ডেস্ক

মার্চ ৫, ২০২৪, ১২:১১ পিএম


কীভাবে জেতা যায় সেই চেষ্টা করবো: জাকের আলী

স্ট্রাইকরেট ২০০! ছয়টা ছক্কা, চারটা চার! কি অসাধারণ এক ইনিংসই না খেলে গেলেন জাকের আলী অনিক। জাতীয় দলের হয়ে পাওয়া সুযোগের প্রথম দিনেই জাকের নিজের সামর্থ্যের প্রমাণ রাখলেন। যদিও দিনটা হয়নি জাকেরের, হয়নি বাংলাদেশের। এমন বিধ্বংসী এক ইনিংস খেলেও জেতাতে না পারায় জাকেরের মন খারাপ হওয়াটা স্বাভাবিক। কিন্তু ভেঙে পড়ছেন না। কীভাবে ম্যাচ জেতা যায় পরবর্তীতে সেই চেষ্টাই করবেন বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন তিনি।

তবে মানসিক ভাবে শক্তিশালী জাকের জানিয়ে গেছেন, ব্যর্থ হলেও ভবিষ্যতে কী করে জেতা যায় সেই চেষ্টাই করবেন তিনি-

‘আমার চেহারায় কিন্তু বুঝতে পারছেন কীরকম আছি। হার সবসময়ই বেদনার। বিপিএলের ফাইনাল হেরে এসেছি। রাতে ঘুম হয়নি। দেশের হয়ে জিততে পারলে আরেকটু ভালো লাগত। আমি ভেঙে পড়বো না। কীভাবে জেতা যায় পরের ম্যাচ সেই চেষ্টা করবো। এই ম্যাচে আমাদের পাওয়ার অনেক কিছু আছে। খাতা কলম নিয়ে নোট করতে বসলে দল হিসেবে আমাদের অনেক প্রাপ্তি আছে।’

২০৬ রানের পাহাড় টপকাতে বাংলাদেশের টপ অর্ডারকে দায়িত্বশীল ব্যাটিং করতে হতো। কিন্তু পাওয়ার প্লের আগেই টপ অর্ডারের তিন ব্যাটারকে হারিয়ে ম্যাচ থেকে প্রায় ছিটকেই গিয়েছিল বাংলাদেশ। প্রথম ওভারেই রানের খাতা না খুলে বাজে শটে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন লিটন। এরপর সৌম্য সরকার (১২) ও তাওহীদ হৃদয় (৮) দলীয় ৩০ রানে বিদায় নিলে প্রবল চাপে পড়ে যায় স্বাগতিকরা। সেখান থেকে দলকে টেনে তোলেন মাহমুদউল্লাহ ও জাকের। অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহও করেন বিস্ফোরক ব্যাটিং। সিনিয়র বড় ভাইয়ের এমন ব্যাটিং দেখেন মনে জোড় পান জাকের নিজেও। 

এমন বিপর্যয়ের পর বাংলাদেশ সাধারণত ঘুরে দাঁড়াতে পারে না। কিন্তু মাহমুদউল্লাহর ব্যাটিং দেখে জাকের ভরসা পেয়েছিলেন, ‘আমি যখন ব্যাটিংয়ে যাই, ক্রিজে রিয়াদ (মাহমুদউল্লাহ) ভাই ছিলেন। উনি আমাকে স্বাভাবিক ব্যাটিং করতে বলেছেন। ওরকমই চেষ্টা করেছি যে রকম আমি সচরাচর খেলি। বাড়তি কোনও পরিকল্পনা ছিল না। রিয়াদ ভাই ঝুঁকি নিয়ে কিছু বাউন্ডারি বের করায়, আমার কাজ সহজ হয়ে যায়।’ 

জাকেরের সঙ্গে ২৯ বলে ৪৭ রানের জুটি গড়ে আউট হন মাহমুদউল্লাহ। দু’জন কী পরিকল্পনায় ব্যাটিং করেছেন সেই প্রশ্নের জবাবে জাকের বলেছেন, ‘দুজনেরই এরকম পরিকল্পনা ছিল। রিয়াদ ভাই চান্স নিচ্ছিল, তখন আমারও পরিকল্পনা ছিল এক ওভারে কীভাবে ১০-১২ রান বের করা যায়। রিয়াদ ভাই থাকলেও আমি আমার ভূমিকাটা এরকমই রাখতাম। উনি চলে যাওয়ার পর আমি গিয়ার শিফট করিনি।’ 

শেষ দুই ওভারে বাংলাদেশের জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ২৭ রান। পাথিরানার ছন্দহীন বোলিংয়ের সুযোগ নিয়ে জাকের ১৯তম ওভারে তুলে নেন ১৫। তাতে করে জিততে বাংলাদেশের লাগতো ১২ রান। কিন্তু দাসুন শানাকার প্রথম বলে রিশাদ বিদায় নিলে ঘটে ছন্দপতন। একটি ওয়াইডের পর সিঙ্গেল নিয়ে জাকেরকে ব্যাটিং প্রান্তে পাঠান তাসকিন। ওভারের তৃতীয় বলে শানাকাকে লংঅন দিয়ে খেলতে চেয়েছিলেন জাকের। কিন্তু বলটাকে সীমানা ছাড়াতে পারেননি। চারিথ আসালাঙ্কার হাতে তালুবন্দি হয়ে সাজঘরে ফিরতে হয় ঘরের ছেলেকে।

শেষ ওভারের পরিকল্পনা নিয়ে জাকের বলেছেন, ‘রিশাদকে বলেছিলাম চেষ্টা কর আমাকে স্ট্রাইক দিতে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে ওর উইকেট পড়ে যায়। আমি তারপরও স্ট্রাইকে ছিলাম যখন ৪ বলে ১০ রান লাগতো। আত্মবিশ্বাস ছিল পারবো। যেহেতু পুরো ইনিংস জুড়েই ভালো যাচ্ছিল। কানেক্ট হয়নি…।’

এমন ইনিংসের পরও জাকেরির মন ভরেনি। ভরবেই বা কী করে? দলতো জেতেনি, ‘যদি ম্যাচ জিততে পারতাম, তাহলে ১০-১২ রান করলেও বেশি খুশি লাগতো। ভালো খেলেছি আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহতায়ালা যা দিয়েছেন। তবে ম্যাচ জেতাতে পারলে হয়ত আরও বেশি খুশি হতাম।’

প্রসঙ্গত, গত বছর এশিয়ান গেমসের মধ্য দিয়েই জাকেরের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের সঙ্গে পরিচয়। ওই তিন ম্যাচের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি থাকলেও জাতীয় দলের জার্সিতে সোমবারই অভিষেক হয়েছে তার। কিন্তু জাকেরের মনে জাতীয় দল নিয়ে কখনোই কোন ভাবনা ছিল না। 

বিআরইউ

Link copied!