ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই, ২০২৫
Amar Sangbad

কোরবানি পশুর চড়া দামের শঙ্কা

নুর মোহাম্মদ মিঠু

জুলাই ৩, ২০২২, ০১:২১ এএম

কোরবানি পশুর চড়া দামের শঙ্কা

করোনা মহামারি, বিভিন্ন দেশে পশুখাদ্যের কাঁচামালের উৎপাদন কমে যাওয়া ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হওয়ায় সামগ্রিকভাবে দাম বেড়েছে পশুখাদ্যের। গত এক বছরে নানা কারণে পশুখাদ্যের দাম প্রায় ৪০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, যে কারণে পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলেও এবার গরুর দাম অন্তত ১০ থেকে ১৫ শতাংশ বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। 

এ ছাড়াও পথে পথে চাঁদাবাজি, হাটে অতিরিক্ত মাশুল আদায়ের কারণেও পশুর দাম ব্যাপক হারে বেড়ে যাওয়া আশঙ্কা রয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পশুখাদ্যের অন্যতম উপাদান হচ্ছে গম, ভুট্টা, ধানের কুড়া, সয়ামিল, সরিষার খৈল, আটা-ময়দা ইত্যাদি। এরমধ্যে বাংলাদেশের পশুখাদ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো গম, ভুট্টা ও সয়ামিল বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করা হয়। 

রাশিয়া ও ইউক্রেন থেকে বেশি ভুট্টা আমদানি করেন বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা। আবার গম আমদানিতেও এ দুটি দেশের ওপর নির্ভরতা রয়েছে বাংলাদেশের। কিন্তু যুদ্ধের কারণে গত ফেব্রুয়ারির পরে দেশ দুটি থেকে আমদানি এক প্রকার বন্ধ রয়েছে। ফলে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে এসব পণ্যের দাম যেমন বাড়ছে, তেমনি বেড়েছে পরিবহন খরচও। যে কারণে পশুখাদ্য উৎপাদনে খরচ বাড়ার প্রভাব এবারের পশুর হাটে পড়তে পারে। 

এছাড়া সিলেট, সুনামগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সামপ্রতিক বন্যায় গবাদিপশুর খাবারের বেশ সংকট দেখা দেয়। দাম বেড়ে যায় গোখাদ্যের। এর প্রভাবও কোরবানির পশুর হাটে পড়তে পারে। দেশের অন্যতম গোচারণভূমি এলাকা সিরাজগঞ্জ। সেখানেও এবার বন্যা হয়েছে। 

এদিকে গত ২৩ জুন একটি গোয়েন্দা সংস্থাও এসব বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার সুপারিশ করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের কাছে একটি প্রতিবেদন দেয়। চিঠিতে দ্রুত পদক্ষেপ না নেয়া হলে জনগণকে অতিরিক্ত দামে কোরবানির পশু কিনতে হবে বলে সতর্ক করা হয়েছে।

পাশাপাশি চামড়া নিয়েও একাধিক সংকটের কথা বলা হয়েছে ওই প্রতিবেদনে। তবে এ বিষয়ে জানতে চেয়ে গতকাল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি বিশ্বাসকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। যে কারণে তার বক্তব্য জানা যায়নি।  

জানা গেছে, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো ওই গোয়েন্দা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে— গত পাঁচ মাসে বাজারে সব ধরনের পশু ও পোলট্রি খাদ্যের দাম ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। ফলে পশুপালনে খামারিদের ব্যয় অনেক বেড়েছে। এতে আসন্ন ঈদুল আজহার কোরবানির পশুর দাম বাড়তে পারে। এতে কোরবানির পশুর বাজারে অস্থিরতা দেখা দিতে পারে। 


বাজার তদারকির মাধ্যমে পশুখাদ্যের জোগান নিশ্চিত করা ও দাম সহনীয় পর্যায়ে রাখা না গেলে কোরবানির বাজারে পশুর অপ্রতুলতাও দেখা দিতে পারে।

একই সাথে বলা হয়েছে, কোরবানির পশু পরিবহনে বিভিন্ন স্থানে চাঁদাবাজি হয়, স্থায়ী ও অস্থায়ী হাটের মালিকরা অযৌক্তিক হাসিল আদায় করেন। এসব বন্ধেও সুপারিশ করা হয়েছে।’ 

জানতে চাইলে বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মারস অ্যাসোসিয়েশনের-বিডিএফএ সাধারণ সম্পাদক শাহ এমরান আমার সংবাদকে বলেন, ‘গত ২৩ জুন আমরা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরে বৈঠক করেছি। সেখানে মন্ত্রীও উপস্থিত ছিলেন। আমি সুনির্দিষ্ট কিছু প্রস্তাব সেখানে দিয়েছি। তার মধ্যে পশুবাহী ট্রাক দ্রুত চলাচলের ব্যবস্থা করতে হবে।

এসব ট্রাক থেকে যাতে চাঁদাবাজি না হয় সে উদ্যোগ নিতে হবে। কোনো খামার থেকে যদি কেউ পশু কেনেন তাদের কাছ থেকে কোনো মাশুল আদায় করা যাবে না। আমরা যে হাটে পশু নিতে চাইব সেখানে নেয়ার সুযোগ দিতে হবে। অনেক ইজারাদার জোর করে তাদের হাটে খামারিদের ট্রাক নিয়ে যান। দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে পশুবাহী ট্রাকগুলো টোলমুক্ত করার প্রস্তাবও আমি দিয়েছি।’ 

এবার দাম বৃদ্ধির শঙ্কা কেন করা হচ্ছে এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, গত এক বছরে পশুখাদ্যের দাম বেড়েছে প্রায় ৪০ শতাংশ। যে কারণে এবার গরুর দাম ১০ থেকে ১৫ শতাংশ এমনিতেই বাড়বে যদি পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকে। আর চাঁদাবাজিসহ অন্যান্য খরচ বাড়লে তো পশুর দাম আরও বেড়ে যাবে। 

জানতে চাইলে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. মনজুর মোহাম্মদ শাহজাদা আমার সংবাদকে বলেন, ‘এ বছর কোরবানিযোগ্য এক কোটি ২১ লাখ ২৪ হাজারের বেশি গবাদি পশু প্রস্তুত রয়েছে। গত বছর এক কোটি ১৯ লাখ গবাদি পশু প্রস্তুত ছিল, তার মধ্যে প্রায় ৯১ লাখ গবাদিপশু কোরবানি হয়েছে। এ বছর চলাচলে কোনো বিধি-নিষেধ না থাকায় গত বছরের চেয়ে কোরবানি বেশি হবে বলে আমরা আশা করছি। এবার কোরবানিযোগ্য পশুর মধ্যে গরু-মহিষ রয়েছে ৪৬ লাখ, ছাগল-ভেড়া রয়েছে ৭৫ লাখ এবং অন্যান্য পশু রয়েছে ১৪ হাজার। ফলে পশুর সংকট হবে না।’ 

চাঁদাবাজিসহ হাটগুলোতে অতিরিক্ত মাশুল আদায়ের বিষয়ে জানতে চাইলে আমার সংবাদকে তিনি বলেন, আমরা ইতোমধ্যে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী, বিভাগীয় কমিশনার ও আইন প্রয়োগ সংস্থাকে চিঠি দিয়েছি। ওনারা ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। এ ছাড়া পশুবাহী পরিবহন যাতে দ্রুত চলাচল করতে পরে সে পদক্ষেপও নেয়া হয়েছে।’ 

টোলমুক্ত করার প্রস্তাব বাস্তবায়ন হবে কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এ ক্ষেত্রে প্রায়রিটি বেসিসে ট্রাক পার করার কথা বলা হয়েছে। এছাড়া কোথাও এ ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হলে আমাদের কন্ট্রোল রুমে জানানোর জন্য বলা হয়েছে।’  

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিমও সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, ‘কোরবানির পশুর জন্য আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছি। অন্যান্য বছরের মতো এবারো কোরবানির পশুর চাহিদা নিরূপণ করা হয়েছে। কোরবানির চাহিদার চেয়ে অতিরিক্ত পশু প্রস্তুত আছে। ফলে কোরবানির জন্য কোনো রকম সংশয়, সংকট বা আশঙ্কার কারণ নেই। সরকারের পক্ষ থেকে পরিপূর্ণ প্রস্তুতিও রয়েছে। তবে সিলেট-সুনামগঞ্জসহ বিভিন্ন অঞ্চলে সামপ্রতিক বন্যায় গবাদিপশু কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেখানে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর থেকে গবাদি পশুর খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে, চিকিৎসাসেবাও দেয়া হচ্ছে।’

Link copied!